রুয়ান্ডাকে আর সামরিক সহায়তা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

রুয়ান্ডাকে সামরিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রুয়ান্ডা প্রতিবেশী দেশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে চলমান সহিংসতায় মদদ দিচ্ছে বলে সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত শনিবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় ওয়াশিংটন। রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে কঙ্গোর সহিংসতায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ বহু পুরনো।


তা সত্ত্বেও তাদের প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন অব্যাহত ছিল। ফলে ওয়াশিংটনের সহায়তা বন্ধের এ সিদ্ধান্তকে তাদের রুয়ান্ডামুখী নীতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
রুয়ান্ডা অবশ্য বেশ আগেই জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে। তারা জানিয়েছে, এ সপ্তাহেই এ প্রতিবেদনের জবাব দেওয়া হবে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কঙ্গোর বিদ্রোহীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণসহ নানা সহায়তা দিচ্ছে। তারা এম২৩ গ্রুপকেও সহায়তা দিয়েছে। এই বিদ্রোহী গ্রুপ কঙ্গোর সবচেয়ে বড় অঞ্চল উত্তর কিভুর একটা বড় অংশ দখল করে নেয়। গত এপ্রিল থেকে তাদের কারণেই প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র হিলারি ফুলার রেনের গত শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, 'কঙ্গো প্রসঙ্গে রুয়ান্ডার ব্যাপারে যে অভিযোগ রয়েছে_তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ফলে সামরিক সহায়তা হিসেবে যে দুই লাখ ডলার তাদের পাওয়ার কথা, তা আমরা আর এ বছর দিচ্ছি না। এই তহবিল অন্য কোনো দেশকে বরাদ্দ দেওয়া হবে।'
তবে রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইস মুশিকিওয়াবো জানিয়েছেন, এ সপ্তাহেই জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবেন তাঁরা। তিনি জানান, জাতিসংঘের সব অভিযোগের জবাব দেওয়া হবে। তা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য মিত্র ও সহযোগীদেরও জানানো হবে।
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও রুয়ান্ডায় মধ্যে জাতিগত সহিংসতা চলছে বহু বছর ধরে। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি রুয়ান্ডায় গণহত্যা শুরুর পর ১০ লাখেরও বেশি হুতু জাতিগোষ্ঠীর লোক সীমান্ত পেরিয়ে কঙ্গোয় আশ্রয় নেয়। এতে আট লাখেরও বেশি লোক নিহত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল বন্ধের বিষয়টিকে ওয়াশিংটনের রুয়ান্ডা নীতির পরিবর্তন হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। স্বতন্ত্র কঙ্গো বিশেষজ্ঞ জ্যাসন স্টির্নস বলেন, 'রুয়ান্ডা সরকারের দীর্ঘ দিনের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপ প্রতীকী হলেও তাদের অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে।' সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.