তত্ত্বাবধায়ক দাবি মেনে না নিলে গণআন্দোলনে সরকারের পতন হবে : জয়নুল আবদিন ফারুক

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক এমপি বলেছেন, খালেদা জিয়া দেশ বাঁচানোর, মানুষ বাঁচানোর আন্দোলনে নেমেছেন। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠিত করে যত শক্তিশালী করা হোক না কেন, বর্তমান দলীয় সরকার তাদের কথায় নির্বাচনে সেনাবাহিনী দেবে না। চলতি অধিবেশনেই সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে।


গতকাল সকাল থেকে দুপুুর পর্যন্ত নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর সেনবাগের গাজিরহাটের ডমুরুয়া মোড়, কানকিরহাট ও ছাতারপাইয়া বাজারসহ কয়েকটি স্থানে আয়োজিত পথসভা ও কর্মী সমাবেশে জয়নুল আবদিন ফারুক এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট জাকারিয়া, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন পাটোয়ারী, সেনবাগ পৌর বিএনপির সভাপতি জাহিদুল হক সবুজ, সাধারণ সম্পাদক ফারুক বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক আবু ইউছুফ মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মমিন উল্লা, বিএনপি নেতা আবদুল্লা আল মামুন, মিয়া মো. ইলিয়াছ, অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।
‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতেই বিরোধীদলের আন্দোলন’—সরকারি দলের এই বক্তব্যের জবাবে ফারুক বলেন, আওয়ামী লীগ আগে থেকেই এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আসছে। তারা যখনই দেখেছে জনগণ তাদের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে বিরোধী দলের প্রতি অবস্থান নিয়েছে, তখনই জনগণের দৃষ্টি ভিন্নম্নদিকে প্রবাহিত করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা নয়, দেশ রক্ষার জন্য বিএনপি আন্দোলনে নেমেছে। যদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, এটা বিচার নয়, প্রহসন। চার দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সরকার এ বিচার করছে। এ জন্য নিজামী-মুজাহিদ, সাঈদী ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ সরকার তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাদ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যে নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে, তা দেশপ্রেমিক জনগণকে নিয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দুর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তুলে প্রতিহত করা হবে। তিনি বলেন, পুলিশ আমার ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে সে নির্যাতনে আমার একটি পা ভেঙ্গে গেছে। এ সরকারের আমলে দেশে আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছুই নেই। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করছে দলীয় ক্যাডাররা। যার প্রমাণ গতকাল ভোররাতে উপজেলার ডমুরুয়া মোড় ও কানকিরহাট বাজারে পুলিশের সামনে আওয়ামী ক্যাডাররা কয়েকটি তোরণ ভেঙে ফেলে।
জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে সংসদে বিল আনে তা হলে আমরা সংসদে যাব। যে কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আওয়ামী লীগ ১৭২ দিন হরতাল করেছে, সে কেয়ারটেকার সরকারকে আজ গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে সরকার গঠন করেছে এবং ওই সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। কিন্তু ওই দিন কেন শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামীকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনেননি। আজ যখন বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী আন্দোলন করছে, এখন তারা রাজাকার হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কয়েকটি মামলা করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। ‘চল চল ঢাকা চল’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে খালেদা জিয়ার দেশ বাঁচানোর আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য দেশের জনগণের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.