কায়ানি ও পাশাকে সরিয়ে দিতে পারে গিলানি সরকার!

পাকিস্তান সরকার সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি ও প্রভাবশালী আন্তবাহিনী গোয়েন্দা সংস্থার (আইএসআই) প্রধান লে. জেনারেল আহমেদ শুজা পাশাকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। গতকাল সোমবার পাকিস্তানের দ্য নিউজ পত্রিকায় এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে বলে একটি স্মারকে অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে দেশটির সেনা ও সরকারের মধ্যে বেশ


কিছুদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। দ্য নিউজ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনারেল কায়ানি ও লে. জেনারেল পাশার ওপর সরকার যে ‘চরম নাখোশ’, এটি এখন সবার জানা। চাকরিতে কায়ানির তিন বছর এবং পাশার এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আইএসআই-প্রধানের বর্ধিত মেয়াদ আগামী মার্চে শেষ হবে। সেনাপ্রধান থাকবেন ২০১৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। তবে সংবিধান অনুযায়ী, এই দুজনকে যেকোনো সময় সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর ন্যাটোর বিমান হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পেছনে এই শীর্ষ কর্মকর্তাদের ব্যাপক প্রভাব ছিল।
বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা স্মারকে উল্লেখ করা হয়, সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন কায়ানি ও শুজা। পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটতে পারে—এই আশঙ্কা প্রকাশ করে ওই স্মারকে তা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর ব্যাপারে সংযম ও সতর্কতা অবলম্বন করছেন। এর মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে মতভেদের বিষয়ও রয়েছে।
উল্লিখিত দুই জেনারেলকে বরখাস্ত করা হলে নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান থেকে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যেতে পারে, এ নিয়ে চলছে নানা চিন্তাভাবনা। এ ব্যাপারে একটি সূত্রের মন্তব্য হচ্ছে, ‘এ প্রশ্নের উত্তর কারও জানা নেই। এই জটিল প্রশ্নের আশাব্যঞ্জক উত্তর কেউ খুঁজে পাবে না। সত্যি বলতে কি, বাস্তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তের পর সংশ্লিষ্ট সেনা কর্মকর্তারা তা মেনে বাড়ি ফিরে গেলেও নিরাপত্তা বাহিনীর পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারবে না।’
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের শীর্ষ দুই সেনা কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে দুই মার্কিন কর্মকর্তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও সামরিক নীতি প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুজন কর্মকর্তা হলেন সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ব্রুস রিডেল ও সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেমস জোন্স।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মার্কিন নেতারা পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আশ্বাস দিয়েছেন, কায়ানি ও পাশাকে সরানোর ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন পুরোপুরি অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।
একটি সেনা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন নামে পাকিস্তানের আরেকটি পত্রিকার খবরে বলা হয়, কায়ানি বা শুজাকে অপসারণ করা হলে সেনাবাহিনী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনাপ্রধান এরই মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। সরকারের সঙ্গে চলমান টানাপোড়েন নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। পরিস্থিতি খারাপ থেকে গুরুতর হলে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়। সেনা কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কায়ানি ও পাশাকে বরখাস্ত করা হলে তাঁরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আশ্রয় নেবেন। অন্য কোনো পথে তাঁরা যাবেন না। পিটিআই।

No comments

Powered by Blogger.