ডিসেম্বরেই পুরোদমে চালু হচ্ছে বন্দরের সিটিএমএস পদ্ধতি by আসিফ সিদ্দিকী

ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পুরোদমে কনটেইনার টার্মিনাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিটিএমএস) চালুর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে শুধু আমদানি কনটেইনার দিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে এই কাজ চলছে। সিটিএমএস বাস্তবায়নের জটিলতা দূর করতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্র্ডের চেয়ারম্যান এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


সিদ্ধান্তগুলোর অন্যতম হচ্ছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরিতে আমদানিকরদের ফুল কনটেইনার লোড (এফসিএল) বেসরকারি আইসিডি থেকে ডেলিভারি দেওয়া এবং আরো ৯টি আমদানিপণ্য সরাসরি আইসিডি থেকে ডেলিভারি দেওয়া; বর্তমানে ১৭টি আমদানিপণ্য আইসিডি থেকে খালাস করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ৫ ডিসেম্বর সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছে।
চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকার করে বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) গোলাম সারোয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মন্ত্রণালয় থেকে যত দ্রুত লিখিত অনুমোদন আসবে তত দ্রুত সিটিএমএস বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।' তিনি বলেন, পুরোদমে সিটিএমএস বাস্তবায়নের জন্য আট হাজার একক রপ্তানি কনটেইনার ও ১০ হাজার একক আমদানি কনটেইনার রাখার জায়গার দরকার হবে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই জায়গা খালি করা দরকার।'
বিগত ১০ অক্টোবর থেকে শুধু আমদানি কনটেইনার দিয়ে বন্দরের বহুল আলোচিত সিটিএমএস পদ্ধতির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর পণ্য জাহাজীকরণের কাট অফ টাইম নিয়ে জটিলতার কারণে রপ্তানি কনটেইনার এই পদ্ধতির আওতায় আসেনি। তাদের কারণে চার দফা পেছানো হয়েছে সিটিএমএস কার্যক্রম। সর্বশেষ গত মাসের শেষ সপ্তাহে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা সিটিএমএস পদ্ধতিতে রপ্তানি কনটেইনার অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে একমত হন। কিন্তু তাঁদের দাবি ছিল জাহাজ জেটিতে বার্থিং নেওয়ার দিন কনটেইনার রাত ৮টার মধ্যেই বন্দরে নেওয়ার সুবিধা দেওয়া। বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম চেম্বারের সঙ্গে বৈঠকে বসে সেই দাবিও মেনে নিয়েছে।
সিটিএমএস বাস্তবায়নে এখন বন্দরের বড় সমস্যা হচ্ছে এফসিএল কনটেইনার বন্দরের বদলে আইসিডি থেকে ডেলিভারি দেওয়া। সেই সঙ্গে নিলাম পণ্য বন্দর থেকে বের করে দেওয়া। বন্দরের পরিসংখ্যান মতে, নভেম্বর পর্যন্ত বন্দরের ইয়ার্ড ও শেডে এক হাজার ৫৯১টি গাড়ি, ২১ হাজার ৩৮৪ একক এলসিএল কনটেইনার, এক হাজার ৭৩৭ একক এফসিএল কনটেইনার রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে সিটিএমএস পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলে বন্দরের কনটেইনার ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়বে। বন্দরে আগত ও ছেড়ে যাওয়া জাহাজগুলোর কনটেইনার জাহাজ থেকে দ্রুত খালাস, স্টেকিং, ট্রেকিং ও গেট কন্ট্রোল ও অন-লাইনে বিল পরিশোধ করাসহ কার্যক্রম সহজ হবে।

No comments

Powered by Blogger.