বিশেষ সাক্ষাৎকার-বাংলাদেশের পণ্য পেলে কেন দুই হাজার কি.মি. দূর থেকে আনব by মানিক সরকার

মানিক সরকার ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৪৯ সালের ২২ জানুয়ারি দক্ষিণ ত্রিপুরার রাধাকৃষ্ণপুরে তাঁর জন্ম। ১৯৬৭ সালে তিনি ত্রিপুরার তৎকালীন কংগ্রেসশাসিত সরকারের বিরুদ্ধে খাদ্য আন্দোলনে যোগ দেন এবং যুক্ত হন স্টুডেন্ট ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ায় (এসএফআই)।


এক বছর পর রাজ্য সিপিএমের (ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী) সদস্যপদ পান মানিক সরকার। পরে এসএফআই রাজ্য কমিটির সচিব এবং সর্বভারতীয় কমিটির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক মানিক সরকার ১৯৭২ সালে সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তিনি আগরতলা শহরের আসন থেকে উপনির্বাচনে জয়ী হন। ১৯৯৩ সালে বামফ্রন্ট তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এলে মানিক সরকার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে বিধানসভার নির্বাচনে পশ্চিম ত্রিপুরার সোনামুরা মহুকুমার ধনপুর আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। ২০০৮ সালে ষষ্ঠ বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন মানিক সরকার। সম্প্রতি আগরতলায় প্রথম আলোর প্রতিনিধির সঙ্গে তিনি কথা বলেন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বাণিজ্য, যোগাযোগ, সন্ত্রাস মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে।
 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাহীদ এজাজ

প্রথম আলো  গত জানুয়ারিতে দিল্লি শীর্ষ বৈঠকের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশেষ পর্যায়ে উন্নীত বলে দাবি করছে দুই দেশের সরকার। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্য হিসেবে ত্রিপুরা বিষয়টিকে কীভাবে মূল্যায়ন করছে?
মানিক সরকার  ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ছিল, আছে এবং থাকবে। আকাশ ভেঙে টুকরো করা যায় না। তেমনি দুই দেশের সম্পর্ক ভেঙে চৌচির করার চেষ্টা থাকলেও তা সম্ভব নয়। সেই সম্পর্ক অটুট থাকুক। তবে এ ক্ষেত্রে দুই দেশের সরকারের ইতিবাচক ভূমিকা কাম্য। একটি পরিমণ্ডল তো বিরাজ করছে। এটিকে আরও সংহত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।
প্রথম আলো  দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া কি সঠিক পথেই এগোচ্ছে?
মানিক সরকার  বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এর আগেও তো দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে প্রস্তুতি চলেছে। জানুয়ারিতে যে সিদ্ধান্তগুলো হয়েছে, সেটি তো আর হঠাৎ করে হয়নি। কাজেই সেই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে দুই পক্ষ যখন মাঠে নামবে, তখন তো নতুন নতুন সমস্যা হতেই পারে। সেগুলো নিয়ে আবার আলোচনায় বসতেই হবে। এগুলো হলো নিরবচ্ছিন্ন বিষয়। এসব চালিয়ে যেতেই হবে। এই যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ত্রিপুরায় এলেন, এটা তো এই প্রক্রিয়ারই অংশ। আমরা এরপর চাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমাদের রাজ্যে আসুন। তাঁকে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে। তিনি সেটা গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। এগুলো সামগ্রিক প্রক্রিয়ারই অংশ। বিচ্ছিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই।
প্রথম আলো  আশুগঞ্জ নৌবন্দর হয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী পণ্য পরিবহনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ১০ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ এখনো শুরু হয়নি। বিষয়টি বিবেচনা করলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কি দীর্ঘসূত্রতায় আটকে গেছে?
মানিক সরকার  বিষয়গুলো দুটি রাষ্ট্রের ব্যাপার। কাজের ক্ষেত্রে দুটি রাষ্ট্রেরই নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। কাজের গতিপ্রকৃতিতে তো স্বকীয়তা আছে। একের কাজের সঙ্গে অন্যের কাজের প্রকৃতি না-ও মিলতে পারে। দেখুন, বাংলাদেশ-ভারত অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তি অনুযায়ী আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে পোর্ট অব কল ঘোষণা করা হয়েছে। অনেক দিন ধরে নৌবন্দরটি অব্যবহূত ছিল। কাজেই পোর্ট অব কল করার পর আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে কেন্দ্র করে কিছু অবকাঠামোগত সুবিধা তৈরি করতে হবে। নদীর নাব্যতা বাড়ানোসহ নানা ধরনের অবকাঠামো তৈরির জন্য কিছুটা সময় হয়তো লাগবে। বাংলাদেশ সরকার যে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে না, তা নয়। তারা সক্রিয় আছে। শুরুতে হয়তো ওই পথ দিয়ে আমাদের রাজ্যেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্রপাতি আসবে। কিন্তু সামনের দিনে মালামাল আসবে, মানুষ আসা-যাওয়া করবে। নানাভাবে যাতায়াত হবে। তা না হলে পোর্ট অব কল করা কেন? নৌপথ তো একটা জায়গায় গিয়ে শেষ হবে, তারপর তো আপনাকে সড়কপথে আসতে হবে। এখানে (আশুগঞ্জ) একটা সড়ক করতে হবে, যে সড়কটি দীর্ঘদিন অব্যবহূত ছিল। কিংবা বলা যেতে পারে, আজকের যে চাহিদা, সড়ক সেভাবে নেই। সড়কটি চওড়া করতে হবে, মজবুত করতে হবে। এই সড়ক করার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব আমরাই (ভারত) নেব। কাজটি আমরা করতে গেলে, টাকা খরচ করতে হলে তো বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মানতেই হবে। দুই পক্ষই এ নিয়ে কাজ করছে। এ ব্যাপারে একটি চুক্তির খসড়াও হয়েছে। এটি দ্রুত সইয়ের পর কাজ শুরু হবে। কাজ শুরু হলে শেষ হতে বেশি সময় লাগবে না। এ ব্যাপারে দুই দেশের মনোভাবই যথেষ্ট ইতিবাচক।
প্রথম আলো  আপনি বলছেন, আশুগঞ্জ শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পরিবহনই নয়, আগামী দিনগুলোতেও ব্যবহার করা হবে। এখন পর্যন্ত অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পরিবহনকে কেন্দ্র করে। এ ক্ষেত্রে কি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনায় এনে পরিকল্পনা করা অনেক বেশি যৌক্তিক নয়?
