এবার কোকোর ঘুষের মুনাফার ১৫ লাখ টাকা আনা হলো

 এবার সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে কোকোর ঘুষের টাকার মুনাফা। সিঙ্গাপুরের ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংক (ইউওবি) থেকে সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখায় দুদকের খোলা স্টোলেন এ্যাসেট রিকভারি এ্যাকাউন্ট ৩৩০৩৩৪১৭৭ এ চলতি মাসের এক তারিখে সিঙ্গাপুর হতে সুইফটের মাধ্যমে ২৩ হাজার ৮শ ১৫ সিঙ্গাপুরী ডলার পাঠানো হয়।
দেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৭৭৮ টাকা। বৃহস্পতিবার দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দেশটি থেকে টাকা আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জনকণ্ঠকে। একই দিন সংস্থাটির চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের কোকোর টাকা আনার বিষয়টি জানান।
এর আগে নবেম্বর মাসের ২২ তারিখে বহুজাতিক কোম্পানি থেকে কোকোর ঘুষ নেয়ার টাকার মধ্যে ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গপুরী ডলার ফেরত আনা হয়। বাংলাদেশী টাকায় ১৩ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার ১৩১ টাকা)। সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে এ অর্থ ফেরত আসে। আরও ৯ লাখ ৩২ হাজার মার্কিন ডলার আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাজধানীর কাফরুল থানায় আরাফাত রহমান কোকো এবং সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রী মরহুম লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলার বাদী হন দুদক উপ-পরিচালক মোঃ আবু সাঈদ। মামলার এজাহারে অভিযোগ ছিল, ২০০৪ সাল থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকো ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০০৯-এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মামলার চার্জশীট প্রদান করা হয় ২০০৯ সালের নবেম্বর মাসের ১১ তারিখে। বিচার শুরু হয় ২০১০ সালের ৩০ আগস্ট।
রায় দেয়া হয় ২০১১ সালের ২৩ জুন। রায়ে দ্জুনকে ছয় বছরের সশ্রম কারাদ- ও ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আর বাজেয়াফ্্ত করা হয় সিঙ্গাপুর ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংকে কোকোর পাচার করা মুদ্রা। যার পরিমাণ ছিল ২০ লাখ ৪১ হাজার ১৪৩ দশমিক ৫৯ সিঙ্গাপুর ডলার এবং ৯ লাখ ৩২ হাজার ৫৭২ দশমিক ৮১ মার্কিন ডলার।
এ ঘটনার পর দুর্নীতি দমন কমিশন সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখায় বিদেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার জন্য স্টোলেন এ্যাসেট রিকভারি এ্যাকাউন্ট খোলে। ওই এ্যাকাউন্টে বিদায়ী বছরের নবেম্বর মাসের ২২ তারিখে ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গপুরী ডলার প্রেরণ করা হয়। টাকা আসার পর প্রধান বিরোধীদল বিএনপির পক্ষ থেকে নানাভাবে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। এর মধ্যে গত কয়েকদিন আগে কোকোর এই টাকার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে একটি প্রত্যয়নপত্র পাঠানো হয়। প্রত্যয়নপত্রের সঙ্গে টাকা কীভাবে কোন প্রক্রিয়ায় আনা হয় তার বিস্তারিত প্রতিবেদন দেয় সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা। এরই মধ্যে এক জানুয়ারি সোনালী ব্যাংকের একই ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয় ওই টাকার লভ্যাংশ। সিঙ্গাপুর থেকে লভ্যাংশ আনার পর বিষয়টি দুদিন গোপন থাকলেও বৃহস্পতিবার সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বিষয়টি স্বীকার করেন। বিষয়টি জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, নবেম্বর মাসে সিঙ্গাপুর থেকে দুদক সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখায় দুদকের খোলা ব্যাংক হিসাবে যে টাকা আসে এক জানুয়ারি ওই টাকার মুনাফা পাঠিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুর থেকে আনা কোকোর এসব অর্থ দুর্নীতিবিরোধী কর্মকা-ে ব্যয় করা হবে বলে পূর্বে ঘোষণা দিয়েছে দুদক।

No comments

Powered by Blogger.