তদন্তে তাঁর আরও অনেক কীর্তি জানা যাবে-জনরোষের কবলে থানার ওসি

সাধারণত চিহ্নিত অপরাধী চক্র নিরীহ ব্যক্তিদের আটক করে মুক্তিপণ দাবি করে থাকে, আর পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু এবার চট্টগ্রাম মহানগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি নিজেই খাতুনগঞ্জের এক ব্যবসায়ীকে আটক করে ২০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে বসেছেন! এখন কে


কার বিচার করবে? এই গুরুতর অপরাধের আইনসম্মত প্রতিকারের আশায় বসে থাকার মতো ধৈর্য ব্যবসায়ীদের ছিল না। তাঁরা দলে দলে থানা ঘেরাও করলে আটক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আপাতত জনরোষের মুখে ওসি সাহেব পিছু হটেছেন। কিন্তু বারবার যেন মানুষকে রাজপথে নামতে না হয়, সে ব্যবস্থা করা দরকার।
খাতুনগঞ্জের একজন ব্যবসায়ীর অপর এক ব্যবসায়ীর কাছে ৭৮ লাখ টাকা পাওনা ছিল। সময়মতো পরিশোধ না করায় তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। খাতুনগঞ্জে সাধারণত বিশ্বাসের ওপর মুখের কথায় এ রকম বড় অঙ্কের মালামালের লেনদেন হয়ে থাকে। বিরোধ দেখা দিলে আবার নিজেদের মধ্যে আলোচনাতেই মীমাংসা হয়। কেউ থানা-পুলিশের শরণাপন্ন হলেও আলোচনার মাধ্যমেই বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু আলোচ্য ক্ষেত্রে থানার ওসির ভূমিকা ছিল বিতর্কিত। তিনি পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে পাওনাদারকেই আটক করলেন।
খাতুনগঞ্জ দেশের একটি বড় পাইকারি বাজার। প্রতিদিন এখানে দু-তিন শ কোটি টাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লেনদেন হয়। এই বাজারে কোনো ধরনের অস্থিরতা দেখা দিলে সারা দেশের পণ্যের সরবরাহে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই স্পর্শকাতর বাণিজ্যকেন্দ্রকে যথাসম্ভব নিস্তরঙ্গ রাখা সরকার ও প্রশাসনের অন্যতম কর্তব্য। কিন্তু সেখানে একজন ব্যবসায়ীকে অন্যায়ভাবে আটক ও ঘুষ দাবির অভিযোগে সব ব্যবসায়ীকে থানা ঘেরাওয়ের মতো চরম পথে যেতে হলো। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আলোচ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিরুদ্ধে এর আগেও নানা অনৈতিক কাজের অভিযোগ পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সময়ে ব্যবস্থা নিলে এত বড় ঘটনা হয়তো ঘটত না। তাও এবার অল্পের ওপর দিয়েই নিষ্পত্তি হয়েছে। অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

No comments

Powered by Blogger.