পতনের বৃত্তেই ঘুরছে শেয়ারবাজার

তনের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারেনি শেয়ারবাজার। গতকাল আরো ৪০.৬৩ পয়েন্ট কমে ৫০৩৬.৫০ পয়েন্টে স্থির হয়েছে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক। কমে গেছে লেনদেনের পরিমাণও। কমেছে বেশির ভাগ কম্পানির শেয়ারের দাম।আগের দিন রবিবার এক দিনেই ডিএসইতে সূচকের পতন হয় ২৩১.৬৬ পয়েন্ট। এ দুই দিনের পতন এ সূচককে গিয়ে দাঁড়াল ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। এর আগে ২০১০ সালের ২০ জানুয়ারি ডিএসইর সূচক গতকালের কাছাকাছি অবস্থানে ছিল। সেদিন ডিএসইর সূচক ছিল ৪৯৯৮.৫৮ পয়েন্ট।


পরের দিন সূচক পাঁচ হাজারের ঘরে পেঁৗছে। ২১ জানুয়ারি ডিএসইর সূচক ছিল ৫০৯৫.২১-এ।ডিএসইতে অস্বাভাবিক গতিতে শেয়ারের দর বাড়তে থাকে ২০০৯ সালে। সে বছর ১৬ সেপ্টেম্বর দুই হাজারের ঘর ছেড়ে প্রথম ডিএসইর সূচক ৩০৪৪.১০ পয়েন্টে ওঠে। এর দেড় মাসের মধ্যে সূচক চার হাজারের ঘর অতিক্রম করে। ওই বছর ১৬ নভেম্বর সূচক ৪১৪৮.১১ পয়েন্টে পেঁৗছে। পরের বছর জানুয়ারিতে পাঁচ হাজারের ঘর ছুঁয়েছে। এরপর ঘোড়ার মতো দৌড়াতে থাকে শেয়ারবাজার। ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ৫ ডিসেম্বর ডিএসইর সূচক সর্বোচ্চ ৮৯১৮ পয়েন্টে ওঠে। এর পর শুরু হয় দরপতন। ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ দরপতনে গতকাল পর্যন্ত সূচক কমেছে ৩৮৮২ পয়েন্ট। সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া কিছু পদক্ষেপের বাজার মাঝেমধ্যে ঊর্ধ্বমুখী হলেও আবার ফিরে যাচ্ছে দরপতনের ধারায়।
টানা এ দরপতনের প্রতিবাদে আগের মতোই বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা ডিএসই ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। বাজার সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতিতে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, টানা দরপতনে দিন দিন আগের জায়গায় পেঁৗছে যাচ্ছে সূচক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক ও ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের সুদের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা। দরপতন ঠেকাতে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার মধ্যে ব্রোকারেজ কমিশন কমানোর বিষয়টি কার্যকর হয়েছে। বাকি পদক্ষেপগুলো খুব বেশি কাজ করেনি।
বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় গতকালের লেনদেন। লেনদেনের পাঁচ মিনিটের দিকে সূচক ২৫ পয়েন্ট কমে যায়। ১০ মিনিটের দিকে কমে ৩৫ পয়েন্ট। তবে এরপর ধীরে ধীরে সূচক বাড়তে থাকে। ২০ মিনিটের দিকে সূচক বাড়ে ৪১ পয়েন্ট। তবে এরপর সূচক বাড়ার হার কিছুটা কমতে থাকে। ২৫ মিনিটের দিকে সূচক বাড়ে ৩০ পয়েন্ট। প্রথম আধা ঘণ্টা শেষে সূচক আবার কমতে থাকে। তবে প্রথম ঘণ্টার পর সূচক কিছুটা বাড়লেও আবার নিম্নমুখী হতে থাকে, যা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
ডিএসইতে মোট ২৪৯টি কম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের চার কোটি ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৬১টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম কমেছে ১৬৩টির, বেড়েছে ৭৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির শেয়ার ও ইউনিটের দাম। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ারের আর্থিক পরিমাণ ছিল ২৯০ কোটি ৮৬ লাখ এক হাজার ৩৫০ টাকা। এটা আগের দিনের চেয়ে ৪০ কোটি ১৩ লাখ টাকা কম।

No comments

Powered by Blogger.