বিশ্ব ডাক দিবস-বটগাছে ডাকবাক্স!

মকালে শনিবার বটগাছে ঝুলিয়ে রাখা একটি ডাকবাক্সের ছবি ছাপা হয়েছে। অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগেও গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের নিভৃত পল্লী বকশিগঞ্জে ডাক বিভাগের সেবার আয়োজন রয়েছে_ বিশ্ব ডাক দিবসের আগের দিনে প্রকাশিত এ তথ্য উৎসাহব্যঞ্জকই বলতে হয়। মাসে এ পোস্ট অফিসে শ'খানেক চিঠি আসে। মানিঅর্ডার আসে ১২-১৩টা। চিঠির মধ্যে ব্যক্তিগত চিঠি প্রায় নেই বললেই চলে_ চাকরির


ইন্টারভিউ কার্ড ও নিয়োগপত্র এবং আদালতের নির্দেশই বেশি। কিশোর কবি সুকান্ত প্রায় সাত দশক আগে রানার কবিতায় লিখেছিলেন :'কত চিঠি লেখে লোকে/কত সুখে, প্রেমে, আবেগে, স্মৃতিতে, কত দুঃখে ও শোকে...'। এখন ব্যক্তিগত চিঠির স্থান গ্রহণ করেছে মোবাইল ফোন ও ই-মেইল। আধুনিক প্রযুক্তি সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মুহূর্তের মধ্যে দেশে তো বটেই, বিশ্বের নানা প্রান্তে পেঁৗছে যাচ্ছে খবর। গ্রামের বটগাছে অনিরাপদ স্থানে ডাকবাক্স ঝুলিয়ে রাখে যে ডাক বিভাগ তার ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন তাদের পড়ে না। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে কুরিয়ার সার্ভিস জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের সেবা এখন শহর ছাড়িয়ে গ্রাম পর্যন্ত পেঁৗছতে শুরু করেছে। তারা চার্জ বেশি নিচ্ছে, কিন্তু মিলছে অপেক্ষাকৃত ভালো সেবা। ডাক বিভাগের সাধ্য নেই তাদের সঙ্গে পাল্লা দেয়। সমকালে 'বটগাছে ডাকবাক্স' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই উপজেলার একটি শাখা অফিসের রানার নুরুজ্জামান আকন্দ দুই যুগ ধরে ডাক বিভাগে কাজ করে এখন মাসে সাকুল্যে বেতন-ভাতা পান মাত্র ৯৯০ টাকা। এ অঙ্কে পেঁৗছতে তার ইনক্রিমেন্ট হয়েছে দশ বার! গ্রামের অনেক শাখা পোস্ট অফিসের নিজস্ব ঘর নেই। মুদি দোকানে কিংবা কারও বাড়িতে চালাতে হয় কাজ। ব্যক্তিগত চিঠি যেহেতু কমে গেছে, তাই এনভেলপ ও পোস্টকার্ডের বিক্রিও তেমন হওয়ার কথা নয়। তাছাড়া বটগাছে ঝুলিয়ে রাখা ডাকবাক্সে চিঠি ফেলা হলে তা নির্দিষ্ট গন্তব্যে যে পেঁৗছবে তার নিশ্চয়তাই বা কে দেবে? বিশ্ব ডাক দিবসকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অন্যরা কি এসব সমস্যা নিয়ে কিছু ভেবেছেন?
 

No comments

Powered by Blogger.