মরুঝড় by মোহিত কামাল

(পূর্ব প্রকাশের পর) হো হো করে হেসে দুবাই কলি বলল, এটাই তো মজা! নিরপরাধীকে অপরাধী বানিয়ে শাস্তি দিতে মজা বেশি। আমিও কুড়িয়ে নেব সেই মজা। প্লিজ! আমাকে সাজা দেওয়ার কথা বলবেন না! বলতে পারেন না আপনি। দুবাই কলি বলল, প্রমিজ করছি, বলব না।
তবে শর্ত আছেÑ পালন করতে হবে আমার দুটি শর্ত। ভয়ে ভয়ে রুস্তম প্রশ্ন করল, শর্তগুলো কি কি? আমার রুমের ইলেকট্রিক সার্কিট নষ্ট হয়ে যাবে। সেটা ঠিক করতে আসবেন আপনি। অন্য কাউকে পাঠাতে পারবেন না। এটি প্রথম শর্ত। এই শর্ত পালনের এখতিয়ার আমার হাতে নেই। সার্কিট ঠিক করতে কে যাবে, বাছাই করেন চিফ অফিসার। চিফ অফিসার যেন আপনাকে পাঠায়, সে ব্যবস্থা করব আমি। ইতোমধ্যে এ বাড়ির অনেক কাজ করেছেন আপনি। গুণগান গেয়ে আপনার নাম বলে দিলে চিফ অফিসার আপনাকেই পাঠাবেন, নিশ্চিত আমি। আমাকে সন্দেহ করবেন না তো তিনি?
কী সন্দেহ করবেন? কিছু কি চুরি করেছেন? হাসতে হাসতে প্রশ্ন করল দুবাই কলি।
প্রশ্ন শুনেই বোকা বনে গেল রুস্তম। মেয়েটির কথার ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে, বুঝতে পারল। ফাঁদ থেকে পা তুলে নেওয়ার চেষ্টা না করে বলল, আপনি যেভাবে বলবেন, সেভাবে হবে। আমি নিরীহ মানুষ। আমাকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এবার লাইন কেটে দিন প্লিজ। খিলখিল করে হাসতে হাসতে লাইন কেটে দিল দুবাইর কলি।
লাইন কেটে যাওয়ার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও উদ্বেগের চাকায় সেঁটে গেল রুস্তম। উৎকণ্ঠা ভরা চোখে নির্ভরতার জন্য তাকাল আকাশের দিকে। উদ্বেগের আগুনে যেন জলের ছিটা খেল। বিস্ময় নিয়ে রুস্তম দেখল নারীমূর্তি ধারণ করে আবার উড়ে আসছে উড়ালমেঘ। মেঘের ছায়া পেয়ে শীতল হতে থাকল উত্তপ্ত দেহ, বিপর্যস্ত মন। দুবাই-কলির সঙ্গে কি সংযোগ রয়েছে আসল কলির? আসল কলি কি টের পেয়ে যায় রুস্তমের মনের খবর? কল্পনার রথেই কি তখন কোনো না কোনো ভাবে আসল কলি হাজির হয় রুস্তমের সামনে? এখনো উড়ে আসছে কি মেঘের ভেলায় চড়ে? দুবাই কলির কথা ভাবলে কি আসল কলি নীলাকাশ থেকে মিলিয়ে যাবে কল্পলোকের ঘন মেঘের ভেলা? এই মুহূর্তে ভাবনার মধ্যে হাজির হল দুবাই-কলির কথাÑ‘নিরপরাধীকে অপরাধী বানিয়ে শাস্তি দিতে মজা বেশি। আমিও কুড়িয়ে নেব সেই মজা।’ আচমকা বিশ্বাসের পাহাড়-চূড়ায় উড়তে শুরু করল সবুজ পতাকা। ভোরের ফুলের পাপড়ি খোলার মতো কেঁপে কেঁপে খুলতে লাগল স্তরে স্তরে সাজানো বিশ্বাসের লাল পাপড়ি। মা-কি তবে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন কলির বিরুদ্ধে? শুভ্র কলির নির্মল উল্লাসকে কি বিকৃত করে ঈর্ষার মোড়ক পরিয়ে তুলে ধরেছেন ছেলের সামনে? নিরপরাধী কলিকে সাজা দিয়ে কি আম্মাজান বেশি মজা কুড়িয়ে নিতে চেয়েছেন দুবাই-কলির মতো? ফোনে এত জোরাল প্রতিবাদ করল কেন কলি? অপরাধীর গলা তো এত আত্মবিশ্বাসী হতে পারে না! চিৎকার করে কলি বলেছিল, ‘শুনেছেন আপনার মায়ের কথা? হিমালয় সমান উঁচু শ্রদ্ধাভাজন আপনার মা-কে কি আমি অপমান করলাম? নাকি কুটনি মনের কূটচালের কারণে নিজেকেই অপমান করছেন তিনি? স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক তিতা করে তোলার জন্যই গোপন ঈর্ষা কাজ করে তার মনে। ঈর্ষার আগুনে কেবল আমাকে নয়, আপনাকেও পোড়াবেন তিনি, বুঝতে পারছেন?’ কলির কথার জোর ভাসিয়ে নিয়ে গেল নৈরাশ্যের গোপন স্রোত। বিশ্বাসের হু হু বাতাসের দাপটে ভেঙে পড়ল সংশয় ও শঙ্কার অদৃশ্য দেয়াল। নিজেকে আবিষ্কার করল খসে পড়া পাহাড় চূড়ায়। এই চূড়ায় বসে আছে আসল কলি। বুকের ভেতর থেকে ছিটকে বের হতে লাগল বহু কৌণিক আলোকমালা। কিন্তু মা-কে অবিশ্বাস করতে পারল না, দোষ দিতে পারল না। মা-কি অবিশ্বাসী হতে পারে? পারে না। মা-কি দোষী হতে পারে সন্তানের কাছে? পারে না। প্রশ্ন আর উত্তরের বুননে গেঁথে উঠছে নতুন মালা। এই মালা কলির জন্যই। এই মালা মায়ের জন্য। ভাবনায় ঋদ্ধ্য হয়ে তাকিয়ে থাকল আকাশে ভাসমান মেঘখ-ে লুকোনো নারী মূর্তির দিকে।
একবার ইচ্ছা হলো দেশে কল করার জন্য। ইচ্ছে-নাটাই থেমে গেল এই ভেবে যে, কাজের সময় অনেকক্ষণ কথা বলেছে সে দুবাই-কলির সঙ্গে। বার বার ফোন হাতে নিলে চিফ অফিসার ক্ষেপে যেতে পারেনÑনেগেটিভ মার্কিং পেলে চাকরির সুযোগ-সুবিধে কমে যাবে ভেবে গাছের ছায়া থেকে সরে কাজে মনোযোগ দেওয়ার জন্য এগিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে শুনল পেছন থেকে ভেসে আসা প্রশ্ন, কী রুস্তম? কেমন আছ?
মাথা ঘুরিয়ে দেখল সহকর্মী তন্ময়কে। সমবয়সী তন্ময়ের বাড়ি কলকাতা হলেও তাকে কলকাতার বলে আলাদা চোখে দেখে না রুস্তম। বাংলা কথা বলার কারণে বিদেশ-বিভূঁইয়ে ওকে নিজের আপনজনই মনে হয়। সুখ-দুঃখের কথা একে অপরকে শেয়ার করে। প্রথমে ভেবেছিল তন্ময় হিন্দু ধর্মাবলম্বী। না। নাম দিয়ে চিহ্নিত করতে ভুল করলেও চিনতে ভুল হয়নি। মসজিদের ক্যাম্পাসে কয়েক হিন্দু ছেলেও কাজ করে। এখানে এখন সবচেয়ে বড় সুহৃদ হচ্ছে তন্ময়। একবার ভাবল সব ঘটনা তন্ময়কে জানাবে। পরক্ষণেই গুটিয়ে নিল নিজেকে। এগিয়ে এসে তন্ময় বলল, তোমাকে নিয়ে কনট্রোল রুমে কথা হচ্ছে। কেউ কেউ হাসাহাসি করল। কী হয়েছে তোমার? কী যেন উদ্ভট আচরণ করছিলে?
রুস্তম বলল, কিছু হয়নি তো! হাসাহাসি করবে কেন? রোদের তাপে পুড়ে তৃষ্ণায় কাতর হয়ে গাছের ছায়ায় এসে পানি খেলাম।
তুমি নাকি মোবাইল ফোনে কথা বলছ, আর চোরের মতো এদিক-ওদিক তাকাচ্ছ, কখনো তাকিয়ে থাকছ রোদ ঝলসানো আকাশের দিকে? কোনো সমস্যা কি হয়েছে? হলে আমাকে বলতে পার।
আকাশের দিকে তাকানোর কথা তন্ময়ের মুখে উচ্চারিত হওয়া মাত্রই রুস্তম বলল, দেখ ওই মাথার উপরের দিকে আকাশে একখন্ড মেঘ উড়ে এসে ছায়া দিচ্ছে আমাকে। মেঘখ-ের মধ্যে ফুটে আছে এক নারীমূর্তি। মনে হয়েছে বাংলাদেশ থেকে মেঘে চড়ে উড়ে এসেছে আমার বউ। ক্লান্ত আমাকে ছায়া দিচ্ছে, আদর দিচ্ছে।
আকাশের দিকে না তাকিয়ে তন্ময় বলল, কি বলছ এসব? মেঘখ- কোথায় দেখলে? মাথার ওপর কড়া রোদ নিয়ে কাজ করি আমরা। পায়ের তলানিতে উত্তপ্ত বেলে-মাটি। শীতল পরশ কে দেবে তোমায়? কোথায় দেখলে মেঘমালা? আকাশের বিস্তৃর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে ফোকাস লাইটের আলোকবিমের মতো রোদের কু-ুলি পুড়িয়ে দিচ্ছে আর তুমি বলছ মাথার ওপরে মেঘ রয়েছে?
