‘আল্লায় আমার কান্দন হোনছে’

‘রাইত্তা শীতে গুমাইতাম পারি না, ছিঁড়া জামা গাইদি আগুন পোয়াই রাইত কাডাই দিছি। এই জাম্পার পাই মনেয় রাইত আরাম করি গুমাইতাম পারুম। আল্লায় আমার কান্দন হোনছে।’
শীতবস্ত্র পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এভাবেই কথাগুলো বলেন ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব সোবহান হাওলাদার।
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে গত দুই দিনে ভোলা ছাড়াও যশোর, লালমনিরহাট, জয়পুরহাট ও বগুড়ায় দুস্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। বন্ধুসভার সদস্যরা এসব বিতরণকাজে সহায়তা করেন।
ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
ভোলা: ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি গ্রামের পশ্চিম ধনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গতকাল বিকেলে বাঁধে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। ওই ইউনিয়নের চার-পাঁচটি গ্রাম মেঘনায় বিলীন হওয়ায় বাসিন্দারা এখন মেঘনার বাঁধের পাশে আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারের ১০০ বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
কেশবপুর (যশোর): যশোরের কেশবপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে গতকাল বিকেলে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, মূলগ্রাম, দোরমুটিয়া, ভোগতী, মধ্যকুল, জাহানপুর, বাকাবর্শী এলাকার ৮৪ দুস্থ নারীকে কম্বল দেওয়া হয়।
পাটগ্রাম (লালমনিরহাট): লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় বুধবার রাতে কম্বল বিতরণ করা হয়। পাটগ্রাম ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি, রহমতপুর, ধবলসূতীর হরিপুর, ঘোনাবাড়ি, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সীমান্ত পকেট ভিতরবাড়ি ও কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের পানবাড়ি, দৌলতপুর, কুচলিবাড়ির মেম্বারপাড়া, পৌর সদরের জুমঞ্চাপাড়া, থানাপাড়া, ঝাকুয়াটারি, কোটতলিসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১০০ কম্বল বিতরণ করা হয়।
জয়পুরহাট: জয়পুরহাট পৌরসভার বহুমুখী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গতকাল সকালে কম্বল বিতরণ করা হয়। সদর উপজেলার পালি, পুরানাপৈল, পারুলিয়া, দাদড়াজন্ত্রিগ্রাম ও পৌর এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে আদিবাসীসহ ৮০ জন হতদরিদ্র নারী-পুরুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া): বগুড়ার দুপচাঁচিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গতকাল সকালে সহায়তায় দুস্থদের মধ্যে ১০০টি কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাহবুবার রহমান তালুকদার, বন্ধুসভার আহ্বায়ক সুদেব কুণ্ডু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সহায়তা অব্যাহত: দুস্থ ব্যক্তিদের কাছে শীতবস্ত্র পৌঁছে দিতে প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ ও শীতবস্ত্র সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ত্রাণ তহবিলে জমা পড়েছে নয় লাখ ৮০ হাজার টাকা, দুই হাজার ৪৭৭টি কম্বল ও ৪৩৩টি সোয়েটার। সিটিব্যাংক এনএ এক হাজার কম্বল এবং উত্তরার মুশতাকাউল হামিদ বাসুনিয়া, মুস্তাফিজুর রহমান, মাযহার করিম ও মো. সোলায়মান দিয়েছেন ১০০টি কম্বল। সিঙ্গাপুর পাইলিং সাউথপয়েন্ট স্কিল সেন্টারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৫০টি কম্বল, উত্তরার মিরপুর দক্ষিণ পীরেরবাগের হামিদুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, কাজী নাঈম শাহ, বেলায়েত হোসেন, শাহ আলম ৮২টি কম্বল, সেলিম চৌধুরী ৩০টি কম্বল, মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ২৫ হাজার টাকা, সাঈদা হোসেন এক হাজার টাকা দিয়েছেন। ঢাকা ব্যাংকের হিসাব নম্বরে জমা পড়েছে ২৩ হাজার টাকা।

No comments

Powered by Blogger.