শুটার তৈরির উদ্যোগ...

জিন্স প্যান্টের সঙ্গে ফুলহাতা শার্ট, রাইফেল কাঁধে শুটিং রেঞ্জ ছেড়ে আসা সানজিদুর রহমান নিয়ন বিশ্বাসের চোখ-মুখে স্বপ্নের আভা! পাবনার এ টিনএজারের পোশাক ঠিক জাতীয় প্রতিযোগিতার সঙ্গে যায় না! আইএফআইসি ব্যাংক জাতীয় এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপে শুটিং ইউনিফর্মের মতো অনেক আইন ছিল শিথিল। 'তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে উত্তরণের প্রথম ধাপ। এখানে আমরা প্রতিভা খুঁজে বের করার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। সে কারণেই কিছু কিছু


ক্ষেত্রে নিয়মটা শিথিল'_ বলেছেন শুটিং ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ইশতিয়াক আহমেদ বাবলু। সর্বোচ্চ পর্যায়ে জাতীয় দলের পরের ধাপে আছে 'বি' দল। শুটার সংকটের কারণে নৈপুণ্যের গ্রাফ নিম্নমুখী হওয়ার পরও ঘুরে-ফিরে হাতেগোনা কয়েকজনকেই জাতীয় দলে দেখা যায়। এ অবস্থায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতেই 'সি' দল গড়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন ফেডারেশন কর্মকর্তারা। গত বছর ২০ অক্টোবর ৬০ ক্লাবে ১২০টি রাইফেল প্রদান তৃতীয় দল গড়ার উদ্যোগেরই অংশ।
৬০ ক্লাব থেকে দু'জন করে শুটার পাঠানো বাধ্যতামূলক করা হলেও ফেডারেশনের ডাকে সাড়া দেয়নি সাতটি ক্লাব। তাই এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপের ইয়ুথ বিভাগে ১২০ প্রতিযোগীর পরিবর্তে অংশগ্রহণ করেছেন ১০৫ জন। ক্ষুদে শুটারদের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ পয়েন্ট ছিল ৩০০। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ছেলেদের বিভাগে সর্বোচ্চ (২৩০) স্কোর করেছেন সাভার সেনা শুটিং ক্লাবের আবদুল্লাহ আল রাহিন। মেয়েদের বিভাগে সর্বোচ্চ (২২৩) স্কোর ঝিনাইদহ রাইফেল ক্লাবের শারমিন আক্তার শিলার। ৩০০-র মধ্যে ২৩০ বা ২২৩ আহামরি কোনো স্কোর নয়; তবে স্বল্প প্রস্তুতি এবং শুটিং ইউনিফর্ম ছাড়া এমন স্কোরকে আকাশচুম্বি বলছেন সাবেক শুটাররা। তাদেরই একজন রিজিয়া নওশাদ জোয়েল। 'বাচ্চাদের মধ্যে প্রতিভা আছে, স্কোরই এর প্রমাণ। এখানে প্রতিভার ঘাটতি নেই। প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যার'_ বলেছেন আশির দশকের শুরুতে ক্যারিয়ার শুরু করা সাবেক এ শুটার, যিনি আসরটিতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯৯০ অকল্যান্ড কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণজয়ী শুটার আতিকুর রহমান বলেছেন, 'শুটিংয়ে আগ্রহটা খুবই জরুরি। এখানে যারা এসেছে, তাদের আগ্রহ কিন্তু বিস্ময়কর! আমাদের দুর্ভাগ্যে যে, আর্থিক অসঙ্গতির ফলে উদীয়মানদের পরিচর্যার কাজটা কঠিন। এখানে যারা এসেছে তাদের সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে চার-পাঁচ বছর পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে ভিন্ন চেহারায় দেখা যাবে।'
রাইফেল প্রদান, ঢাকায় এক সপ্তাহের অনুশীলন, সর্বশেষ আয়োজিত হলো প্রতিযোগিতা। আগামী প্রজন্মের শুটারদের নিয়ে কার্যক্রম কিন্তু এখানেই থেমে থাকছে না। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক জানান, 'পুরুষ ও মহিলা বিভাগ থেকে দশজন করে শুটার নিয়ে এক মাসের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করছি আমরা। সেখান থেকে বাছাই করে গড়া হবে 'সি' দল।' কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, 'এটি ধরে রাখতে পারলে নবীন শুটারদের উত্থানে অভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে।'

No comments

Powered by Blogger.