কালোটাকার ঘোষণায় শেয়ারবাজার চাঙ্গা

শেয়ারবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগ করা হলে উত্স সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না—এসইসি চেয়ারম্যানের এ ঘোষণা এবং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর রেয়াত সুবিধা বহাল, মিউচুয়াল ফান্ডের আয়ের ওপর কর প্রত্যাহারে এনবিআরের আশ্বাসে শেয়ারবাজারের সূচকে বড় ধরনের উল্লমম্ফন হয়েছে। গতকাল সপ্তাহের শেষদিনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক দিনশেষে ২০৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৫৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪৫টিরই দর বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও।


আগের দিনের তুলনায় ৫১ পয়েন্ট বেড়ে দিনশেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু সূচক ও লেনদেন বাড়লেও বিনিয়োগকারীরা ডিএসই ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করে বলেন, শেয়ারবাজারে যেভাবে সূচকের উত্থান হচ্ছে, এটি কোনো অবস্থাতেই স্বাভাবিক নয়। তারা বাজারে অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের পরিবর্তে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা দাবি করেন বিনিয়োগকারীরা। আর না হলে আগামী রোববার থেকে বিনিয়োগকারীরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আমরণ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান। এদিকে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতনের পর গত দু’দিন সূচক বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসেনি। তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। এর আগেও দেখা গেছে, নতুন ঘোষণা আসার পর শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক তেজীভাব তৈরি হলেও অল্প ক’দিনের মধ্যে আবারও বড় ধরনের দরপতনের ধারা শুরু হয়েছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঙ্কট কাটেনি। বাজার বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, আগামী ক’দিনের পর্যবেক্ষণ শেষে বোঝা যাবে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরেছে কি-না। একদিনে ২০০ পয়েন্ট বৃদ্ধি বা কমে যাওয়া বাজারের স্থিতিশীলতার লক্ষণ নয়। তারা মনে করেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ না বাড়লে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে না। এজন্য মার্চেন্ট ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে বাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ক’দিন শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ থাকলেও গতকাল ছিল ভিন্ন অবস্থা। ক্রেতা থাকলেও গতকাল বিক্রেতার সংখ্যা ছিল কম। অনেক কোম্পানির কোনো বিক্রেতা ছিল না। আবার অনেক কোম্পানির শেয়ারের দর সার্কিটব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। বিক্রেতা বেশি না থাকায় অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়লেও লেনদেনের পরিমাণ খুব একটা বাড়েনি।

No comments

Powered by Blogger.