দরপতন অব্যাহত

শেয়ারবাজারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে। গতকাল দেশের উভয় শেয়ারবাজারের বেশিরভাগ শেয়ারদর কমেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর দুই-তৃতীয়াংশ শেয়ারের দর কমলেও সে তুলনায় সূচক কমেছে সামান্যই। একই অবস্থা ছিল অপর শেয়ারবাজার সিএসইতেও। শেয়ারবাজার সূত্র জানিয়েছে, গতকালের দরপতন রোধে বড় মূলধনী কোম্পানি; বিশেষত ব্যাংক ও জ্বালানি খাতের প্রায় সব শেয়ার দরবৃদ্ধি বড় ভূমিকা রেখেছিল। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, গতকাল প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ এই দুই খাতের শেয়ার দরবৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখে।


দেশীয় কয়েকটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের পাশাপাশি দেশে ব্যবসারত দুই বহুজাতিক ব্যাংকও গতকাল উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করে, যা পরোক্ষে ডিএসইর সাধারণ সূচককে ৫০০০ পয়েন্টের মাইলফলক থেকে ছিটকে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করেছে। গতকালের লেনদেন শেষে দেখা গেছে, ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৪৯টি কোম্পানির শেয়ার ও অন্যান্য সিকিউরিটিজের মধ্যে ৭৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৬৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১১টির দর। সাধারণ সূচক ৪০ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে ক্লোজ হয় ৫০৩৬ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে। এদিন লেনদেন হয়েছে মোট ২৯০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার ও অন্যান্য সিকিউরিটিজ। অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৬৪টি কোম্পানির শেয়ার ও অন্যান্য সিকিউরিটিজের মধ্যে মাত্র ২২টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৩৫টির, অপরিবর্তিত ছিল ৭টির দর। নির্বাচিত খাত সূচক ৮৪ দশমিক ৮২ পয়েন্ট কমে ক্লোজ হয় ৯২৮৩ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার ও অন্যান্য সিকিউরিটিজ।
গতকালের ডিএসইর লেনদেন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, আগের কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় গতকালও দরপতন দিয়ে দিনের লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে সূচক কমে যায় ৩৬ পয়েন্ট। এ সময় লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারই দর হারায়। কিন্তু দরপতনের মুখে কয়েকটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী শেয়ার ক্রয় শুরু করলে সে অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বাজার সূচক। দুপুর ১২টায় সূচকটি আগের দিন থেকে ৭২ পয়েন্ট বেড়ে ৫১৪৯ পয়েন্টে পেঁৗছে যায়। তবে লেনদেনের শেষ ১৫ মিনিট ছাড়া মাঝের পৌনে তিন ঘণ্টায় বেশির ভাগ শেয়ারই নিম্নমুখী ছিল। কিন্তু লেনদেনের শেষভাগে ব্যাংক এবং জ্বালানি খাতের বেশির ভাগ শেয়ার দরবৃদ্ধির ধারায় ছিল। গতকাল ডিএসইতে ব্যাংকিং খাতের ৩০টির মধ্যে লেনদেন হয় ২৯টির শেয়ার। এরমধ্যে ২২টিরই দর বাড়ে। জ্বালানি ও শক্তি খাতের লেনদেন হওয়া ১২টির মধ্যে ৭টিরই দর বাড়ে। এছাড়া করপোরেট বন্ড খাতের উভয় বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতের বেশির ভাগ ফান্ডের দর বৃদ্ধি পায়।
খাতভিত্তিক লেনদেনের দিক থেকে গতকালও ব্যাংক খাতে সর্বাধিক ৯৪ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৩২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। লেনদেনে এর পরের অবস্থানে জ্বালানি ও শক্তি খাতে ৩১ কোটি ৩৪ লাখ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ২৭ কোটি, প্রকৌশল খাতে ১৯ কোটি ৬১ লাখ, বস্ত্র খাতে ১৮ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনে শীর্ষে গ্রামীণফোনের ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
এর পরের অবস্থানে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউসিবিএল, তিতাস গ্যাস। দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল ইবিএল এনআরবি মিউ. ফান্ড, গ্গ্নাক্সোস্মিথ, পাওয়ার গ্রিড, ৮ম আইসিবি মিউ. ফান্ড, মেট্রো স্পিনিং। দরহ্রাসের শীর্ষে ছিল দুলামিয়া কটন, সমতা লেদার, দেশবন্ধু পলিমার, ফাইন ফুডস, বিডিকম।

No comments

Powered by Blogger.