অর্থাভাবে গাইবান্ধার পাঁচটি সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ

অর্থাভাবে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা ও সাদুল্যাপুর উপজেলার পাঁচটি সেতুর নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এসব সেতুর কাজ কোনোটি চার বছর কোনোটি এক বছর ধরে থেমে আছে। কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে সাদুল্যাপুরের খেয়াঘাট, সাঘাটার উল্লাসোনাতলা ও মেলান্দহ এবং গোবিন্দগঞ্জের বড়দহ ও খলসি এলাকায় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সাদুল্যাপুরে ঘাঘট নদীর ওপর প্রথমে বেইলি সেতু নির্মাণ শুরু হলেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ২০০৯ সালে প্রায় চার কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে আরসিসি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। অথচ এ পর্যন্ত শতকরা ২১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ শিল্পীর প্রকৌশলী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।’
একইভাবে সাঘাটার উল্লাসোনাতলা গ্রামে প্রথমে বেইলি ও পরে তিন কোটি ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে আরসিসি সেতু নির্মাণ শুরু হয়। চলতি বছরের ১২ জানুয়ারির মধ্যে এই সেতুর কাজ শেষ করার কথা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ শিল্পী সেতু নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায়। এ পর্যন্ত শতকরা ২৩ ভাগ অগ্রগতি হলেও এক বছর ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে।
একই বছর ছয় কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মেলান্দহ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফাউন্ডেশন ইঞ্জিনিয়ার্সের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। পরে ২০০৯ সালে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হলে কাজ পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ময়েন উদ্দিন। এ পর্যন্ত শতকরা ৫০ ভাগ সম্পন্ন হলেও এক বছর ধরে সেতুর কাজ বন্ধ আছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ করতে বিলম্ব হচ্ছে।
১৯৯৯ সালে গোবিন্দগঞ্জের বড়দহ এলাকায় তিন কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে করতোয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমবিইএল যথাসময়ে কাজ শেষ না করায় তার কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। ২০০৮ সালে পুনঃ দরপত্র আহ্বান করে কিছু কাজ করা হয়। দুই দফায় শতকরা ১০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর চার বছর ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলার খলসি এলাকায় এক কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে খলসি সেতুর নির্মাণ শুরু হয়। অর্থাভাবে ঠিকাদার সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। ২০০৯ সালে পুনঃ দরপত্র আহ্বান করলে কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ শিল্পী। এ পর্যন্ত শতকরা ২০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হলেও ছয় মাস ধরে কাজ বন্ধ আছে।
গাইবান্ধা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এম সেলিম বলেন, ‘মূলত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সেতুগুলোর কাজ বন্ধ রয়েছে। তারপরও ঘাঘট, উল্লাসোনাতলা ও খলসি সেতুর কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল ও জরিমানা আদায়ের প্রক্রিয়া চলছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় মেলান্দহ সেতুর দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। ফলে নকশা পরিবর্তন করে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। বড়দহ সেতুর নির্মাণকাজের নতুন প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে তৃতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা হবে।’

No comments

Powered by Blogger.