ড্র ম্যাচে জিতলেন টেরি

কে তো ‘ডার্বি’র উত্তাপ, তার ওপর খেলাটা প্রতিপক্ষের মাঠে। শুরু থেকেই তাই টটেনহাম দর্শকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলেন জন টেরি। বিদ্রূপাত্মক স্লোগান, দুয়োধ্বনি সবই চলল ম্যাচজুড়ে। আশ্চর্য, টেরি তো শুধু চেলসির নন; ইংল্যান্ড দলেরও অধিনায়ক! সেসবে থোড়াই কেয়ার স্পারস সমর্থকদের। বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ মাথায় নিয়ে খেলতে নামা টেরিকে উত্ত্যক্ত করার কোনো সুযোগই হাতছাড়া করেনি তারা।


তবে পরশু ১-১ ড্রয়ে শেষ হওয়া লন্ডনের দুই ক্লাবের এই জমজমাট লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত টেরিই জিতলেন। যোগ্য অধিনায়কের মতো যোগ করা সময়ে বাঁচিয়ে দিলেন প্রায় নিশ্চিত গোল। শুধু তা-ই নয়, ম্যাচ শেষে চলে গেলেন দর্শকসারিতে। হুইলচেয়ারে বসে জীবনের শেষ দিনগুলো গুনতে থাকা এক বৃদ্ধাকে দিলেন বড়দিনের উপহার—তাঁর নিজের জার্সি। নাঙা আদুল গায়ে শুধু বাহুতে ছিল বাহুবন্ধনী। সেখানে লেখা ‘ক্যাপ্টেন’ শব্দটা কেমন জ্বলজ্বল করছিল! টেরির এই সৌজন্যবোধে মুগ্ধ হয়ে চেলসি সমর্থকেরা করতালি দিলেন। সেই করতালির মিছিলে যোগ দিলেন টটেনহামেরও অনেকেই, খানিকক্ষণ আগে এদেরই কেউ কেউ যোগ দিয়েছিলেন বিদ্রূপের কোরাসে।
ড্র হলেও খেলাটি জমেছিল বেশ। ৮ মিনিটে টটেনহামকে এগিয়ে দেন ইমানুয়েল আদেবায়োর। প্রথম ২০ মিনিট ভালোই দাপট দেখাচ্ছিল স্বাগতিকেরা। কিন্তু ২৩ মিনিটে ড্যানিয়েল স্টুরিজের গোলে চেলসি সমতা ফেরাতেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। দুই দলই খেলতে থাকে আক্রমণাত্মক ফুটবল। দুই দলই একের পর এক গোলপোস্টে আক্রমণ চালিয়েছে। টটেনহামের গোলপ্রচেষ্টা ১৬টি, চেলসির ২২। এখান থেকেও বোঝা যায়, কেমন রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে ম্যাচটি। দুই দলই একাধিক সুযোগ নষ্ট করায় গোল শেষ পর্যন্ত মাত্র দুটি।
এই ম্যাচ শেষে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকল টটেনহাম, ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে চারে চেলসি। শীর্ষে থাকা ম্যান সিটির পয়েন্ট ৪৪। অনেক ব্যবধান। তার পরও শিরোপার স্বপ্ন এখনো ছাড়ছেন না চেলসি কোচ আন্দ্রে ভিলাস-বোয়াস, ‘আমাদের শিরোপা সম্ভাবনার কথা যদি বলেন, আমি বলব এখনো ভালো সুযোগ আছে। আজকের এই ড্রয়ে আমাদের ক্ষতিই হলো। তবে আমরা এখনো ভালোমতোই লড়াইয়ে আছি। পরের দুটি ম্যাচই আমাদের মাঠে। ওই দুই ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট পেলে আমরা ভালোমতোই শিরোপা লড়াইয়ে চলে আসব।’ এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.