পাঠকের মন্তব্য-‘সারা দেশকে তোমরা এক সুতায় গেঁথেছিলে’

দাবিটা ছিল পাঠকেরই। প্রথম আলোর অনলাইনে (pৎothom-alo.com) প্রকাশিত তাঁদের মন্তব্য যেন প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। পাঠকই প্রথম আলোর প্রাণ। দেশ-বিদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলা, প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় তাঁরা সারাক্ষণ প্রাণবন্ত রাখেন, চিন্তার খোরাক জোগান সবাইকে।


গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো। এখন থেকে এটা প্রতি সপ্তাহে ছাপা হবে।

www.pৎothom-alo.com থেকে

ড. ইউনূসের আশ্চর্য মশারি
এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে গত শনিবার। সকাল থেকেই প্রতিবেদনটি ছিল সবচেয়ে পঠিত তালিকার শীর্ষে। এ সম্পর্কে দেবু সরকার লিখেছেন: মশার কামড় খেতে খেতে এই মন্তব্য লিখছি আর ভাবছি, এই মশারি কবে পাব। খবরটা পড়ে খুব আশাবাদী হয়ে উঠেছি।
তিতাস পাল: প্রতিবেদনটি অসম্পূর্ণ। ভেবেছিলাম কী দিয়ে তৈরি, কীভাবে কাজ করবে—এসব লেখা থাকবে। এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রতিবেদন এমন হওয়া ভালো না।
ওমর ফারুক: এ মশারিতে ব্যবহূত কীটনাশক মানবশরীরের ওপর কী রকম প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা করা হয়েছে কি?
হায়দার আলী: সত্যিই একটি ভালো উদ্যোগ। এটির ব্যবহারে মশাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব কমবে।

বন্ধ হোক ধরিত্রীর বুকে এই ‘জেনোসাইড’
গত শনিবার কৃষি বিষয়ে এই কলামটি লিখেছেন মহিউদ্দিন আহমদ। এ বিষয়ে বেশ কিছু মন্তব্য এসেছে। মাহতাফ হোসেন লিখেছেন: লেখককে অনেক ধন্যবাদ! অনেক আগে একটা প্রবন্ধে পড়েছি, রাশিয়ায় কৃষিযোগ্য জমিতে আগে ব্যাপকভাবে গমের চাষ হতো; সরকার একপর্যায়ে আইন করে তার বেশি অংশ আলু চাষের দিকে নিয়ে যায়। আমাদের দেশের উত্তরাঞ্চলে বেশির ভাগ বর্ষাকালে পানিতে ডুবে থাকে বলে চাষাবাদ করা হয় না; আবার দক্ষিণাঞ্চলে শুকনো মৌসুমে তেমন কোনো চাষাবাদ হয় না। এ অবস্থার অবসান হওয়ার জন্য এ দেশের কৃষিবিশেষজ্ঞদের উপযুক্ত ফসল আবাদের বিষয়ে ‘প্রযুক্তি’ ও ‘ফসলের প্রকার’ উদ্ভাবন করতে হবে এবং সেই সঙ্গে জনগণের মধ্যে সচেতনতা ও প্রযুক্তি-জ্ঞান সঞ্চারিত করার জন্য উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি এবং প্রয়োজনে আইন পাসের জন্য সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ফেরদৌস: লেখককে ধন্যবাদ। আমাদের অবশ্যই আমাদের পৃথিবী, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। সরকারের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।

