খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড : ত্রিশ কোটি টাকার কাজ ভাগ করে নিয়েছে আ’লীগ নেতারা

খুলনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সমঝোতার মাধ্যমে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ ঠিকাদাররা শিডিউল কিনলেও জমা দিতে পারেননি। এজন্য সকাল থেকেই সংশ্লিষ্ট দফতরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডারদের পাহারায় বসানো হয়। তবে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শান্তিপূর্ণভাবে টেন্ডার জমা দেয়া হয়েছে দাবি করে দু-এক দিনের মধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হবে বলে জানান।


টেন্ডারে অংশ নিতে না পারা একাধিক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২-এর অধীনে ২১ গ্রুপের কাজের জন্য গত ২৯ সেপ্টেম্বর দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কাজের মধ্যে রয়েছে দাকোপের ৩১, ৩২, ৩৩নং পোল্ডার, বটিয়াঘাটার ৩০নং পোল্ডার ও আমিরপুর, ভাণ্ডারকোট ও বালিয়াডাঙ্গা, পাইকগাছার ১০, ১২, ১৬, ২৩নং পোল্ডার, নদীর তীর ও বেড়িবাঁধ সংরক্ষণ এবং দুটি স্লুইস গেট নির্মাণ।
গতকাল ছিল শিডিউল জমা দেয়ার শেষ দিন। এর আগে রোববার রাতে পাউবো ডিভিশন-২-এর অফিসসংলগ্ন গগনবাবু রোডের একটি ঠিকাদারি অফিসে ২১টি কাজ ভাগবাটোয়ারা করা হয়। কেসিসির এক জনপ্রতিনিধির ভাই এবং সদর থানা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা এ কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো ঠিকাদার যাতে শিডিউল জমা না দেন সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়। গতকাল সকাল থেকেই তারা পাউবো অফিসে পাহারা বসায়। সিন্ডিকেট-নির্ধারিত ঠিকাদারের বাইরে অন্য কাউকে অফিসের আশপাশে ভিড়তে দেয়া হয়নি। শিডিউল জমা দেয়ার শেষ সময় দুপুর ১২টার পর গতকালই টেন্ডার বাক্স খোলা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুত্ কুমার সাহা জানান, ২১ গ্রুপের কাজের জন্য ৭৪টি শিডিউল জমা পড়েছে। প্রতি গ্রুপে সর্বনিম্ন ২টি থেকে সর্বোচ্চ ৫টি শিডিউল জমা পড়ে। এর আগে জনতা ব্যাংক ঢাকার দিলকুশা শাখা এবং খুলনার সোনালী ব্যাংকের নিউমার্কেট শাখা ও রূপসা মার্কেট শাখায় প্রতি গ্রুপের টেন্ডারের জন্য ১৮টি করে শিডিউল বিক্রির জন্য দেয়া হয়। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে শিডিউল জমা পড়েছে। কোনো ঠিকাদার শিডিউল জমা দিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেননি। এ কাজে সিন্ডিকেট হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তিনি বলেন, জমা পড়া শিডিউল যাচাই-বাছাই করে দু-এক দিনের মধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.