বাণিজ্য যুদ্ধের মুখে চীন-যুক্তরাষ্ট্র

মুদ্রা কারসাজি বা উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহারের অভিযোগে চীনের বিরুদ্ধে বিল পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। দেশটির এ পদক্ষেপকে টাইম বোমা হিসেবে উল্লেখ করে চীন বলেছে, এর মধ্য দিয়ে সর্ববৃহৎ দুই অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা হতে পারে। গত বুধবার ডেমক্রেট নিয়ন্ত্রিত সিনেটে ৬৩-৩৫ ভোটে বিলটি পাস হয়। তবে সিনেটে পাস হলেও হাউজ স্পিকার জন বুয়েনারসহ অনেক আইন প্রণেতার বিরোধিতার মুখে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি আটকে যেতে পারে।যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দা ও তীব্র বেকারত্বের জন্য চীনের মুদ্রার মান কমানোকে দায়ী করা হয়।


যুক্তরাষ্ট্রের কিছু আইন প্রণেতা অভিযোগ তুলে বলেন, চীন কৃত্রিমভাবে মুদ্রার মান কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সুবিধা আদায় করেছে। এতে দেশটির চাকরির বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিল পাসের মধ্য দিয়ে চীনের মুদ্রার মান কমানোর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে সে দেশ থেকে আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে পারবে।
বিল পাসের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যা জোঝু বলেন, বিল অনুমোদনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার আইনকে অবজ্ঞা করা হলো। এতে দুই দেশের সম্পর্কেরও অবনতি হতে পারে। বিলের তীব্র সমালোচনা করে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি টাইম বোম্ব ফিট করে দিলে, যা যেকোনো মুহূর্তে বিস্ফোরিত হয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। তবে ওবামা প্রশাসন বলেছে, তারা কূটনীতির ওপর গুরুত্ব দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা বলেছেন, এ বিল পাসের মধ্য দিয়ে চীনের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া হলো। ডেমোক্র্যাট সিনেটর শ্যারড ব্রাউন বলেন, 'আমরা এখন বাণিজ্য যুদ্ধে, তবুও আমরা পিছু ফিরে তাকাচ্ছি।' তবে রিপাবলিকান হাউস স্পিকার জন বুয়েনার এটিকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে ভোট না দেওয়ার কথা জানান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের মান ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা দাবি করছেন এর পরিমাণ ৪০ শতাংশ। গত বছরের বাণিজ্য চীন যুক্তরাষ্ট্রে ২৭৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত পেয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এটা মূলত চীনের মুদ্রার মান ইচ্ছাকৃতভাবে কমিয়ে দেওয়ার কারণেই হয়েছে। এতে চীন সস্তায় যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে পেরেছে। অন্যদিকে ব্যয়বহুল হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য চীনে ঢুকতে পারেনি। বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.