সাতক্ষীরায় দরপত্র-সন্ত্রাস-ক্ষমতাসীন ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে সোয়া পাঁচ কোটি টাকার কাজ

সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগ কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণের পাঁচ কোটি ২৮ লাখ টাকার কাজের দরপত্র জমা দিতে পারেননি সাধারণ ঠিকাদাররা। ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের কিল-ঘুষি ও হুমকির মুখে তাঁরা দরপত্র জমা না দিয়ে পালিয়ে বেঁচেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৫৭টি দরপত্রের মধ্যে মাত্র পাঁচটি জমা পড়েছে। শতকরা পাঁচ ভাগ টাকা আদায় করে 'ভাগ্যবান' ওই ঠিকাদারদের দরপত্র জমার সুযোগ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।গতকাল বুধবার পুলিশের উপস্থিতিতেই এ দরপত্র-সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন বঞ্চিত ঠিকাদাররা। কিছুই ঘটেনি দাবি করে এক পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, 'এসব নিয়ে আপনারা আর লেখালেখি করবেন না।


' দরপত্র আহ্বানকারী গণপূর্ত বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, 'বাধা দেওয়ার কথা শুনেছি, চোখে দেখিনি। কেউ অভিযোগও করেনি।'দরপত্র জমা দিতে না পারা কয়েকজন ঠিকাদার জানান, সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগ কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণের জন্য গত ১৮ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫৭টি শিডিউল বিক্রি হয়। গতকাল ছিল তা জমা দেওয়ার দিন। বঞ্চিত ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন, পেশায় ঠিকাদার আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের অনুগত যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক নেতার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন ক্যাডার গতকাল গণপূর্ত অফিস চত্বরে পাহারা বসায়। পুলিশও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। দরপত্র জমা দিতে আসা ঠিকাদারদের তাড়িয়ে বের করে দিতে থাকে তারা। কিল-ঘুষি মেরে চেনা-অচেনা ঠিকাদারদের নাজেহাল করে হটিয়ে দেয় ক্যাডাররা। পুলিশ কেবল বাঁশি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে। নির্ধারিত সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়ে ওই ক্যাডাররা পছন্দের পাঁচজনের দরপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। পরে ক্যাডাররা উল্লাস করতে থাকে।
বঞ্চিত ঠিকাদারদের অভিযোগ, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাফর আহমেদের যোগসাজশে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা এ কাজ করেছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আবু জাফর আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কেউ দরপত্র জমা দিতে পারেননি এমন কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। ৫৭টির মধ্যে মাত্র পাঁচটি দরপত্র জমা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো সমঝোতা বা হাঙ্গামার ঘটনা তাঁর অফিস চত্বরে ঘটেনি

No comments

Powered by Blogger.