নৌকা নিবন্ধন ও জেলে কার্ড চালু করা জরুরি-জেলে নৌকায় ডাকাতি

ক বছরে ভোলায় মেঘনা নদীতে নৌ-ডাকাতির যে পরিসংখ্যান তা আঁতকে ওঠার মতো। এসব ঘটনায় জান ও মাল, দুই দিক থেকেই ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের। মেঘনা নদীতে মাছ শিকার ও মাছের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে ভোলার বিভিন্ন উপজেলার অজস্র পরিবার। মাছ ধরার নৌকায় অব্যাহত ডাকাতির ঘটনা এই ব্যবসার ওপর বড় ধরনের আঘাত হিসেবে দেখা দিয়েছে। চলতি বছর ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় জেলে


নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৯১০টি। জলদস্যুদের হাতে এসব ঘটনায় মারা গেছে ছয়জন জেলে। জলদস্যুরা ডাকাতি করে জেলেদের জিন্মি করে নৌকা ও মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে যায়। জলদস্যুদের হাত থেকে নৌকা, জেলে ও মাছ ধরার সরঞ্জাম ছাড়াতে অথবা নতুন করে নৌকা, জাল ও মাছ ধরার সরঞ্জাম কিনতে বিপুল অঙ্কের টাকা গুনতে হয় মাছ ব্যবসায়ীদের। এক হিসাব অনুযায়ী, এ ধরনের ডাকাতির ঘটনার পর একজন মাছ ব্যবসায়ীর খরচ হয় প্রায় সাত লাখ টাকা। প্রথম আলোর বিশাল বাংলা পাতায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলে নৌকায় ডাকাতির কারণে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬৮ কোটি টাকা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে মৎস্য ব্যবসা টিকিয়ে রাখা ভোলার ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
জলদস্যুদের শিকারে পরিণত অসহায় ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছেও যান না, টাকা-পয়াসা খরচ করে নৌকা উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, প্রশাসনকে জানালে বরং নৌকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এই পরিস্থিতির দায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।
আমরা মনে করি, বর্তমান অবস্থায় প্রশাসন ও পুলিশসহ কোস্টগার্ড বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। নদীতে এসব বাহিনীর টহল জোরদার করা গেলে নিশ্চিতভাবেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি যদি মাছ ধরার নৌকাগুলো নিবন্ধিত করা হয়, জেলেদের যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলে কার্ড দেওয়া হয় তবে জলদস্যুদের শনাক্ত করা ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

No comments

Powered by Blogger.