প্রতারণা ঠেকাতে এসইসি নজরদারি জোরদার করেছে : চেয়ারম্যান

সূচকের উত্থান-পতন নয়, বরং কেউ নিয়ম ভঙ্গ করছে কি না তা দেখাই এসইসির কাজ বলে জানিয়েছেন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। বিনিয়োগকারীরা যাতে আর প্রতারিত না হন সে জন্য কমিশনের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। বাজারে আস্থা ফেরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম)


উদ্যোগে বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড. খায়রুল বলেন, 'বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা ব্যাংক, বীমা খাতের টাকা বিনিয়োগের কথা বলেছি। যাতে তাদের দেখে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসে। শিগগিরই স্থিতিশীল বাজার উপহার দিতে পারব।' তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কমিশন ১৯৬৯ এবং ১৯৯৩ আইন পরিবর্তন করেছে। ইনসাইডার ট্রেডিং যাতে না হয়, বিনিয়োগকারীরা যাতে প্রতারিত না হন, কম্পানিগুলো যেন ফাঁকি দিয়ে টাকা তুলে নিতে না পারে সে বিষয়ে কমিশন সজাগ আছে। এ ছাড়া কোনো কম্পানি যাতে অতি মূল্যায়িত হয়ে বাজারে না আসে সেটিও দেখছে এসইসি।
এসইসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, আস্থা মুখের কথায় আসবে না। এ জন্য আইনের সঠিক প্রয়োগ, বিনিয়োগকারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও তারল্য সরবরাহ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া আস্থা আরো অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, এর মধ্যে রয়েছে, এঙ্সে টু দ্য ইনফরমেশন, অধিকার পাওয়ার মতো অভিযোগ করার জায়গা, অভিযোগের সুরাহা, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয় এবং সরকারের উদ্যোগ। এগুলো করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
ড. খায়রুল হোসেন বলেন, বিনিয়োগকারীরা বাজারে গুজবনির্ভর বিনিয়োগ করে আজ দিকভ্রান্ত। এ রকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেদিকে নজর রয়েছে বর্তমান কমিশনের। এ জন্য কমিশনের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। আর নতুন সার্ভিলেন্স সিস্টেম চালু করা হলে অনিয়মের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। তিনি আরো বলেন, 'চাহিদার সঙ্গে জোগানের পার্থক্যের কারণেই বাজার অস্থির হয়েছিল। এ ছাড়া পুঁজিবাজার বিশ্লেষণের সক্ষমতা ছিল না বিনিয়োগকারীদের। নতুন কমিশন সে দিকে লক্ষ রেখেই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য নতুন নতুন আইপিও দেওয়া হচ্ছে। আগে দাম নির্ধারণ সঠিকভাবে করা হয়নি। এ জন্য আমরা বুকবিল্ডিং পদ্ধতির পরিবর্তন করেছি। আগে প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে অনিয়ম ছিল। এ জন্য আমরা নীতিমালা করেছি। যাতে কেউ অনিয়ম করতে না পারে। রাইট ইস্যুর রুল পরিবর্তন করেছি।' তিনি বলেন, বাজারে আস্থার সংকটের পাশাপাশি তারল্য সংকটও রয়েছে।
এসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ারবাজার যখন ফুলে উঠেছিল তখন বিনিয়োগকারীদের বিশ্লেষণ সক্ষমতা ছিল না। এ জন্য দরকার প্রশিক্ষণের আয়োজন করা। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে প্রতি মাসে বিনা পয়সায় দুটি করে প্রশিক্ষণ কর্মশালা করা হবে। তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, লোভের শেষ রক্ষা নেই। এ জন্য লোভ সংবরণ করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.