বিমানবন্দর খুলবে আজ-ট্রেনযাত্রীরা ওঠানামা করবেন সীতাকুণ্ডে

চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে আরো দুই সপ্তাহ লাগতে পারে। কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাও বাতিল করা হয়েছে। তবে এই সময়ের মধ্যে রেলযাত্রীরা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড রেলস্টেশন থেকে ওঠানামা করবেন। গতকাল বুধবার বিকেলে রেলপথ ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ ব্যবস্থার কথা জানান।


অন্যদিকে শাহ আমানত (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গতকাল বুধবারও অচল ছিল। সে কারণে দিনের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সচল হতে পারে বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার পাহাড়ি ঢলে ভাটিয়ারী ও কুমিরা স্টেশনের মধ্যবর্তী একটি সেতু ধসে যাওয়ায় চট্টগ্রাম-ঢাকা ও চট্টগ্রাম-সিলেট রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। জলাবদ্ধতার কারণে রানওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় অচল হয়ে পড়ে বিমানবন্দর।
সীতাকুণ্ডের মাদামবিবির হাট এলাকার খাদিমপাড়ার ইছামতি খালের ওপর রেলওয়ের ৩৪ নম্বর সেতুটি মেরামতের কাজ চলছে। গতকাল মন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, তড়িঘড়ি করতে গেলে আবারও বিপত্তি দেখা দিতে পারে। এ জন্য রেলওয়ে ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যদের মাধ্যমে মজবুত করে সেতুটির মেরামতকাজ চলছে। এতে করে আরো ১৫ দিন বা দুই সপ্তাহ পর চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে। এই সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের যাত্রীরা সীতাকুণ্ড থেকে ওঠানামা করবেন।
এদিকে গতকাল বুধবার দিনভর বিকল্প (ট্রান্সশিপমেন্ট) পদ্ধতিতে ট্রেন চলাচল করলেও আজ থেকে আর তা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তাফাজ্জল হোসেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট পদ্ধতিতে ট্রেন চালালে যাত্রীদের দুর্ভোগ বহুগুণে বেড়ে যায়। সীতাকুণ্ড থেকেই সব ট্রেন চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার বিকেলের পর চট্টগ্রাম থেকে কিছু ট্রেন ঢাকা ও সিলেটের দিকে যেতে না পারায় সেগুলো চট্টগ্রামে থেকে গেছে। সেসব ট্রেন আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জিএম জানান। তিনি বলেন, ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও ঢাকা মেইল, সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ও জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন আপাতত বন্ধ থাকবে। পরবর্তী সময় এসব ট্রেন বিকল্প উপায়ে চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।
রেলওয়ের অপর এক সূত্রে জানা যায়, ঢাকামুখী তূর্ণা নিশীথা ও ঢাকা মেইল এবং সিলেটমুখী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের গতকালের (বুধবারের) সূচি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে রানওয়ে থেকে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব না হওয়ায় গতকালও অচল ছিল বিমানবন্দর। আন্তর্জাতিক রুটের ছয়টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার প্রবল বর্ষণের কারণে রানওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিমানবন্দরের স্টেশন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আজ (বুধবার) সারা দিন বিমান চলাচল করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার থেকে চলাচল করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।' তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বিত করা হয়েছে। মাস্কাট ও জেদ্দাগামী দুটি বিমান বুধবার চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।' তিনি বলেন, 'বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকার বিষয়টি জানেন বিধায় কোনো যাত্রী বিমানবন্দরে আসেননি।'
ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, সকালে দুটি, বিকেলে দুটি এবং রাতে দুটিসহ মোট ছয়টি ফ্লাইট ছিল। বিকেল পর্যন্ত চারটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.