মিয়ানমারে আরও রাজবন্দীর মুক্তি দাবি বিরোধীদের

মিয়ানমারের বিরোধীদলীয় সমর্থকেরা গতকাল বৃহস্পতিবার সব রাজবন্দীর মুক্তি দাবি করেছেন। গত বুধবার দেশের সরকার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী কিছু রাজবন্দীকে মুক্তি দেয়। কিন্তু তা বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। এ জন্য তাঁরা সব রাজবন্দীর মুক্তি চেয়েছেন। এখনো প্রায় দুই হাজার রাজবন্দী কারাগারে রয়েছেন।
থাইল্যান্ডভিত্তিক অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, সরকার এ পর্যন্ত দুই শতাধিক রাজবন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। কিন্তু অনেক রাজবন্দী এখনো কারাগারে রয়েছেন। তাঁদের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার হবে।
গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির মুখপাত্র নিয়ান উইন বলেন, ‘এখনো অনেক রাজবন্দী কারাগারে রয়েছেন, যাঁদের মুক্তি কামনা করি। তাঁদের বন্দী রাখায় আমরা হতাশ।’
কিছু পর্যবেক্ষক মনে করছেন, মিয়ানমারের নতুন সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে একঘরে হয়ে পড়ার সমস্যা কাটাতে যেসব পরিকল্পনা নিয়েছে, এর মধ্যে সাধারণ ক্ষমা একটি হতে পারে। কিন্তু সদ্য মুক্তি দেওয়া রাজবন্দীদের কেন্দ্র করে নতুন কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় কি না, এ নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক জিম ডেলা গিয়াকোমা বলেন, দেশজুড়ে এখন সংস্কারের যে প্রচেষ্টা চলছে, সাধারণ ক্ষমার বিষয়টিকে এর অংশ হিসেবে দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গত মার্চে প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন যে সংস্কারের কথা ঘোষণা করেন, রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় সেই উচ্চাভিলাষী কর্মসূচির প্রতি তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ বলেই মনে হচ্ছে।
বহু রাজবন্দীকে মুক্তি না দেওয়ায় মানবাধিকার কর্মী ও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীরা বেসরকারি সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এসব রাজবন্দীর মধ্যে গণতন্ত্রপন্থী নেতা, সাংবাদিক, ভিক্ষু ও আইনজীবী রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমারের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা তুলে নেওয়ার বেলায় রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমার কোণঠাসা হয়ে ক্রমেই চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
মিয়ানমারের জন্য নিযুক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক তদন্ত কর্মকর্তা টমাস ওজেয়া কিনটানা বলেন, রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার এই ঘটনা সে দেশে পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে। তবে এ বছরের শেষ নাগাদ আরও অনেক রাজবন্দীর মুক্তি প্রত্যাশা করা যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.