দেখো, উপরের দিকে তাকাও। না তাকিয়ে সংশয় প্রকাশ করছ কেন?
রুস্তমের তেজোদীপ্ত স্বর শুনে উপরের দিকে তাকাল তন্ময়। কিছুক্ষণ তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে বলল, তুমি ডুবে আছ মায়ামেঘে। মায়ামেঘের ছায়ায় বসে অনুভব করছ শীতলতা, খাচ্ছ মনকলা, বুঝেছ? আকাশে মেঘ নেই। আছে শুধু খা খা রোদ্দুর! আর রোদ্দুর গিলে ফেলছে আমাদের। মায়ার ছায়া-বৃষ্টিতে ভিজে নিজের কষ্ট লুকানোর বৃথা চেষ্টা করছ। বাস্তবতা মোকাবিলা কর। দেখ, বাস্তবতার নির্মম চোখ তুলে তাকাও আকাশপানেÑ মেঘ নেই কোথাও।
তন্ময়ের জোরালো কথায় কেঁপে কেঁপে উঠে আকাক্সক্ষার শূন্যতা অনুভব করার চেষ্টা করল রুস্তম। শামুকের মতো বুক টেনে নিঃশব্দে মন-মন্দির থেকে বেরিয়ে এগিয়ে যেতে থাকল বালুময় মরুর বুক চিরে। কোথায় রওনা হয়েছে? লাল রুমাল পানে? নাকি বাংলাদেশের কলির টানে ? বুঝে ওঠার পূর্বেই তন্ময় বলল, আশপাশে কোথাও মায়ার বীজ বপনের সুযোগ নেই, সম্ভাবনা নেই। তবুও আমাদের জীবনের তলানির শেষ রক্তবিন্দুর সঙ্গে ঝুলে থাকে মায়া... মায়া। সেই মায়াময় বালুচরে তুমি ডুবে আছ রুস্তম। তৃষ্ণা মেটাও রোদজলে। রোদমেঘ দেখ। আসলে মেঘ নেই কোথাও, বোঝার চেষ্টা কর। দূরে ওই দখিনে দেখা যাচ্ছে একটা লাল কাপড়, উড়ছে। দেখ, লালেও মায়া আছে। শূন্যতায় ডুবে থেক না। রোদেও ছায়া আছে, খুঁজে নাও।
তন্ময়ের কথায় আকস্মিক চমকে উঠে ডানে তাকাল রুস্তম। হ্যাঁ। তন্ময় ঠিকই দেখেছে। লাল রুমাল উড়ছে। দুবাই কলি আবার ফিরে এসেছে সিঁড়িঘরেÑ উড়াচ্ছে লাল রুমাল।
শুকনো মুখের তৃষ্ণা মিটিয়েছিল জলে। লাল রুমাল দেখে আবার শুকিয়ে গেল গলা। মায়ার বীজ কি বপন করে ফেলবে সে লাল রুমালের ছায়ায়? আতঙ্কে চিৎকার করে উচ্চারণ করল, না। সজোরে উচ্চারিত রুস্তমের ‘না’ শুনে চমকে উঠল তন্ময়। তবে কি আলোকিত হয়ে উঠছে রোদে পোড়া ছায়া ভস্মময় রুস্তমের অন্তরজীবন? রোদের মাঝেও কি তবে আছে করুণার বর্ষণ? করুণায় ধুয়ে কি পরিশুদ্ধ হয়ে উঠছে ধূলিমাখা মরুমন? বাইরে থেকে সুখী-পরিতৃপ্ত মনে হলেও তবে কি রুস্তম ছিল অসুখী? নানা প্রশ্ন নিয়ে তন্ময় বন্ধুসুলভ গলায় বলল, পরে তোমার সব কথা শুনব, বিভ্রান্তি ছেড়ে কাজে লেগে যাও। মন-বিলাসের সময় নেই, আমাদের প্রতিটি মিনিট থেকে রক্তশুষে নেবে চোষার দল। ফাঁকি দিলে বিপদ, নৈরাশ্যের চোরাস্রোতে ভাসলে ফাঁকি দিয়ে ফেলবে কাজে, টের পাবে না। হুঁম করে সামনে দাঁড়াবে দানবীয় বিপদ। বুঝেছ?
