শেষ হলো লংমার্চ-রক্ত দিয়ে হলেও 'সুনেত্র' গ্যাসক্ষেত্র রক্ষা করা হবে

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির চার দিনব্যাপী লংমার্চ গতকাল শেষ দিনে সুনামগঞ্জের ধরমপাশায় 'সুনেত্র' গ্যাসক্ষেত্রে পেঁৗছায়। গতকাল সোমবার সকালে নেত্রকোনা থেকে রওনা দিয়ে বিকেল ৪টায় এখানে এসে পেঁৗছায় লংমার্চ। পথে নেত্রকোনার বারহাট্টা ও মোহনগঞ্জে পথসভা করে লংমার্চের উদ্যোক্তা কমিটি। জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা পথসভায় বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, আর কোনো পিএসসি (উৎপাদন বণ্টন চুক্তি) নয়। বিদেশি কম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল করতে হবে। ফুলবাড়ী চুক্তিসহ জাতীয় কমিটির সাত দফা মেনে নিতে হবে।


বিকেল সাড়ে ৪টায় সুনেত্র গ্যাসক্ষেত্রসংলগ্ন বাদশাগঞ্জ পাবলিক হাই স্কুল মাঠে জনসভা করে জাতীয় কমিটি। তৌহিদুল ইসলাম কবিরের সভাপতিত্বে বিশাল জনসভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, 'মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন করে যে সংবিধান রচনা করেছিলাম সেই সংবিধানে বলা আছে, জাতীয় সম্পদের মালিক জনগণ। কিন্তু অতীতে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন ও বর্তমানে যাঁরা ক্ষমতায় আছেন তাঁরা বিদেশিদের হাতে এ সম্পদ তুলে দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছেন। এটা বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।' ফুলবাড়ীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তিনজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আমরা জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনে বিজয় অর্জন করেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা করেছিলাম।'
জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, 'এ অঞ্চলের গ্যাস উত্তোলন করে এই এলাকার ঘরে ঘরে দিতে হবে। শিল্প ও কৃষি খাতের অগ্রগতিতে এবং এ অঞ্চলে সার কারখানা ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলে এই গ্যাস ব্যবহার করতে হবে। অতীতে যেমন করে আমরা বিবিয়ানাতে ভারতে গ্যাস রপ্তানির নামে পাচার রোধ করেছিলাম, এবারও এ অঞ্চলের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সুনেত্রর গ্যাস বিদেশিদের দেওয়া বা তাদের মাধ্যমে উৎপাদনের অপতৎপরতা রুখব।'
মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ লংমার্চে অংশগ্রহণকারী সব সংগঠনের নেতাদের ধন্যবাদ জানান। এলাকাবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'দেশের সম্পদের লুটপাট বন্ধের জন্য সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সরকার জনগণের স্বার্থ বিপন্ন করে চুক্তি করেছে। এসব চুক্তির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। আমাদের জাতীয় সংস্থা বাপেঙ্ যদি গ্যাস উত্তোলন করে তাহলে অনেক কম খরচে করতে পারে। তাদের দ্বারা কোনো অগি্নকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। বাপেঙ্ আমাদের দেশের সম্পদ।'
জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আরো বলেন, "যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে, নির্লজ্জভাবে তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির তাঁবেদারে পরিণত হয়েছে। আমাদের জাতীয় সংস্থা বাপেঙ্ যদি 'সুনেত্র' ও 'রশিদপুর' গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে তাহলে এ অঞ্চলের মানুষ কম খরচে সার-বিদ্যুৎসহ জ্বালানি সুবিধা পাবে। এখানে যে পরিমাণ গ্যাস মজুদ আছে তাতে আমাদের চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত থাকবে।"

No comments

Powered by Blogger.