রাজশাহীতে সেদিন বিস্ফোরক নিয়ে নেমেছিল শিবির

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পাশের মেহেরচণ্ডী পূর্বপাড়ার একটি মেস থেকে ১২টি হাতে তৈরি তাজা বোমা এবং বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ শিবিরের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার গভীর রাতে নুরুল হুদা (২৩) নামের এই শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল হুদা বলেছেন, গত মঙ্গলবার রাজশাহীতে শিবিরের নেতা-কর্মীরা বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন।


সেদিন তাঁরা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েই পুলিশের ওপর হামলা করেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, নুরুল হুদা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার নওকুল গ্রামের গোলাম আজমের ছেলে। তিনিসহ শিবিরের আরো কয়েকজন নেতা-কর্মী মেহেরচণ্ডী এলাকার ওই মেসে ভাড়া থাকতেন।
গতকাল শনিবার বিকেলে পুলিশ নুরুল হুদাকে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেছেন। এরপর তাঁকে ছয় দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) আবেদন জানিয়ে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে পাঠানো হয়।
নুরুল হুদার বরাত দিয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত ওসি আলমগীর হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গত মঙ্গলবার সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় পুলিশের ওপর হামলার সময় শিবিরের কয়েক শ নেতা-কর্মীর কাছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকদ্রব্য ছিল। ওই দিন যেসব বোমার বিস্ফোরণ ঘটনানো হয়, সেগুলোর মধ্যে কিছু বোমা সরবরাহ করেছিলেন নুরুল হুদা।'
ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল হুদা বলেছেন, তাঁর কাছেও পাঁচ-সাতটি বোমা ছিল। এ ছাড়া শিবিরকর্মী ইমন, আতিক, মিলন ও শাহাদৎ হোসেনসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীর কাছে আরো বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ছিল।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত পৌনে ৩টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ মেহেরচণ্ডী এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় একটি মেস থেকে ১০টি তাজা বোমা, দুটি পাইপ বোমা এবং বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ শিবিরকর্মী নুরুল হুদাকে আটক করা হয়।
পুলিশ ধারণা করছে, উদ্ধার করা বোমাগুলো শিবিরকর্মীদেরই তৈরি। নুরুল হুদা পুলিশকে বলেছেন, তাঁর মেসে আরো বেশ কয়েকটি বোমা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেগুলো শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীর কাছে সরবরাহ করা হয়েছে।
রাজশাহী নগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার এম এম মনির-উজ-জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'শিবির ক্যাডাররা বিচ্ছিন্নভাবে আরো বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। তারা পুলিশের ওপর হামলা করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায়। এ পরিকল্পনা নিয়েই তারা এখন অগ্রসর হচ্ছে। তবে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। তাদের কোনোভাবেই সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।'
এদিকে শুক্রবার রাতে মহানগরের উপশহর ৩ নম্বর সেক্টরে সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত মহানগর পুলিশ কমিশনারের বাসভবনের অদূরে একটি বোমা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে বোয়ালিয়া থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, 'এটি আতশবাজির শব্দ। বোমা নয়।'

No comments

Powered by Blogger.