যমেক হাসপাতালে টাকা ছাড়া চিকিৎসা মেলে না

যশোর মেডিক্যাল কলেজ যমেক হাসপাতালে টাকা ছাড়া চিকিৎসা মেলে না। আবার টাকা দিলেও অনেক সময় ডাক্তার পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় না ওষুধপত্রও।
ডাক্তাররা কমিশনের লোভে প্যাথলজি টেস্টের জন্য রোগী পাঠান তাদের পরিচিত কিনিকে। এমন সব অভিযোগ উঠে এসেছে সনাকের (সচেতন নাগরিক কমিটি) জরিপে। কমিটি সম্প্রতি এ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

সনাকের জরিপ রিপোর্টে বলা হয়েছে, যমেক হাসপাতালের সেবা গ্রহণকারী ৫৪৩ জন রোগীর ওপর জরিপ পরিচালনা করে জানা গেছে, এদের মধ্যে ৪৫ দশমিক ৫৮ ভাগ ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ পান না। এ ছাড়া চারটি বিষয়ে সেবার মান কমেছে ১৯ দশমিক ৭৭ ভাগ থেকে ৪৯ দশমিক ০৯ ভাগ। এর মধ্যে রয়েছে আন্তঃবিভাগে জরুরি মুহূর্তে ৪৯ দশমিক ০৯ ভাগ রোগী চিকিৎসা পান না। জরুরি ও বহির্বিভাগে ডাক্তার থাকে না। চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন খাতে নিয়মবহির্ভূতভাবে রোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়।

জরিপ প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৬৩১ জন চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। এর মধ্যে ৪৫ দশমিক ৫৮ ভাগ ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ ও ৪২ দশমিক ২২ ভাগ কোনো চিকিৎসা উপকরণ পান না। অপারেশনে ৫১ ভাগ রোগীর কাছ ২০৪ টাকা ও অপারেশন-পরবর্তী সময়ে ৭ দশমিক ৯৪ ভাগ রোগীর কাছ থেকে নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্য স্টাফদের জন্য ১৬৫ টাকা করে আদায় করা হয়। এ ছাড়া ট্রলি ব্যবহার বাবদ ৫২ টাকা, ড্রেসিং বাবদ ৬৭ টাকা, আয়া-ওয়ার্ডবয় বাবদ ১৩৪ টাকা, রক্ত সঞ্চালনের জন্য ৯৫০ টাকা ও রক্ত পরীক্ষার জন্য ১৫১ টাকা দিতে হয়।

সনাক যশোর শাখার সভাপতি আবু সালেহ তোতা বলেন, সনাকের প্রতিবেদন প্রকাশ করার মূল উদ্দেশ্য হলো সেবার মান সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় করার জন্য প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় না।

যমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আলমগীর কবির বলেন, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে মানুষের চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে আসন সংখ্যার দেড় গুণ রোগী ভর্তি হয়। কিন্তু সেই তুলনায় জনবল নেই। সমস্যা সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আর দুর্নীতি বা অনিয়ম রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.