নয়াদিল্লিতে গণধর্ষণ- পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

ভারতের নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে মেডিকেলের ছাত্রীকে গণধর্ষণের বহুল আলোচিত ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিল্লির সাকেত জেলা আদালতে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অপহরণ, গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠার তথ্য-প্রমাণ দাখিল করে পুলিশ। বিশেষ দ্রুত বিচার আদালতে এই মামলা চলবে। আগামীকাল শনিবার মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
দিল্লি পুলিশ ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত পাঁচ ব্যক্তি হলেন: রাম সিং (৩৫) ও তাঁর ভাই মুকেশ সিং (২৬) এবং পবন গুপ্ত (১৯), বিনয় শর্মা (২০) ও অক্ষয় ঠাকুর (২৮)।
পুলিশের এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগপত্র দাখিল করেছি।’
ভারতের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মৃত্যুর আগে ওই ছাত্রীর দেওয়া সাক্ষ্যও রয়েছে অভিযোগপত্রে। এ ছাড়া তাঁর ছেলেবন্ধুসহ অন্তত ৩০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
গত ১৬ ডিসেম্বর চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী ওই মেডিকেলছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন। এ ছাড়া তাঁকে ও তাঁর ছেলেবন্ধুকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়। ওই ছাত্রীকে প্রথমে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৯ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে একজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বয়সের বিষয়ে নিশ্চিত হতে শারীরিক পরীক্ষা করা হবে।
ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় নয়াদিল্লিসহ সারা ভারত ফুঁসে উঠেছে। বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ চলছে। দাবি উঠেছে ধর্ষণবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়নের এবং নারীদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার। সরকার রয়েছে গণরোষের তোপের মুখে। ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ও বিক্ষোভকারীরা ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে আসছে।
গতকাল আদালতের বাইরে নারীসহ হাজারো মানুষ ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করে। এ সময় ধর্ষকদের শিগগির ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। একটি ব্যানারে লেখা হয়েছে, ‘ভারতে শাস্তির সংখ্যা এত কম কেন? বিচারকেরা ঘুষ থেকে জেগে উঠুন।’ এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.