মানিক সরকার  দিস ইজ নট ওয়ার্ক ফর ওয়ান্স। প্রাথমিকভাবে পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পরিবহন করা হবে। কিন্তু এর পরও তো আশুগঞ্জ পোর্ট অব কল থাকবে। তখন সড়ক না থাকলে কী করে চলবে? ওই নৌবন্দরকে কেন্দ্র করে যে ধরনের অবকাঠামোগত সুবিধা দরকার, তা না থাকলে তো অসুবিধা হবে। কারণ, আশুগঞ্জ পোর্ট অব কল হলে বাংলাদেশের জন্য বিরাট আর্থিক সুযোগ তৈরি হবে। বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার নিয়মটা এমনই। কোনো কিছুই একতরফা হবে না। সবাই চাইবে উইন উইন সিচুয়েশন। কিন্তু সব ব্যাপারে উইন উইন হবে না। একেকবার একেক পক্ষ লাভবান হবে। সামগ্রিকভাবে লাভ হবে সবার। তা না হলে তো কখনো সমঝোতাই হবে না। কে তার ক্ষতি করে অন্যের সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করবে? এটা তো হতে পারে না। হওয়া উচিতও না। তাতে কতগুলো ভুল বোঝাবুঝির ক্ষেত্র তৈরি হয়। এ রকম হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামগ্রিকভাবে মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে হবে—এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের অ্যাপ্রোচটা ব্যাপকভিত্তিক, ইতিবাচক ও গঠনমূলক হওয়া উচিত।
প্রথম আলো  ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে ত্রিপুরাকে বলা হচ্ছে মূল ফটক। সে ক্ষেত্রে সড়কপথের পাশাপাশি অন্য মাধ্যমে যোগাযোগ নিয়ে আপনাদের বিকল্প ভাবনাগুলো কী?
মানিক সরকার  রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে যুক্ত হওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। শুধু একটার ওপর নির্ভরশীল হলে তো চলবে না। তাহলে তো আমরা সড়ক করে স্থলপথেই দাঁড়িয়ে থাকতাম, রেল করছি কেন? জলপথ করছি কেন? আকাশপথে যাচ্ছি কেন? দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগে আমরা এসব বিষয়কে যুক্ত করতে চাই। এর সঙ্গে যোগ করতে চাই টেলিযোগাযোগকেও। যোগাযোগ ব্যাপক একটি ক্ষেত্র। যোগাযোগ ছাড়া পৃথিবী কাছাকাছি আসবে না। কোনো উন্নতিও সম্ভব নয়। সেদিক থেকে ভবিষ্যতে বিভিন্ন সম্ভাবনাকে যাচাই করে দেখা হবে। তবে প্রথম একটা দিয়ে শুরু করতে হবে। সবগুলো একসঙ্গে শুরু করা সম্ভব নয়। সেটা ঠিকও না। একটা জায়গা থেকে আমরা শুরু করি। সেখান থেকে শুরু করব, যেখান থেকে সহজে শুরু করা যায়। এটাই তো কারিগরি দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত। প্রথমে একটা নিয়ে শুরু করি, পরে বাকি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা যাবে। দেখুন, শুরুর পর যখন ইতিবাচক ফল আসবে, তখন সন্দেহ যাদের আছে তারাই বলবে, এটা করো, ওটা করো। এটাই আমাদের অভিজ্ঞতা। আমার বিশ্বাস, সামনের দিনে যোগাযোগ স্থাপনের অনেকগুলো দিক উন্মোচিত হবে।
প্রথম আলো  বলা হচ্ছে, সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হলে বাংলাদেশের জন্য ব্যবসা ও বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ হবে ত্রিপুরায়। এ পর্যন্ত কোন কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখিয়েছেন? বাণিজ্যের অন্য ক্ষেত্রগুলো কেমন?
