এবার সিরিয়ায় আত্মঘাতী বোমা নিহত ৪০, আহত ১৫০

রকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে গতকাল শুক্রবার পর পর দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সেনা ও বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। বেসামরিক নাগরিকদের সংখ্যাই বেশি। খবর : বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি। গত ৩০ বছরের ইতিহাসে সিরিয়ায় এটাই প্রথম আত্মঘাতী বোমা হামলা। শুক্রবার জুমার পর বিরোধীরা বিক্ষোভ করার আয়োজন করছিল। এমন সময় এ


বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়েছে, এ হামলায় বেশ কয়েকজন সেনা ও বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে এ হামলার জন্য আল কায়দার সশস্ত্র গ্রুপ এর জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, বিস্ফোরক বহনকারী আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী দামেস্কের কেফার সুসা জেলার গোয়েন্দা এবং নিরাপত্তা সংস্থার ভবনগুলো টার্গেট করেছিল। এ হামলার জন্য বিক্ষোভকারীদের দায়ী করে দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মেকদাদ বলেন, 'আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আমাদের বেসামরিক নাগরিক ও সেনাদের হত্যা করছে।'
এ হামলায় ৪০ জন নিহত ও ১৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আরব লীগ পর্যবেক্ষকরা প্রবেশের একদিনের মধ্যে আল কায়দার সন্ত্রাসীরা এ বোমা হামলা 'উপহার' দিয়েছে। আমরা তাদের নিরাপত্তায় সচেষ্ট থাকব।
বিদ্রোহীদের দাবি, আরব লীগের কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করতে সরকার নিজেই এ হামলার পরিকল্পনা করেছে। অন্যদিকে আরব লীগের পর্যবেক্ষক সামির সাইফ আল ইয়াজল বলেছেন, এখানে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সবাই শান্ত থাকুন। পর্যবেক্ষকরা শনি-রোববার থেকে তাদের কাজ শুরু করবেন বলে জানান তিনি। আজ শনিবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ায়িদ মুলায়েমের সঙ্গে তার দেখা হওয়ার কথা।
খবরে জানানো হয়, প্রথমে এক হামলাকারী বিস্ফোরকসহ গাড়ি নিয়ে নিরাপত্তা সংস্থার পরিচালকের দফতরে ঢুকে পড়ে এবং বিস্ফোরণ ঘটায়। আরেক বোমা হামলকারী সামরিক গোয়েন্দা সদর দফতরের সামনে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায়। ব্রিটেনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ওই স্থানে বোমা হামলার পর গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আরব লীগের কর্মকর্তারা সিরিয়ায় পেঁৗছানোর একদিন পরই এ হামলার ঘটনা ঘটল। হামলার পরে পুরো এলাকা রক্তাক্ত হয়ে পড়েছে। আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সে মৃতদেহ তোলা হচ্ছে। আশপাশের কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী এক সাংবাদিক বিবিসিকে জানান, বিস্ফোরণে আশপাশের ভবনগুলো কেঁপে ওঠে। এটা ছিল খুবই ভয়ানক। সিরিয়ায় গত মার্চ থেকে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এ সুযোগে কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশটিতে তৎপর রয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে। এর আগে ১৯৮০ সালে দেশটিতে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় বাশার আল আসাদের বাবা হাফিজ আল আসাদ ক্ষমতায় ছিলেন। মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সংঘর্ষ চলার সময়ে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
সৌদি আরব সিরিয়ায় তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিতে পারে। দেশটির আল ওয়াতান সংবাদপত্র একথা জানিয়েছে। সৌদি সরকারি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, দেশটিতে চলমান বিক্ষোভ ও সহিংসতার কারণে কূটনীতিকের সংখ্যা কমিয়ে এনেছে সৌদি আরব। কিন্তু সহিংসতা অব্যাহত থাকায় নিজেদের নাগরিকদের নিরাপত্তায় দূতাবাস বন্ধ করে দিতে পারে সৌদি সরকার।

No comments

Powered by Blogger.