খোলা হাওয়া-আমাদের রাজনীতিতে বখাটেপনা by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

খবরের কাগজে এখন প্রায় প্রতিদিন দেশের নানা জায়গায় ঘটা ‘ইভ টিজিং’-এর খবর বেরোয়। অথচ এ কাজটি যৌন হয়রানি এবং মেয়েদের অধিকার হরণের মতো গুরুতর অপরাধ। যারা এসব অপরাধ করে, পত্রপত্রিকা তাদের ‘বখাটে’ বলে উল্লেখ করে, যদিও তারা বড় ধরনের অপরাধী।


কিন্তু একবার বাজারে কোনো নামে কিছু চালু হয়ে গেলে সেই নাম বদলে ফেলাটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাই ইভ টিজিং এবং বখাটে শব্দ দুটি আমাদের ব্যবহার করতে হয়। কী আর করা।
আজকাল অবশ্য বখাটেদের কাজটা কিছুটা কঠিন হয়েছে, কোনো কোনো জায়গায়। মানুষ প্রতিরোধ গড়ছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসছেন, তাদের সাত দিন থেকে এক বছর মেয়াদি কারাবাসের সাজা হচ্ছে। সেদিন এক মফস্বল শহরে দুই বখাটেকে গণপিটুনি দেওয়ার খবর বেরোল। শনিবার বেরোল এক স্কুলশিক্ষক বখাটের শাস্তি পাওয়ার খবর, ঢাকা শহরে। যে দুই বখাটে গণপিটুনি খেল, তাদের এক টিভি চ্যানেলেও দেখানো হলো। একেবারেই বখে যাওয়া দুই যুবক। শিক্ষা নেই, সংস্কৃতি নেই, ভালো-মন্দের বিচারবোধ নেই। তবে আছে ঔদ্ধত্য, হয়তো অস্ত্রপাতিও এবং টাকাপয়সা যে আছে, বোঝা গেল থানায় তাদের বেপরোয়া আচরণ দেখে। এ রকম বখাটেদের জন্য তদবিরে নেমে যান কোনো না কোনো ক্ষমতাসীন ঠাকুর। আজকাল পুলিশও কোনো কোনো সময় এদের বাঁচাতে ‘প্রেমঘটিত কারণের’ অজুহাত সাজায়। এই বখাটেরা অনেক সময় মাদকাসক্ত হয়। নানা অপকর্মে তারা পারদর্শী হয়। তারা ভাবে, একটা মেয়েকে ভয় দেখিয়ে, তার পিছু লেগে, তার সর্বনাশ করে বীরের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়া যায় এবং আশ্চর্য, এই বখাটেদের মা-বাবাও ভাবেন, এদের বখাটেপনাটা নিছক বয়সের দোষ। ‘এই বয়সের ছেলেরা এমন করেই, এ নিয়ে এত হইচই কেন’—এ রকম মনোবৃত্তি অনেক মা-বাবার।
বখাটেদের বিপরীতে আছে সেই তরুণেরা, যারা পরিবার থেকে মানবিক শিক্ষা পেয়েছে; যারা নান্দনিকতায় বিশ্বাসী; যাদের শিক্ষা আছে, সংস্কৃতি আছে; যারা ভালো-মন্দ বিচার করতে পারে এবং যারা ভাবে, একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করা, তাকে ভয় দেখানো বড় ধরনের এক কাপুরুষতা—এই তরুণদের সংখ্যা এখনো অনেক বেশি বলে আমাদের সমাজটা একেবারে পচেগলে যায়নি। এদেরই আমি প্রতিদিন দেখি। বখাটেদেরও দেখি এবং তাদের সংখ্যা যে বাড়ছে সে উদ্বেগ আমাকে শঙ্কার দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু সংস্কৃতিমান তরুণদের দেখে সাহসও পাই। ভাবতে সাহস আসে যে একদিন বখাটেদের বাড়তে থাকা সংখ্যাটা নিচে নামতে থাকবে। নামতে নামতে ভূমির কাছাকাছি চলে যাবে।
২. আমাদের রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় বখাটেদের প্রসঙ্গ কেন তুললাম, তার একটা ব্যাখ্যা দিতে হয়। ব্যাখ্যার শুরুতে একটু ইতিহাসে যাই, যাওয়াটা প্রয়োজন বলে।
আজ থেকে ৪২ বছর আগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হই এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আমার অনেক সহপাঠীর মতো রাজনীতির প্রবাহে নিজেকে আবিষ্কার করি। রাজনীতির প্রবাহ থেকে দূরে থাকা তখন সম্ভব ছিল না, কেননা, আমাদের অস্তিত্বের লড়াই তখন একটা চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে যাচ্ছিল। চাই বা না চাই, জনসভায় মিছিলে-রাজপথে যেতে হয়েছে এবং একসময় আবিষ্কার করেছি, যাঁরা রাজনীতির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তখন, তাঁদের আকর্ষণেই যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক বছরে কাছে থেকে তাই মওলানা ভাসানীকে দেখেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দেখেছি; কমরেড মণি সিংহ, তাজউদ্দীন আহমদ এবং আরও অনেককে দেখেছি, তাঁরা রাজনীতি করেছেন মানুষের জন্য, তাঁদের আন্তরিকতা ছিল প্রাণছোঁয়া, তাঁদের দেশপ্রেম ছিল পর্বতসমান। তাঁরা কেউ স্বার্থের রাজনীতি করেননি; বাড়ি-গাড়ি-ক্ষমতা অথবা ‘পাওয়ার’ রাজনীতি করেননি। বছরের পর বছর তাঁরা জেল খেটেছেন, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন, কিন্তু নীতি থেকে সরে আসেননি। তাঁদের বিপরীতে আমি পাকিস্তানি জেনারেলদের দেখতাম, জুলফিকার আলী ভুট্টোর মতো অহংকারী, ক্ষমতালোভীকে দেখতাম এবং ভাবতাম, সাতচল্লিশের পর এতগুলো বছর এদের সঙ্গে একই চালার নিচে আমরা আছি কী করে? আমি ভাবতাম, আর নিশ্চিত জানতাম, এই স্পর্ধিত, অসংস্কৃত, অমার্জিত জেনারেল রাজনীতিবিদ অধ্যুষিত ভূখণ্ডের সঙ্গে আমাদের বিচ্ছেদ বোধ করি প্রকৃতি-নির্দিষ্টই। যে ভূখণ্ডে ভাসানী-মুজিব-মণি সিংহ রাজনীতি করেন, সে ভূখণ্ডে ওই ‘অপ’দের জায়গা হতে পারে না। হয়ওনি।
১৯৭৩ সালের শেষদিকে তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে আমরা কয়েক বন্ধু দেখা করতে গেলে তিনি আমাদের আদর্শিক রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেছিলেন, রাজনীতিকে হতে হবে জনকল্যাণমুখী, সুশীল, সুন্দর। মানুষ যেন একজন রাজনীতিবিদকে দেখে ভরসা পায়, মানুষ যেন বিশ্বাস করতে পারে, যদি দেশে দুর্ভিক্ষ নামে, একজন রাজনীতিবিদ নিজে অভুক্ত থেকে মানুষের মুখে আহার জোটাবেন।
তাজউদ্দীন নিজে সেই মাপের রাজনীতিবিদ ছিলেন, তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল স্নিগ্ধ, তাঁর স্বপ্নজুড়ে ছিল স্বদেশ ও মানুষ।
তাঁর থেকে ধার করে তাঁর ও তাঁর অনেক সহকর্মীর এবং ভাসানী-মুজিব-মণি সিংহের রাজনীতিকে আমরা বলতে পারি সুশীল, সুশীল শব্দটি বখাটের বিপরীতার্থক। ওই সময়ের সুশীল রাজনীতির বিপরীতে যেমন আমাদের সময়ের রাজনীতির বখাটে একটি প্রবণতা।
স্বাধীনতার পর থেকেই অল্প অল্প করে বখাটেপনা জুটেছে আমাদের রাজনীতিতে। তারপর পাকিস্তানি জেনারেলদের মতো দু-এক বাংলাদেশি জেনারেলও নেমেছেন রাজনীতিতে, টাকা ঢেলেছেন। ক্ষমতার নানা ধরনের প্রাপ্তির ডালা সাজিয়েছেন। ডান-বাম থেকে অনুসারী জুটিয়েছেন। স্পর্ধা, লোভ, ঔদ্ধত্য, অহমিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের রাজনীতির সচল মুদ্রা। শিক্ষা গেছে, সংস্কৃতি পালিয়েছে। রাজনীতি বখাটে হয়ে পড়েছে।
তারপর মানুষ জেগেছে। ছাত্ররা পথ দেখিয়েছে। জেনারেল-রাজনীতিবিদেরা বিদায় হয়েছেন। কিন্তু একবার বখাটেপনা রক্তে ঢুকে গেলে, যেমন সর্বনাশী মাদকের নেশা একবার রক্তে ঢুকে গেলে, তা বের করে দেওয়াটা একটা কঠিন কাজ, প্রায় অসম্ভব একটি প্রস্তাবনা। আমাদের ছাত্ররাজনীতিতে কী করে জানি বখাটেপনা ঢুকে পড়ল। আমাদের মূল রাজনীতিতেও বখাটেপনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল।
এখন, ‘গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের’ দুই যুগ পরে, আমি ভীষণ মনঃকষ্ট নিয়ে দেখছি, সুশীল রাজনীতির দিন যেন শেষ হয়ে গেছে। একেবারে যে নেই, তা নয়। এখনো কিছু রাজনীতিবিদ আছেন, যাঁরা তাজউদ্দীনের মতো স্বপ্ন দেখেন, মানুষকে নিয়ে ভাবেন। কিছু ছাত্রসংগঠন এখনো শ্রমিক-কৃষকের জন্য, নিরন্ন মানুষের জন্য সংগ্রাম করে, কিছু তৃণমূল কর্মী আছেন, নানা সংগঠনের, যাঁরা জেগে থাকেন মানুষের জন্য। তাঁরা আছেন বলে সমাজটা পচেগলে যায়নি। কিন্তু মূলধারার রাজনীতিতে তাঁদের কি বড় একটা জায়গা আছে? নাকি মূলধারার রাজনীতিতে বখাটেপনার দৌরাত্ম্য?
