রাজশাহীতে স্বামী-শাশুড়ির আগুনে ঝলসে গেল গৃহবধূর শরীর

রাজশাহী নগরীর নওদপাড়া এলাকায় গত রবিবার স্বামী-শাশুড়ির আগুনে দগ্ধ হয়েছে নাসরিন আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূ। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবধূর স্বামী আরিফুজ্জামান আরিফকে আটক করেছে পুলিশ। তবে গতকাল সোমবার পর্যন্ত থানায় এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করা হয়নি বলে জানা গেছে।চিকিৎসাধীন গৃহবধূ নাসরিন অভিযোগ করে জানান, সাত বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। কিন্তু গত তিন বছর থেকে যৌতুকের জন্য মাঝেমধ্যেই নাসরিনের ওপর নির্যাতন চালাত স্বামী আরিফ। এরপর আদালতে একটি মামলা করেন নাসরিন।


আদালত নাসরিন এবং তাঁদের তিন বছরের কন্যা মিমের খোরপোষ বাবদ এক লাখ টাকা জরিমানা প্রদান করেন। আরিফ আদালতের মাধ্যমে খোরপোষ বাবদ ৭৪ হাজার টাকা পরিশোধ করে নাসরিনকে তালাকও দেন। কিন্তু একমাত্র মেয়ে মিমের মুখের দিকে তাকিয়ে নাসরিন আবারও সংসার করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর গত রবিবার ওই মামলার দিন ধার্য থাকায় তাঁরা দুজনই একসঙ্গে আদালতে হাজিরা দিতে যান। দুপুরে আদালতে হারিজা দেওয়া শেষে আরিফ নাসরিনকে তাঁর পিতার বাড়িতে যেতে বলে। কিন্তু নাসরিন ওই দিন বিকেলে আবারও স্বামীর বাড়িতে যান। এ সময় আরিফ নাসরিনকে বাড়িতে উঠতে বাধা প্রদান করে এবং নাসরিনের শাশুড়ি আশা বেগম তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়। এরপর আরিফ নাসরিনের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে নাসরিনের শরীরের ৬০ ভাগ পুড়ে যায়। এরপর প্রতিবেশীরা নাসরিনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
নাসরিনের ভাই রনি সাংবাদিকদের জানান, তাঁর বোন নাসরিনের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। ডাক্তাররা তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। গতকাল রাতেই যেকোনো সময় নাসরিনকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলেও রনি জানান।
নগরীর শাহ মখদুম থানার ওসি সানাউল হক জানান, ঘটনার পরপরই গৃহবধূর স্বামী আরিফকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ না করায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.