নতুন ইজেডে নতুন সম্ভাবনা-গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়েই শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা by সারোয়ার সুমন,

ট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগামী ১০ বছরের মধ্যে ২০টি নতুন ইকোনমিক জোন (ইজেড) স্থাপনের ঘোষণা এসেছে। বলা হচ্ছে, নতুন এসব ইকোনমিক জোনে নতুন শিল্প কারখানা হবে দেড় হাজার। যেগুলোতে কর্মসংস্থান হবে দক্ষ-অদক্ষ ১৫ লাখ শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর। বাণিজ্যনগরী চট্টগ্রামে এসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক নাজমুল ইসলামের দেওয়া এ ঘোষণায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হলেও দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে ক্রমবর্ধমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট। বিদ্যমান শিল্প কারখানাগুলোতেই যখন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না তখন ভবিষ্যতের দেড় হাজার নতুন শিল্প কারখানায় কীভাবে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংস্থান হবে তা নিয়ে চিন্তিত তারা।


উল্লেখ্য, মেশিন স্থাপনের পাশাপাশি অবকাঠামোগত সব নির্মাণ কাজ শেষ করার পরও গত পাঁচ বছর চট্টগ্রামে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি ১৪৩টি নতুন শিল্প কারখানা।
ইকোনমিক জোন সম্পর্কে নাজমুল ইসলাম বলেন, 'ইপিজেডের ধারণা থেকে বেরিয়ে নতুন আঙ্গিকে তৈরি করা হবে ইকোনমিক জোন। ইপিজেডে বিদেশি উদ্যোক্তারা প্রাধান্য পেলেও ইজেডে অগ্রাধিকার পাবেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। এখানে সাশ্রয়ী দরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি ট্যাক্স মওকুফসহ অন্যান্য সুবিধাও পাবেন ব্যবসায়ীরা। নতুন ইজেডের জন্য ইতিমধ্যে ১৪টি স্থানও চূড়ান্ত করে ফেলেছি আমরা।' ২০১২ সালের মার্চ-এপ্রিলের দিকে নতুন ইজেডের যাত্রা শুরু হবে বলেও জানান তিনি। চট্টগ্রামে গত ২৭ অক্টোবর এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব ঘোষণা দেন তিনি।
সরকারের এমন ঘোষণায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে উৎসাহ। তবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে নতুন এ পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা। চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম বলেন, 'নতুন ইজেডগুলোর মধ্যে দুটি হবে চট্টগ্রামে। কিন্তু কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নবগঠিত ইজেডগুলোতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে তা এখনও আমাদের বোধগম্য নয়। চলমান শিল্প কারখানাগুলোতেও এখন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সুবিধা নিয়মিত পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।' তবে নবগঠিত ইজেডে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, ইপিজেডগুলোতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখান থেকে বাংলাদেশের লাভ হচ্ছে সামান্য। অথচ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে দেশীয় উদ্যোক্তাদেরই কারখানা চালুর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে বছরের পর বছর। শুধু চট্টগ্রামেই এমন অপেক্ষমাণ শিল্প কারখানা রয়েছে ১৪৩টি। এ প্রসঙ্গে চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ এমএ লতিফ বলেন, 'স্বাধীনতার ৪০ বছর পর বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি সুখবর পেলাম আমরা। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট যেভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে তাতে এ সুখবর কতটা স্বস্তিদায়ক হবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান।'

No comments

Powered by Blogger.