গাজীপুর-৪ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ২২ কিংবা ২৩ আগস্ট- সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোট

আগামী ২২ অথবা ২৩ আগস্ট গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর ভোট গ্রহণ করা হবে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। তবে তফসিল ঘোষণার আগে ১৬ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসবে ইসি।


এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ এখন পর্যন্ত ২৭ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর রাখা হয়েছে। কমিশনের সুবিধামত এর যে কোন একদিন ভোটগ্রহণ করা হবে ।
রবিবার ইসি সচিবালয়ে কমিশনের বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, আগস্টের ২২/২৩ তারিখে গাজীপুর-৪ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে এতে কমিশনের কিছু করার থাকবে না। তবে আমরা আশা কণ্ডি সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তফসিল ঘোষণার আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনী এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হতে তফসিল ঘোষণার আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, গাজীপুর-৪ আসনে উপনির্বাচনের সার্বিক বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, গাজীপুর-৪ আসনে উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে ইসি। উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সব দলকে আস্থায় রাখা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সম্পন্ন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিভাবে কাজ করবে, স্ট্রাইকিং ফোর্সের দায়িত্বে র‌্যাব নাকি বিজিবি, পেশিশক্তির দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে গোপন ক্যামেরা ও নীরব ভিজিল্যান্স টিম, কালোটাকার খেলা বন্ধে কোন্্ প্রযুক্তি কাজে লাগানো যায়; সেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। তফসিলের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে নির্বাচনের বেশ কিছু প্রাথমিক প্রস্তুতিমূলক কাজ এগিয়ে রাখার পরিকল্পনা করছে ইসি। এ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছেÑ প্রার্থী বাছাইকালে ঋণখেলাপী সংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তির জন্য ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চাহিদাপত্র (ডিও) প্রদান, নির্বাচনী সময়সূচী জারি থেকে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত সময়কালে জেলায় কর্মরত কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলি না করা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী বা সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ভিআইপিদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ না নেয়া এবং নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় নির্বাচনী কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন-১৯৯১ অনুসরণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ডিও প্রদান, ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন, দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষকদের নির্বাচনী পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা, প্রতীক বরাদ্দ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স প্রস্তুত, ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সামারি ট্রায়ালের জন্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ব্যালট পেপারের নিরাপত্তা, সিল সংরক্ষণ ও গোপনীয়তা রক্ষা, যানবাহন বন্ধের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রধানদের নিয়ে সমন্বয়সভা ও নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষক নিয়োগ ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নির্বাচিত গাজীপুর- ৪ আসনের সংসদ সদস্য সোহেল তাজ গত ৭ জুলাই সশরীরে উপস্থিত হয়ে স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের কাছে সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর একদিন পর গাজীপুর-৪ আসন শূন্য হওয়ার বিষয়টি জাতীয় সংসদকে অবহিত করেন স্পীকার।
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যেই এ উপনির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আসন শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্নের বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.