আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল : গোলাম আযমসহ ৫ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল আজ

থিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থা। আজ সকালে এ তদন্ত প্রতিবেদন রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটরদের কাছে দাখিল করা হবে।মাওলানা নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আজ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ রয়েছে।


গতকাল সোমবার বিকালে তদন্ত সংস্থার বেইলি রোডের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা অনুযায়ী মাওলানা নিজামীসহ পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে ১ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য আছে। ওইদিন অধ্যাপক গোলাম আযমসহ জামায়াতের পাঁচ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়া হবে। অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৩৬০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হচ্ছে। তবে কেস ডায়রিতে ১০ হাজার পৃষ্ঠার ওপরে প্রতিবেদন রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালের সিডি, ডিভিডি, নিউজ কাটিং, গণহত্যা সংক্রান্ত ভিডিও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও আলবদর বাহিনীর প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য এবং তখনকার দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক পূর্বদেশ, দৈনিক পাকিস্তান ও দ্য ডেইলি অবজারভার পত্রিকার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর হান্নান খান। হান্নান আরও বলেন, অধ্যাপক গোলাম আজমের বিরুদ্ধে গত বছরের ১ আগস্ট তদন্ত শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা না থাকলেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনে গোলাম আজমকে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। হান্নান বলেন নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গত বছরের ২১ জুলাই থেকে তদন্ত শুরু করা হয়। চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। অন্য মামলায় তারা গ্রেফতার হলেও এ চারজনকে গত বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত ১ আগস্ট মাওলানা নিজামী ও মুজাহিদসহ দলের চার শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে ১ নভেম্বরের মধ্যে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করতে সরকার পক্ষের আইনজীবীদের নির্দেশ দেন স্থানীয়ভাবে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন আদালত জামায়াতের এ চার নেতার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ওই দিন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও তা দাখিল করতে পারেনি সরকার পক্ষ। আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে বিনা বিচারে ও বিনা অভিযোগে এক বছরের বেশি আটক রাখার বিধান না থাকলেও সরকার জামায়াতের চার শীর্ষ নেতাকে বেআইনিভাবে আটকে রেখেছে। এ বিষয়ে শুনানি করতে গেলে জামায়াত নেতাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের সঙ্গে সরকার পক্ষের আইনজীবীদের বিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শুনানি চলাকালে নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ওই দিন ধার্য থাকলেও সরকার পক্ষ অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেনি। সরকার পক্ষ থেকে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হলে ট্রাইব্যুনাল ১ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত শেষ করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ দেন।
গতকাল জামায়াত নেতাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম জানান, আজ মঙ্গলবার জামায়াতের ৪ নেতাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে। তাদের জামিন আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া আটক মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর তিনটি আবেদনের ওপরও শুনানি হবে।

No comments

Powered by Blogger.