ফিসক্যাল ক্লিফ’- নতুন আইনে ওবামার স্বাক্ষর, ধাক্কা খেল রিপাবলিকানরা



যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সংকট বলে পরিচিত ‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ এড়াতে কংগ্রেসে পাস হওয়া বিলে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এর মধ্য দিয়ে নতুন আইন কার্যকর হলো। ফিসক্যাল ক্লিফ এড়ানোকে প্রেসিডেন্ট ওবামার জয় এবং রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
নতুন আইনের ফলে সাধারণ মার্কিন করদাতার পরিবর্তে শুধু ধনীদের কর বৃদ্ধি পেল। অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা থেকে সাময়িকভাবে মুক্তি পেল মার্কিন ও বিশ্ব অর্থনীতি।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ওবামা গত বুধবার রাতে ‘আমেরিকান ট্যাক্সপেয়ার রিলিফ অ্যাক্ট অব ২০১২’ শীর্ষক নতুন আইনে স্বাক্ষর করেছেন। এই আইনের ফলে বাড়িভাড়া দিয়ে যাদের আয় বছরে সাড়ে চার লাখ ডলারের ওপরে, শুধু তাদেরই কর বৃদ্ধি পেল। আর ফিসক্যাল ক্লিফের কারণে সরকারি ব্যয় হ্রাস নিয়ে যে সংকট, তা দুই মাসের জন্য স্থগিত থাকল।
এর আগে গত মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে এ-সংক্রান্ত বিল পাস হয়। এর এক দিন আগে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিলটি পাস হয়। ওবামা ফিসক্যাল ক্লিফ এড়াতে শুধু ধনীদের কর বাড়ানোর পক্ষে ছিলেন। কিন্তু রিপাবলিকানরা নতুন করে কোনো ধরনের কর বাড়ানোর বিপক্ষে ছিলেন। ফলে এই আইন পাস রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এটি রিপাবলিকানদের মধ্যে এক অর্থে বিভক্তিও এনেছে।
শুধু উচ্চবিত্তের কর বাড়াতে সিনেটে উত্থাপিত বিলের পক্ষে ৮৫ ভোট পড়ে। প্রভাবশালী রিপাবলিকান অনেক সিনেটর ওই বিলের পক্ষে ভোট দেন। এঁদের মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান নেতা ও স্পিকার জন বোয়েনার এবং গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পল রায়ানও আছেন। রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে বিলের পক্ষে ২৫৭ ভোট পড়ে। এর মধ্যে ১৫১ জন রিপাবলিকান সদস্যের ভোটও রয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন আইনের প্রতি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রিপাবলিকানের সমর্থন রিপাবলিকান পার্টির প্রতি কট্টরপন্থী টি পার্টির সমর্থনে প্রভাব ফেলতে পারে। এটি রিপাবলিকানদের জন্য আশঙ্কার বিষয়। কারণ, ২০১০ সালের প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনে মূলত টি পার্টির সমর্থন পেয়েই নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ পায় রিপাবলিকানরা।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পল লাইট বলেন, নতুন আইনের প্রতি রিপাবলিকানদের সমর্থন ২০১৪ সালের কংগ্রেস নির্বাচন ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নতুন ধারা সৃষ্টির ইঙ্গিত হতে পারে। যে রিপাবলিকান নেতারা টি পার্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় স্বস্তি পাচ্ছেন না, তাঁরাই মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাটদের দিকে ঝুঁকছেন। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.