মানিক সরকার  এখন পর্যন্ত ইস্পাত নির্মাণ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের পাশাপাশি তৈরি পোশাকশিল্প স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ত্রিপুরার বিদ্যুৎ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ইস্পাত নির্মাণশিল্পের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ ছাড়া এখানে উন্নয়নমূলক কাজ যেভাবে শুরু হয়েছে, তাতে প্রচুর ইস্পাতের চাহিদা তৈরি হয়েছে। ফলে এখানে উৎপাদিত ইস্পাত ত্রিপুরার চাহিদা পূরণ করেই লাভজনক হতে পারে। পাশাপাশি অবস্থানগত কারণে ত্রিপুরায় উৎপাদিত অতিরিক্ত ইস্পাত এ অঞ্চলের অন্য প্রদেশে বাজারজাতকরণের সুযোগ থাকছে। কারণ, সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কাজ শুরু হয়েছে। সামগ্রিকভাবে বাণিজ্যের সম্ভাবনাটা ব্যাপক। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছেন। বাংলাদেশ ও ত্রিপুরা—দুই জায়গাতেই ইস্পাতের চাহিদা আছে। এদিকে আশুগঞ্জের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়, আমরা সাবরুম পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করব। ফেনী নদীর ওপর সেতু করব। জয়েন্ট অ্যালাইনমেন্ট চূড়ান্ত করব। এটা হলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্যবাহী কনটেইনার খুব সহজেই রেলপথে ত্রিপুরায় আসবে। এতে তো বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের অনেক সুবিধা হবে। এখান থেকে শুধু উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি ওই পণ্য ভারতের কেন্দ্রে চলে যাবে।
অন্যদিকে দুই হাজার কিলোমিটার দূর থেকে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনতে হয়। দরকারটা কী এত দূর থেকে আনার? বাংলাদেশেই তো তেল-মসলাসহ এসব পণ্য পাওয়া যায়। উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে এসব পণ্য আনার যৌক্তিকতা কোথায়? বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য যদি আনা যায়, শুধু ত্রিপুরা কেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চার কোটি মানুষের বাজারে প্রবেশ করা যাবে। সব মিলিয়ে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে বাংলাদেশের জন্য এ অঞ্চলে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।
প্রথম আলো  সামগ্রিকভাবে কী পরিমাণ বাণিজ্য হতে পারে?
মানিক সরকার  ধরা যাক চট্টগ্রাম বন্দরের কথা। বন্দর ব্যবহার করলে তো বাংলাদেশকে আমাদের টাকা দিতে হবে। এখন যে পরিমাণ জাহাজ চলাচল করে, ভবিষ্যতে তো তা বাড়বে। এতে বাংলাদেশই লাভবান হবে। এই মুহূর্তে ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের যে বাণিজ্য হয়, তাতে বিপুল ঘাটতি আছে। দুই পক্ষের বাণিজ্যের বড় অংশটা বাংলাদেশের পক্ষে। আমাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুললে আমি বলেছি, এ নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। কারণ, বাংলাদেশের সামর্থ্য আছে বলেই তারা পণ্যগুলো রপ্তানি করতে পারছে। এ ছাড়া আমাদের ওই পণ্যগুলো দরকার। শুরুতে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল বছরে পাঁচ কোটি রুপি। গত বছর তা হয়েছে ১৬০ কোটি রুপি। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১০ কোটি রুপি সমমানের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এতে কি আমরা ঈর্ষা করব? আমার নেই বলেই তো বাংলাদেশ থেকে পণ্যগুলো আসে। ওই পণ্যের প্রয়োজন তো আমাদের আছে। আমার ধারণা, বাণিজ্যের পরিমাণ এ বছর ২০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যাবে।
প্রথম আলো  সন্ত্রাসবাদ দমনে দুই দেশ কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে?
মানিক সরকার  সন্ত্রাসবাদ দমনের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার যথেষ্ট ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে। অনেক আগে থেকেই বলে এসেছি, আমাদের জন্য বিরাট সমস্যা তৈরি করেছে বলে সন্ত্রাসবাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। ত্রিপুরার মাটিতে দাঁড়িয়ে আমরা অখণ্ডতার জন্য লড়াই করছি। আমাদের দেশের যদি ঐক্য ও সার্বভৌমত্ব না থাকে, তাতে আমার প্রতিবেশী দেশও প্রভাবিত হতে পারে। তেমনি আমাদের প্রতিবেশী দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা না থাকলে তার প্রভাব আমাদের ওপর পড়বে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা ছাড়া ইতিবাচক কাজ করা যায় না। আপনার বাড়িতে বিয়ের উৎসব হচ্ছে, পাশের বাড়িতে যদি আগুন লাগে, তখন আপনি কি নিশ্চিন্তে অনুষ্ঠানটি করতে পারবেন? আপনি তা করতে পারবেন না। এটা যদি ঘটনা হয়, বাস্তবতা হয়, আমাদের কারোরই একের মাটি অন্যের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে ক্ষতি করার সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। আমি তো মনে করি, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সামগ্রিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
মানিক সরকার  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.