অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত করুন- বিক্ষোভকারীর ওপর পুলিশের ‘গুলি’!

রাজনৈতিক সমাবেশে পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস ইত্যাদি বোধগম্য, কিন্তু পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করা? বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত মল্লিক বলছেন, তাঁর পায়ে গুলি করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে টিয়ার গ্যাসের শেল লেগে থাকতে পারে।
ঘটনা কী এবং গুলি হয়ে থাকলে কোন পুলিশ সদস্য এটি করেছেন, তার তদন্ত হওয়া উচিত।
গত ৩০ ডিসেম্বর জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। সেই কর্মসূচি পুলিশের লাঠিপেটা ও টিয়ার শেলের মাধ্যমে পণ্ড করা হয়। এই সংবাদ গণমাধ্যমে পরিষ্কারভাবে এসেছে। সেদিনই বাম মোর্চাভুক্ত ছাত্রসংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের পায়ে গুলি করার অভিযোগ করে সংগঠনটি। সৈকত মল্লিকের বাঁ পায়ের হাড় দুটি জায়গায় ভেঙে গেছে। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত আছেন।
গত বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণের একটি সংবাদে আহত ছাত্রনেতা সৈকত মল্লিক দাবি করেছেন, তাঁকে মাটিতে ফেলে পায়ে গুলি করা হয়। তিনি তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আরও বলেন, চিকিৎসকেরা তাঁকে বলেছেন পা থেকে দুটি সিসার টুকরা বের করা হয়েছে। এমনকি চিকিৎসার বিবরণপত্রে চিকিৎসকেরা দুবার ‘গুলিবিদ্ধ হওয়ার’ কারণও উল্লেখ করেছিলেন; কিন্তু পরে ‘গুলিবিদ্ধ হওয়া’ শব্দ দুটি কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু আঘাতের উৎস বিষয়ে সৈকতের চিকিৎসকেরও কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশের কারণ কী?
বিক্ষোভ-প্রতিবাদে বিনা উসকানিতে গুলি করা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। তার চেয়ে বড় হলো, অস্বীকার করা। পুলিশের গুলির হিসাব থাকে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ ছাড়া গুলি করার নিয়মও নেই। সুতরাং, এই দুটি বিষয় খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সৈকতের পায়ের ক্ষত পরীক্ষা করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। সেই কাজটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেই করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনুমতি ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে মানুষ আহত করে থাকলে সেটা অপরাধ। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা প্রত্যাশিত। মানবাধিকার কমিশনেরও উচিত বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালানো।

No comments

Powered by Blogger.