বিকশিত হোক শিশুর মন by মেহেরুন নেছা রুমা

একটি শিশু যখন কাউকে স্কুলে যেতে দেখে তখন তার মধ্যেও স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ জেগে ওঠে। কিন্তু এখনকার অভিভাবকরা এই আগ্রহ জেগে ওঠার আগেই বাচ্চাগুলোকে স্কুল নামক বদ্ধ খাঁচায় আবদ্ধ করে রেখে আসে যেন তার সন্তানটি অন্যদের তুলনায় একটু আগেই সব শিখে যায়।


স্কুলগুলোর পরিবেশ যদি শিশুদের অনুকূলে না থাকে তাহলে দেখা যায় সময় আসার আগেই শিশুদের মধ্যে স্কুলভীতি জেগে ওঠে। পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ, সহপাঠীদের আচরণ, শিক্ষকদের আচরণও কখনও কখনও বাচ্চাদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। কোমলমতি শিশুদের স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ কমে যাওয়ার এটি একটি কারণ হতে পারে।
পরিবারই শিশুর প্রথম শিক্ষালয়। অথচ এখন অনেককে দেখা যায়, পরিবারে কিছু শেখানোর আগেই বাচ্চাকে কিন্ডারগার্টেন কিংবা কোচিংয়ে ভর্তি করিয়ে দিচ্ছেন। ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। পারিবারিক সম্পর্কগুলো অনেক সময়ই ওদের কাছে গুরুত্ব পায় না। বহির্জগতে শিশু অসহায় হয়ে ওঠে, নিজেকে গুটিয়ে রাখে। অনেক শিশুই মানসিক সংকীর্ণতা আর বিষণ্নতায় ভোগে। নিজেকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়। অত্যধিক মানসিক চাপে কোনো কোনো শিশুর আচরণে প্রতিবন্ধকতার ভাব চলে আসে। সব শিশুর মেধা এক নয়। অথচ আমরা মনে করি আর একজনের বাচ্চা পারলে আমার বাচ্চাকেও পারতে হবে।
বর্তমানে প্রথম শ্রেণীর ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি শিশুদের জন্য কিছুটা স্বস্তির বিষয় হিসেবে উপনীত হয়েছে। এ রকম আরও কিছু পদক্ষেপ সরকারের নেওয়া উচিত যাতে শিশুরা বেড়ে ওঠে স্বাভাবিকভাবে। শহর এবং গ্রামে একই শিক্ষা পদ্ধতি চালু থাকা উচিত। যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য কমে আসে। কিন্ডারগার্টেনগুলোর ওপর সরকারের বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন।
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা
 

No comments

Powered by Blogger.