মোহামেডান আবার হারাল শেখ রাসেলকে

শেখ রাসেলের বিপক্ষে কোন উদ্দীপনায় এভাবে জ্বলে উঠে মোহামেডান? তাদের এই বাড়তি যোশ কি শেখ রাসেলের কোচ মারুফকে প্রতিপক্ষ পেয়ে? কথাটা বলা হচ্ছে এ কারণেই, কাগজে-কলমে মোহামেডানের চেয়ে অনেক শক্তিশালী শেখ রাসেল।
শিরোপা রেসের ধারে কাছেও নেই সাদাকালো শিবির। অথচ এবার লিগের দুই পর্বেই তারা হারের স্বাদ দিলো মারুফুল হকের দলকে। আরেকটু পরিষ্কার করে বললে ১০ ম্যাচে শেখ রাসেলের যে দু’টি পরাজয় তা এই মোহামেডানের কাছেই। অথচ এই মোহামেডান আগের চার ম্যাচের তিনটিই হেরেছিল। দুই পরাজয় আবার হালি গোলে। প্রথম পর্বে ১-৩ গোলের পর কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ০-১ গোলে হেরেছে শেখ রাসেল। ফেডারেশন কাপ জয়ীদের কালকের পরাজয় বড়সড় একটা ধাক্কা। এক ম্যাচ কম অর্থাৎ ১০ ম্যাচ খেলে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে তারা। ১১ ম্যাচ শেষ করে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শেখ জামাল। সমান ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আবাহনী। আর দুই ম্যাচ পর জয়ের দেখা পাওয়া মোহামেডানের সংগ্রহ ১৬।

পিছিয়ে পড়লেও ম্যাচ জেতা শেখ রাসেলের স্বভাব। এভাবেই ফেডারেশন কাপ জিতেছিল তারা। গত ম্যাচেই প্রথমে দুই গোলে পিছিয়ে শেষ পর্যন্ত বিজেএমসিকে ৪-৩ এ কাবু করেছিল। কাল ৯৩ মিনিটে মিঠুন একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও ব্যর্থ। যা পরাজয় নিশ্চিত করে শিরোপা প্রত্যাশীদের। তবে জেতার মতো ম্যাচ উপহার দিতে পারেনি নীল-সাদা জার্সিধারীরা। বরং মোহামেডান দাপটের সাথে খেলে যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে।

শেখ রাসেলের আক্রমণের মূল চালিকা শক্তি হাইতির সনি নর্ডি। আর রাইট উইং দিয়ে ফাঁকায় বল পেয়ে প্রতি ম্যাচে আতঙ্ক ছড়াতেন জাহিদ। কাল মোহামেডান কোচ সাইফুল বারী টিটু এ দু’জনকেই কড়া মার্কিংয়ে রেখে তাদের নিষ্ক্রিয় করে দেন। ম্যাচ শেষে টিটু জয়ের নৈপথ্য হিসেবে এ কৌশলের কথা উল্লেখ করেন। শেখ রাসেল কোচ মারুফও স্বীকার করলেন, ‘কড়া মার্কিংয়ে থাকায় সনি মাঝ মাঠে ছিলেন ব্যর্থ। এ অবস্থায় তার কাজ ছিল অন্যকে দিয়ে খেলানো। তাও সে করেনি। সমস্যা ছিল রক্ষণভাগেও।’ অন্য দিকে টিটুর মতে, খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করার ফলস্বরূপই জিতেছি আমরা।

বড় ম্যাচ অতটা আকর্ষণীয় হয়নি। ৩২ ও ৫১ মিনিটে সোহেল রানার পাসে মরিসন দুইবার ব্যর্থ হন গোল পেতে। তবে ৫৪ মিনিটে মারুফের ফ্রি কিকে সার্বিয়ান বোজান প্যাটট্রিকের মাথায় লাগা বল ডিফেন্স থেকে উঠে আসা তপু বর্মণের সামনে পড়লে  তা রিসিভ করে ঠাণ্ডা মাথায় গোল করেন (১-০)।

এরপর শেখ রাসেল সমতা আনার সুযোগ হারায়। ১৮ ও ৯৩ মিনিটে মিঠুন গোলের সুযোগ হারান। ৭২ মিনিটে তারিক জানাবির পাসে সনি দুরূহ কোণ থেকে মামুন খানকে পরাস্ত করে পোস্টে বল ঠেলে। সে বল গোল লাইন অতিক্রমের আগে কিয়ার করেন নাইজেরিয়ান উদে দামিয়ান। অবশ্য শেখ রাসেলের দাবি ছিল বল গোল লাইন অতিক্রম করেছে। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে তারা সহকারী রেফারি ভুবন মোহন তরফদারের ওপর চড়াও হয়।

পরাজয়ের পরও কোচ মারুফের বক্তব্য, হারটা একটা ধাক্কা। তবে তা ফিরতি পর্বের শুরুর দিকে হওয়ায় সমস্যা নেই। লিগ শেষে দেখবেন শেখ রাসেলই শীর্ষে।

মোহামেডান : মামুন খান, মিন্টু শেখ, তপু বর্মণ, ইয়াসিন, মারুফ (সোহাগ ৮৮ মি.), মোবারক (রবিন ৭৯ মি.), সোহেল রানা, মরিসন (ওয়াহেদ ৯১ মি.), বাইবেক, দামিয়ান, সিসান।

শেখ রাসেল : বিপ্লব, মুরাদ (নাহিদ ৫৫ মি.), রেজা, লিংকন, জাহিদ, মামুনুল, এমিলি (মিঠুন ৪৬ মি.), সনি, জানাবি, বুকোলা, বোজান।

রেফারি : তৈয়ব হাসান বাবু, সহকারী রেফারি : ভুবন মোহন তরফদার, সুজিত ব্যানার্জী চন্দন।

No comments

Powered by Blogger.