এ রহস্যের সমাধান কি অমীমাংসিতই থেকে যাবে?-রহস্যময় হরতাল

আগামীকাল হরতাল! বিরোধী দলের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক কর্মসূচি। হরতালে পিকেটাররা দলে দলে রাস্তায় পিকেটিং করে (মিছিল, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগকে সংক্ষেপে পিকেটিং বলা হয়)। জনগণ চরম দুর্ভোগ সহ্য করে পায়ে হেঁটে কিংবা রিকশায় চড়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করে।


দিন শেষে বিরোধী দল বলে হরতাল সফল হয়েছে, জনগণের পূর্ণ সমর্থন ছিল। আর সরকার বলে, জনগণ এ হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে; দেশের পরিস্থিতি ছিল অন্যান্য দিনের মতোই; ব্যাংকে লেনদেন ছিল স্বাভাবিক; বাস-লঞ্চ-ট্রেন টার্মিনাল থেকে সঠিক সময়ে যানবাহন ছেড়ে গেছে...আরও কত কিছু। এবারও তা-ই বলবে। আসলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বা মিসরের পিরামিডের অজানা রহস্যের মতো এই হরতালও এক বিরাট রহস্য। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হরতাল সহ্যই করতে পারে না। কিন্তু পাঁচ বছর পর বিরোধী দলে গেলেই তাদের মধ্যে হরতাল দেওয়ার চেতনা অটো চলে আসে। সামান্য সর্দি-জ্বরের জন্য বিরাট ডাক্তার ডাকার মতো করে তারা তখন হরতাল ডেকে বসে। আর আজকালকার গবেষকেরাও কোনো কাজের না। আজাইরা কত রহস্যের সমাধান করে ফেলল, অথচ এই রহস্যের সমাধান কিছুতেই কেউ বের করতে পারল না। এদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না। তবে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকে বলে শিক্ষার্থীদের কাছে হরতাল খুবই প্রিয়। পিকেটার নয়, ক্রিকেটার হয়ে তারা নিশ্চিন্তে রাস্তায় ক্রিকেট খেলে। তা ছাড়া প্রাইভেট গাড়ির ড্রাইভাররাও ছুটি পেয়ে ‘গাড়ির বেরেক নাই’ টাইপের ছবি দেখতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন, মাঝেমধ্যে হরতালের দরকার আছে। এতে যানবাহন না চলায় দেশের তেল-গ্যাসের মজুদ বাড়বে। ফলে দেশের উন্নতি হবে। দেখেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো সব সময় দেশের উন্নতি নিয়ে চিন্তা করে। আহা, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো কত্ত ভালো! আজ আর লিখলাম না। আবেগে চোখে পানি চলে আসছে।

No comments

Powered by Blogger.