মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ৫ জানুয়ারির মধ্যে পুনর্দাখিলের আদেশ


জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতা-বিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে পুনর্দাখিলের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের ধার্য দিন ছিল গতকাল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে
ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। ট্রাইব্যুনাল ওই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির কাছে ফেরত পাঠানোর এবং তা পদ্ধতি অনুযায়ী ৫ জানুয়ারির মধ্যে পুনর্দাখিলের আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক নথি পর্যবেক্ষণ করে ট্রাইব্যুনাল মনে করেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ অগোছালোভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। অভিযোগগুলো সুবিন্যস্ত নয় এবং শ্রেণীভুক্ত করা হয়নি।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. শাহিনুর ইসলাম পরে সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালী বিধিমালার ৪৬ বিধিতে বর্ণিত অন্তর্নিহিত ক্ষমতাবলে ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দিয়েছেন। ২২ বিধি অনুসারে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হলে তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য করা আবেদনের শুনানি হবে।
সুবিন্যস্তভাবে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রস্তুত করতে না পারা রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের সীমাবদ্ধতা না ব্যর্থতা—এ প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জেয়াদ আল মালুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যর্থতাও নয়, সীমাবদ্ধতাও নয়। এ পর্যন্ত যে দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আঞ্চলিক। কিন্তু গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাংলাদেশজুড়ে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত সব অপকর্মের হোতা।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির প্রথম আলোকে বলেন, এটা খুবই হতাশাজনক। এই ঘটনায় প্রমাণিত হয়, এ ধরনের বিচারের পদ্ধতি ও জটিলতাগুলো নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কোনো ধারণা নেই। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার জন্য সরকারকে আরও যোগ্য, দক্ষ ও সার্বক্ষণিক কৌঁসুলি নিয়োগ করতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা গত ৩১ অক্টোবর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৩৬০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের কাছে জমা দেয়। রাষ্ট্রপক্ষ ১২ ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে। এতে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫২টি অভিযোগ আনা হয়। একই সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার বা আটকের জন্য আবেদন করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের জন্য গতকাল দিন ধার্য করেন।

No comments

Powered by Blogger.