ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির শুনানি হয়নি-আদিবাসীদের মধ্যে স্বস্তি এলেও শঙ্কা কাটেনি

গতকাল রোববার পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের নির্ধারিত ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় আদিবাসীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এলেও খাদেমুল ইসলামকে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগের ব্যাপারে এখনো শঙ্কা কাটেনি।
গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগের ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ পাঠানোর বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন সংগঠন থেকে প্রতিবাদ ওঠে। সে কারণে ওই সব সংগঠন ও আদিবাসীদের দৃষ্টি ছিল গতকালের শুনানি অনুষ্ঠানের দিকে। এর আগে গত ১০ জুন খাগড়াছড়ি শহরের পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শুনানি শেষে গতকাল রোববার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী। পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক যশেশ্বর চাকমা বলেন, ‘নতুন কমিশন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত নয় যে খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী একমাত্র তাঁর নামই চেয়ারম্যান হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।’ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা বলেন, ‘আজ (রোববার) শুনানি না হওয়াটা ইতিবাচক। সেটাই আমরা দাবি জানিয়ে আসছি। তবে খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে দ্বিতীয় মেয়াদে কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হলে আমরা কোনো অবস্থাতে তা মেনে নেব না। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের মতামতের বিরুদ্ধে যদি তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী থাকতে হবে।’
গতকাল সকালে পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। দেখা গেছে, কর্মচারীরা বসে আসেন। বিরোধ নিষ্পত্তির শুনানিতে কয়েকজন বাদী-বিবাদী এলেও তাঁদের চলে যেতে বলা হয়। পরে কমিশনের রেজিস্ট্রার মো. আবু হানিফের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মেয়াদ শেষ হওয়ায় কমিশন এখন চেয়ারম্যানশূন্য। আর চেয়ারম্যান না থাকলে কমিশনের অস্তিত্বই থাকে না। তিনি আরও বলেন, পরবর্তী কমিশন গঠিত হলে সেই কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে এসব শুনানির কী হবে। তারাই ঠিক করবে কমিশনের পরবর্তী কার্যক্রম। এ ব্যাপারে বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.