অসহায়ভাবে তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে থেকে রুস্তম প্রশ্ন করল, আমি কি বিভ্রান্ত ছিলাম? চোরাস্রোতের টানে ডুবে যাচ্ছিলাম খরস্রোতা বালিঝড়ের ঘূর্ণিতে?
বাইরে ঝড় নেই। ভেতরে ঝড় বইছিল তোমার। টের পাওনি তুমি। টের পেয়েছে বাইরের সবাই। ভেতরের ঝড় যেন কেউ টের না পায়। বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে শেয়ার করতে পার আমাকে। অন্যরা বুঝবে না তোমাকে, আমাকে। না বুঝে হাসাহাসি করবে আমাদের নিয়ে।
তন্ময়ের কথায় মনের জোর ফিরে পেল রুস্তম। লাল রুমালের রহস্য উন্মোচনের জন্য মুহূর্তের মধ্যেই নাড়া খেল ভেতরে। অন্তর্জগতে তৈরি করা ডায়ালগ মুখে এল না। গোপন বাধায় থেমে গেল গুমরে ওঠা কথামালা। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল লাল রুমাল পানে। তখনই মনে হল দুবাই কলির কথাÑ ‘আমার এক কাজিন বাংলাদেশের এক ছেলেকে বিয়ে করেছে জোর করে। ছেলেটির নাম রুস্তম। বিয়ে করে বাংলাদেশে চলে গেছে ওরা। এখন আর ফিরে আসছে না।’ শোনাটা কি বিভ্রম ছিল ? আবার আসল কলিকে ফোন করার পর খিলখিল হাসিরত দুবাই কলির ডায়ালগ ভেসে এসেছিলÑ ‘আমি দুবাইয়ের কিশোরী কলি। ইচ্ছা করছে বাংলাদেশের রুস্তমের সঙ্গে ভেগে যাই। যাবেন আমার সঙ্গে? নেবেন আমাকে? আপনার ঘরে নেবেন?’
ওই ডায়ালগ এসেছিল কোত্থেকে! সেই শোনার মধ্যেও কি বিভ্রম ছিল?
একই কলের কানেকশন থাকা অবস্থায় অনেকটা শূন্যে উড়ে গিয়েছিল ফোন সেট। শূন্য থেকে লুফে নিয়ে কানে সেট ধরার সঙ্গে সঙ্গে আবার শুনেছিল নববধূ কলির ব্যাকুল স্বর, ‘কথা বলছেন না কেন? কবে দেশে আসবেন?’ একই কলে একবার শুনেছিল দুবাই কলির কথা, আবার শুনেছিল নববধূ কলির কথা! তখনও কি অলীক বিভ্রমে ডুবে গিয়েছিল নিজে? দুই ঘটনার মধ্যে সংযোগ পেয়ে ঘাবড়ে গেল রুস্তম। তন্ময়ের কথা উড়িয়ে দিতে পারল না। কৃতজ্ঞ চোখে তাকাল তন্ময়ের দিকে। মৃদু হেসে তন্ময় বলল, সামনের ছুটির দিনে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার বুর্জে খলিফায় বেড়াতে যাব। মাঝে মাঝে আমাদের একটু রিলাক্স করা উচিত। কী বলো, যাবে?
রুস্তম জবাব দিল, যাব।
জবাব দিয়ে ডানে তাকাল আবার। সিঁড়িঘরে এখনো উড়ছে লাল রুমাল। রহস্য কি? এত ধৈর্য পেল কোত্থেকে দুবাই কিশোরী। অস্থির চঞ্চলা হরিণী কিভাবে এতক্ষণ টিকে আছে ধৈর্য নিয়ে, এটাও কি চোখের বিভ্রম? নিজেকে যাচাই করার জন্য শরীরে ঝাঁকি দিয়ে তন্ময়ের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করল, ওই যে দূরে, বিত্ত-বৈভবে ডুবে থাকা মালিকদের বাড়ির সিঁড়িঘরে কি লাল কাপড় উড়ছে সত্যি সত্যি?
তন্ময় তাকাল সেদিকে। তারপর বলল, লাল কাপড়ের প্রতি মায়া জাগছে?
রুস্তম বলল, হেঁয়ালি রাখো। সত্যি করে জবাব দাও, লাল কাপড় উড়ছে কিনা।
উড়ছে। ছোট করে জবাব দিল তন্ময়। ... (চলবে)

No comments

Powered by Blogger.