মুন্সীগঞ্জে নদীভাঙন আতঙ্ক by মো. আরিফুর রহমান

মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলা পদ্মার ভাঙনকবলিত এলাকা। গত ২০ বছরে পদ্মার ভাঙনে এলাকার দীঘিরপাড় ও হাসাইল-কানারী ইউনিয়ন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, মানুষ হয়েছে আশ্রয়হীন। ১৯৯০ সাল থেকে ঐতিহ্যবাহী দীঘিরপাড় ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙন ছিল প্রায় নিয়মিত ব্যাপার।


স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাসাইল-পারুলগাঁও রক্ষা বাঁধের কারণে ভাঙন থেকে রক্ষা পায় এলাকাবাসী, নদীর পাড়ের কাছাকাছি তৈরি হয় বিশাল চর এলাকা। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় শুরু করে বালু ব্যবসা। নদীর পাড়ে ড্রেজার বসিয়ে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে বালু ব্যবসা, যা নতুন করে নদীভাঙনের আতঙ্ক তৈরি করছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই নদীভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই দুটি ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের অসংখ্য পুকুর, ডোবা ইতিপূর্বেই বালু দ্বারা ভরাট করা হয়েছে, যা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করেছে। বালুভর্তি পাইপগুলোর ভারে স্থানীয় রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। ড্রেজারের কারণে নদীভাঙনের ফলে অন্তত দুইশ' বসতবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে।
বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর তলদেশের বালু কাটা নদীর পাড়ে ভাঙন ত্বরান্বিত করে। তাই নদীর পাড়ের আশপাশে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের কার্যকলাপ স্থানীয় প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।
একদিকে নদীভাঙন আর অন্যদিকে পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় সাধারণ মানুষ দিশেহারা। স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও আওয়ামী লীগ নেতার দাপটের কাছে তাদের ভরসার জায়গাটা কোথায় সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

সমো. আরিফুর রহমান :পিএইচডি গবেষক, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট, বুয়েট
 

No comments

Powered by Blogger.