ওই বখাটেপনার একটা প্রকাশ সংস্কৃতিহীনতা, আদর্শহীনতা, সহিংসতা এবং চূড়ান্ত স্বার্থপরতা। আমাদের রাজনীতিতে কি এখন সুশীল ভাবটি আছে? সংস্কৃতির একটা স্থান আছে? রাজনীতিবিদদের বক্তৃতা শুনলে কি মনে হয়, তাঁরা অন্যদের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল অথবা নিজেদের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল? তাঁরা যখন অন্যের প্রতি কটূক্তি করেন, বিষোদ্গার করেন, অভব্য মন্তব্য করেন, তখন কি মনে হয় না, তাঁরা নিজেদেরই ছোট করছেন? বখাটেপনার একটি প্রকাশ হচ্ছে উদ্ধত, বেপরোয়া আচরণ। গণধোলাই খাওয়া সেই দুই যৌন নিপীড়ক থানায় সাংবাদিকদের সামনে যেভাবে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিল, তাতে আমার মনে হয়েছিল, তারা জামিন পেয়ে ফিরে এলে আরও চণ্ডমূর্তিতে আবির্ভূত হবে। হয়তো অধিকারহারা মেয়েটিকে পরিবারসহ পালাতে হবে অন্য কোথাও। আমাদের রাজনীতির এখন যে ডিসকোসর্, তাতে আস্ফাালনটা বেশি, তাতে শুধুই হম্বিতম্বি। ‘দেখে নেব’ এবং ‘ক্ষমতায় গেলে আমরাও দেখে নেব’—এ রকম হুমকি। অজস্র হুমকি। পাঁচ মিনিট রাজনীতির বক্তৃতা শুনুন, আপনার মনে হবে কোনো রণাঙ্গনে বসে আছেন। গোলাবর্ষণ চলছে কানের দুই পাশ দিয়ে।
সুশীল তরুণদের কথা উল্লেখ করেছি। তাদের মধ্যে যে মনোমালিন্য হয় না, তা নয়, কিন্তু সে জন্য অস্ত্র হাতে, খিস্তিখেউড় ও গালিশব্দ উচ্চারণ করতে করতে তারা একে অপরের দিকে তেড়ে যায় না, যেমন যায় বখাটেরা। সুশীল তরুণেরা শান্তিপূর্ণ বিরোধ সমাধানের একটি উপায় খুঁজে নেয়। একসময় হয়তো চায়ের টেবিলে বসে হাত মেলায়। সুশীল রাজনীতিতে এই চর্চাটি আমরা দেখেছি। স্বাধীনতার আগে বাম-মধ্য-ডানপন্থী অনেক রাজনীতিবিদ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। কিন্তু কুৎসিত আক্রমণ, চরিত্রহনন ছিল না। ভাসানী ও মুজিবের মতানৈক্য ছিল, কিন্তু ভাসানীর প্রতি মুজিবের শ্রদ্ধা অটুট ছিল, যেমন ছিল মুজিবের প্রতি ভাসানীর স্নেহ। তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মতানৈক্য হয়েছিল। কিন্তু তাজউদ্দীন একটিবারের জন্যও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি, বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধায় কোনো কমতি হতে দেননি। আমাদের ওই সাক্ষাতে তিনি একটিবারও কারও সম্পর্কে একটি বিরূপ মন্তব্যও করেননি। এতে আমাদের মনে তাঁর আসনটি হয়েছে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার।
এখন তাজউদ্দীনের মাপের রাজনীতিবিদ কজন আছেন আমাদের মাঝে? সারাটা জীবন একটা আদর্শকে মাথায় রেখে রাজনীতি করলেন, কোনো কলুষ, কোনো অপরিচ্ছন্নতা তাঁর কথাবার্তা, বক্তৃতা, আচরণ তথা তাঁর ব্যক্তিত্বকে স্পর্শ করতে দিলেন না।
