স্ত্রীকে জবাই শেষে স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা-স্কুলশিক্ষক খুন

ময়মনসিংহ শহরের নিজ বাসায় গতকাল সোমবার দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নাসিরাবাদ কলেজিয়েট উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক খন্দকার মো. মুছা খুন হয়েছেন। একই দিন বিকেলে সদর উপজেলার পশ্চিমপাড়ার ফখরুল হাসান নামের এক ব্যক্তি স্ত্রীকে জবাই শেষে নিজেও গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।


পুলিশ, নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নাসিরাবাদ কলেজিয়েট স্কুলের বাণিজ্য শাখার শিক্ষক মুছা (৫৯) প্রায় ২০ বছর ধরে আকুয়া মিলনবাগ এলাকায় সাড়ে ছয় শতক জমি কিনে টিনশেড বাসায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। গতকাল দুপুরের খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমুতে যান তিনি। একপর্যায়ে একই এলাকার সোহাগ মিয়া নামের এক বখাটে কক্ষে ঢুকে মুছাকে ছুরিকাঘাত করে।
নিহত শিক্ষকের স্ত্রী সাজেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরের খাবার খেয়ে মেয়ে ফারাহ তাবাসসুমকে নিয়ে আমি পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ি। একপর্যায়ে মুছার চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি, সোহাগ তাঁর বুকের ওপর বসে ছুরিকাঘাত করছে। সোহাগকে জাপটে ধরলে সে আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর মুছা মারা যান।’
সাজেদা বেগম আরও বলেন, ‘বছর দুয়েক আগে নিজেদের বাসা থাকা সত্ত্বেও সোহাগের বাবা আমাদের বাসা ভাড়া নিতে চেয়েছিলেন। বাসা ভাড়া না দেওয়ায় পরিবারটি আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। গত ১৫ দিন আগে রাত ১০টার দিকে সোহাগ বাসার দরজায় কড়া নেড়ে পালিয়ে যায়। এ বিষয়টি তার পরিবারকে জানিয়েছিলাম।’
এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, নিহত শিক্ষকের বাড়ি পাবনা শহরের লস্করপুর গ্রামে। এ জমির ওপর সোহাগের পরিবারের লোভ থাকতে পারে। আর বাসা ভাড়া নিতে চেয়ে না পেয়ে সে ক্ষিপ্ত ছিল।
এদিকে পারিবারিক কলহের জেরে বিকেল চারটার দিকে সদর উপজেলার বয়ড়া পশ্চিমপাড়ার ফখরুল হাসান স্ত্রী শিরিন বেগমকে (৩৮) ছুরি দিয়ে জবাই করেন। পরে নিজেই গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা চালালে বাড়ির লোকজন ফখরুলকে (৪৫) উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার গতকাল সন্ধ্যার পর প্রথম আলোকে বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই দুটি ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

No comments

Powered by Blogger.