বিরোধীদের সাথে আলোচনায় রাজি সিরিয়া সরকার

সিরিয়া সরকার সরকারবিরোধীদের সাথে আলোচনায় বসতে রাজি রয়েছে। তবে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া। দেশটির তথ্যমন্ত্রী আদনান মাহমুদ এ ঘোষণা দিয়েছেন।
সিরিয়া সরকারের এ মনোভাবকে বিদ্যমান সঙ্কট নিরসনে রাজনৈতিক সমাধানের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে । রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দরজা খোলা, আলোচনার টেবিল রয়েছে, আলোচনায় আগ্রহী যেকোনো সিরীয়কে স্বাগতম।’ তিনি বলেন, যখন আপনারা আলোচনার কথা বলবেন, তার মানে হচ্ছে শর্ত ছাড়াই আলোচনা, যাতে কেউ বাদ থাকবে না। কিন্তু যদি কোনো একজন আমার কাছে আসে এবং বলে ‘আমি এই ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে চাই অথবা আপনাকে মেরে ফেলতে চাই, তাহলে তা তো আলোচনা নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘সেখানে অবশ্যই কোনো পূর্বশর্ত থাকবে না।’

এর আগে সিরিয়ার বিরোধীজোট প্রধান মুয়াজ আল খতিব আলোচনা শুরুর জন্য যে শর্ত দিয়েছিলেন, তা প্রত্যাখ্যান করেন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল আল মিকদাল। আল খতিব এক লাখ ৬০ হাজার বন্দীর মুক্তি দাবি করেছিলেন। তারপর তিনি বলেছিলেন, সিরিয়া সরকার ১০ ফেব্রুয়ারির আগে কারাগার থেকে সব নারীকে মুক্তি না দিলে আলোচনার সুযোগ হাতছাড়া করবে। এ দিকে সরকারের সাথে বিরোধীদের প্রধান মোয়াজ আল খতিব আলোচনার প্রস্তাব দেয়ার পর ১ ফেব্রুয়ারি সিরিয়ান ন্যাশনাল কোয়ালিশন শর্ত বেঁধে দেয়, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা অবশ্যই আসাদ সরকারের বিদায় সম্পর্কিত হতে হবে।

সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে খতিবের আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে ইতিবাচক আশা করছে জাতিসঙ্ঘ। শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের রাজনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেফরি ফেল্টম্যান বলেছেন, খতিবের প্রস্তাবকে প্রতিশ্রুত মনে হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের মতো আরব লিগও আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছে

২০১১ সালের মার্চে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিােভ শুরু হয়। একপর্যায়ে বিােভ সহিংসতার রূপ নেয়। প্রায় দুই বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়ার ৬০ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ।

সিরিয়া সঙ্কটের সমাধান নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আসাদ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বেশ কয়েকবার সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স পদপে নিলেও তাতে বাধা দেয় চীন ও রাশিয়া।
নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে অফিস

খুলবে  বিরোধীরা

এ দিকে সিরিয়ার বিরোধী জোট যুক্তরাষ্ট্রে অফিস খোলার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভিতালি চুরকিন। রাশিয়ার গণমাধ্যম রিয়া নভোস্তি চুরকিনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন শহরে সিরিয়ার বিরোধীরা অফিস খুলবে।

গত সপ্তাহে জার্মানির মিউনিখ শহরে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনের অবকাশে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সিরিয়ার বিরোধী জোটের প্রধান মোয়াজ আল খাতিবের সাথে বৈঠকে করেন।

No comments

Powered by Blogger.