৩. একটা হরতালের ডাক এসেছে ৩০ নভেম্বরের। এই হরতাল একসময় ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। আমরা যখন স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি, তখন হরতাল হতো। একাত্তরের মার্চে হয়েছে, এর আগেও হয়েছে, একাত্তরের মার্চের হরতালের কথা মনে আছে। যে স্বতঃস্ফূর্ত কথাটি ক্রমাগত অপব্যবহারে বিপন্ন হয়ে পড়েছে এখন, সেই স্বতঃস্ফূর্ত হরতালই ছিল সেসব। সারা দেশের মানুষ এক হয়ে হরতাল করেছে। হাসতে হাসতে দিনমজুরির পয়সা বিসর্জন দিয়েছে মিলের শ্রমিক, ঘাটের কুলি, রিকশাওয়ালা। কারণ সবার চোখেই তখন একটা স্বপ্ন ছিল, আদর্শ ছিল, এখনো রাজনীতিবিদেরা ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে’ হরতাল করার জন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান। বিএনপি জোট শাসনামলে আওয়ামী লীগ করেছে, এখন বিএনপি করছে। ৩০ তারিখেও করবে। কিন্তু এখন হরতাল একটা চাপিয়ে দেওয়া যন্ত্রণা ছাড়া কিছু নয়। এখন হরতালের পেছনে স্বপ্ন থাকে না, আদর্শ থাকে না। অমুক নেতার গ্রেপ্তার হওয়া, তমুক নেতার ওপর পুলিশি লাঞ্ছনা, বিরোধী নেত্রীকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, কারও নামে মামলা দায়ের—এসব হচ্ছে এখন হরতালের ইস্যু। তার পরও, দেশ যেহেতু এখন জোট আর মহাজোট ক্যাম্পে বিভক্ত, হরতালের পক্ষে থাকবেন অনেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বিএনপি-জামায়াতপন্থী সহকর্মীরা নিশ্চয় আমার এ লেখা পড়লে বিরক্ত হবেন, যেমন হবেন বিএনপির অনুসারীরা; যেখানেই তাঁরা থাকুন, জোট সরকার আমলে হরতালের সমালোচনা করে লেখা আমার কলাম পড়ে যেমন বিরক্ত হতেন আওয়ামীপন্থীরা। কিন্তু যতই তাঁরা বিরক্ত হন, আমরা জানি, হরতাল সংঘাত বাড়ায়, বখাটেপনা বাড়ায় রাজনীতিতে; হরতালের দিন আপনি কাটান অধিকারহীন, যেমন কাটায় বখাটেদের উৎপাতে ঘরের মধ্যে বন্দী কোনো মেয়ে। হরতালের দিন যদি আপনি মাকে দেখতে দাকোপ যেতে চান ঢাকা থেকে, চেষ্টা করে দেখতে পারেন, যত অসুস্থ থাকুন মা।
আর দেশের অর্থনীতি, ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ও রপ্তানি খাত, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা—এসবের কথা না হয় না-ই বললাম, অথচ, বড় আয়রনি হলো, যেসব ইস্যুতে হরতাল হচ্ছে, সেগুলোর একটাও নিষ্পন্ন হবে না, বরং এসবের প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি আরও কঠোর হবে।
যদি হরতালে লাশ পড়ে, ভয়াবহ অরাজকতা হয় সারা দেশে, সরকারের পতন হয়; কিন্তু তাতে দেশটাই যে লাশ হয়ে যাবে।
৪. সুশীল রাজনীতি কি ফিরিয়ে আনা যায় না? শ্রদ্ধার, সহনশীলতার, পরস্পরের প্রতি আস্থার, দেশের জন্য স্বপ্ন বোনার, স্বপ্ন-ফসল তোলার রাজনীতি? এই রাজনীতি এই পলিমাটির দেশে একসময় তো ছিল, এই পলিমাটির দেশেই!
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: কথাসাহিত্যিক। অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

No comments

Powered by Blogger.