শাহবাগের আন্দোলন দলীয়করণ হচ্ছে- বি. চৌধুরী

শাহবাগের আন্দোলন ‘আওয়ামীকরণ’ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
শাহবাগের তারুণ্যকে স্বাগত জানিয়ে সাবেক এ প্রেসিডেন্ট বলেন, মুক্তিযুদ্ধে তরুণরা জেগেছিল, আজও শাহবাগে তরুণরা জেগে উঠেছে। তিনি রাজনীতিকদের উদ্দেশে বলেন, এটাকে দলীয়করণ করবেন না। তরুণরা এখানে জড়ো হয়েছে। তাদেরকে তাদের আন্দোলন করতে দিন। গতকাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট ভবনের মাঠে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, শাহবাগের সমাবেশ যদি নিরপেক্ষ হয় আমি সঙ্গে আছি। আর যদি আওয়ামী লীগের হয় আমি এ সমাবেশকে ঘৃণা করি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই ‘রাজাকাদের’ ফাঁসি আমিও চাই। কিন্তু ওই ‘রাজাকারদের’ ফাঁসি আরেক রাজাকার দিতে পারে না। আওয়ামী লীগে কেউ যোগদান করলে হয় মুক্তিযোদ্ধা আর অন্য দলে যোগ দিলে হয় রাজাকার। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন সাজার রায় সরকারের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আঁতাতের ‘ফল’। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জামায়াতের সঙ্গে আপস করে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। যুদ্ধাপরধীদের ফাঁসির দাবিতে জামায়াতকে মাঠে নামার আহাবন জানান তিনি। বলেন, জামায়াতে ইসলামী যদি মনে করে তারা পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলাম, তাহলে বাংলাদেশে তাদের ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই। আর যদি দলটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হয় তাহলে তাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য মাঠে নামতে হবে। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মহাসচির শেখ শহিদুল ইসলাম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু ও নাসরিন কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ। এর আগে কাদের সিদ্দিকী সম্মেলন উদ্বোধন করেন।
 জামায়াতকে জোটে রাখায় বিএনপিও ‘রাজাকার’ হয়ে গেছে মন্তব্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর একজন খাঁটি রাজাকার। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মহীউদ্দীন খান আলমগীর ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ছিলেন। তিনি যে রাজাকার ছিলেন, তার প্রমাণ আমি দিতে পারব। আ স ম আব্দুর রব বলেন, পাকিস্তানি আইন দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার হবে না। চোরাবালিতে যেন এ আন্দোলন হারিয়ে না যায়। যারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদের বাংলাদেশের ঠাঁই  নেই। আমাদের সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, মহাজোট সরকারকে বিতাড়িত করতে এখন একটি জাতীয় ঐক্যের দরকার। আমি বিশ্বাস করি সে ঐক্য বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই হবে। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আমাদের মুক্তি দিতে পারেনি; পারে না। ব্যর্থ এই দুটি দল বাদে বাকি সব দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও তাদের নিয়ে ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো মুক্তিযোদ্ধার দল নয়। এই আওয়ামী লীগ যদি মুক্তিযুদ্ধের দল হতো যুদ্ধাপরাধীদের হাস্যকর রায় দিতে পারতো না। তরুণ প্রজন্ম জেগে উঠেছে। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতেই হবে। আলোচনা বা আন্দোলনের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.