এত কাছে তবু এত দূর!
এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ কি আসলেই হেরে গেছে? পড়ুন পাঠকের বয়ানে। রাব্বি লিখেছেন: শুধু সাকিব ও মুশফিক নয়—তাদের কাঁদতে দেখে পুরো বাংলাদেশ কেঁদেছে অঝোরে...শোকে, দুঃখে এবং হতাশায়...এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়—হূদয় চিরে দিয়েছে...কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না...শুধু বলব, শাবাশ বাঘের বাচ্চারা—তোমরা সত্যি বীরের মতো লড়েছ...আসল জয় আমাদেরই হয়েছে।
রাজু: মনে কোনো দুঃখ, কষ্ট, আফসোস নেই। শুধুই বাংলাদেশের জন্য শুভ কামনা।
নয়ন আল মামুন (লন্ডন): এ এক অদ্ভুত অনুভূতি! পুরো বাংলাদেশ একসঙ্গে কাঁদছে...এখনো! কেউ চোখের জলে, কেউ মনের কোনে। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে একসঙ্গে এর আগে আর কোনো আবেগ এভাবে নাড়া দিয়ে যায়নি, এভাবে কাঁদিয়ে যায়নি। শত দুঃখ-কষ্ট, ঝগড়া-বিবাদ, মতৈক্য-মতো পার্থক্য সত্ত্বেও সব বাংলাদেশি আজ এক জায়গায় এসে মিলিত হয়েছে। হোক সেটা কান্নার মেলায়, তবু মিলিত তো হয়েছি। এ আমার অন্য রকম সুখ। আজ আমি সুখী।...এটা সম্ভব হয়েছে শুধু তোমাদের কারণে বাংলার টাইগাররা। তোমাদের কোটি কোটি সালাম।
শুভ সরকার: পাকিস্তান শুধু কাপটাই জিতেছে, বাকি সব আমরা জিতেছি, সব বাঙালি একসঙ্গে কেঁদেছে, এর চেয়ে বড় কী পাওয়ার আছে।
রাফি: এত আবেগপ্রবণ হওয়ার কী আছে? বাংলাদেশ ভালোই খেলেছে। আজকের পরাজয় ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু করার প্রেরণা জোগাবে।
মো. মনিরুল ইসলাম খান: মুশফিক বাহিনী তোমরা কেঁদো না, ১৬ কোটি মানুষ তোমাদের বীরত্বের জয় দেখেছে। তোমরা আমাদের বীর সেনা। বীরদের চোখে পানি আসতে নেই, সে যতই বেদনা আসুক। এমন বীরত্বের সঙ্গেই যুদ্ধ করে যাও। এর চেয়েও অনেক বড় জয় আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
এস এম রাসেল উদ্দীন: বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদন ও টিভির টক শোতে দেখলাম সবাই বাংলাদেশের হারের জন্য শাহাদাতের শেষ ওভার কিংবা নাসির হোসেনের একটু বেশি সময় নেওয়াটাকে দায়ী করতে চাইছেন। আমি কিছুতেই বুঝছি না লড়াই করে পরাজয় যে বেশি দামি—এ কথাটা সবাই ভুলে যায় কেন?
এম রায়হান জান্নাত: প্রেম করে ব্যর্থ হওয়া যেমন প্রেমের সার্থকতা, তেমনি আমাদের পরাজয়টা। কারণ, বাংলাদেশ জিতলে কেউ কাঁদত বলে আমার মনে হয় না, কিন্তু পরাজয়ের কারণে বাংলাদেশের জন্য সবাই কেঁদেছে। এটাই আমাদের সার্থকতা
মুনির: কাল সাকিব-মুশফিকের চোখের জল আমাদের জানান দিয়ে গেছে ওরা এই দেশটাকে কত ভালোবাসে। দেশের জন্য ওরা কত প্রাণ-পণে লড়ছে।
মোরশেদ: সাকিব ভাইয়া, আমার জীবনে এত চোখের জল আর দেখিনি। এত মানুষকে একসঙ্গে কাঁদতে দেখে মনে হলো আমাদের জাতিকে একসঙ্গে আপনারাই একত্র করতে পেরেছেন। বড় নেতা-নেত্রীরা এভাবে পারবেন কি না, জানি না।
সামি: সারা দেশকে তোমরা এক সুতায় গেঁথেছিলে। যে দুই নেত্রী কখনো একসঙ্গে কিছুই করেন না, তাঁরাও কাল শুধু তোমাদের জন্য একসঙ্গে খেলা দেখেছেন। ১৬ কোটি মানুষকে এক বৃত্তে তো তোমরাই এনেছ। অসম্ভবকে তোমরা সম্ভব করেছ। ওই ছোট্ট কাপটা তো এত বড় বিজয়ের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ।

আড়িয়ল বিলের পাশে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য এবার আড়িয়ল বিলের কাছে দুটি স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। ১৮ মার্চ প্রথম আলোয় এ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। এতে মন্তব্য এসেছে ১৬৯টি। এর মধ্যে হোসাইন আহমেদ লিখেছেন: এর চেয়ে অনেক জরুরি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার নামে খবর নেই।...টাকা কি দেশের নদী-নালায় ভেসে বেড়াচ্ছে নাকি।
ফরিদ খান: ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর মাত্র ৪০ শতাংশ ব্যবহূত হয়। এখানে বিমান চলাচল খাতে ভবিষ্যতের বর্ধিত চাহিদা পূরণের লক্ষ্য সামনে রেখে রাজধানীর ঢাকার অদূরে একটি নতুন বিশ্বমানের বিমানবন্দর করা দরকার। কথাটা কতটুকু যুক্তিগ্রাহ্য?
আই জামান চৌধুরী: ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার চেয়ে আগে দেশের সাধারণ মানুষের চলার একমাত্র বাহন রেলওয়েকে চলার উপযোগী করে তুলুন। এরপর রকেটে চড়ে মহাশূন্যে পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখলে কেউ কিছু বলবে না।
নাসির উদ্দীন: বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরের চেয়ে পদ্মা সেতু অতি গুরুত্বপূর্ণ।

এক বছর পর সংসদে বিএনপি
টানা এক বছর অনুপস্থিত থাকার পর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের শরিকেরা ১৮ মার্চ সংসদে যোগ দিয়েছে। যোগ দিয়েই বিরোধী দলের একজন নারী সদস্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে ‘অশালীন’ ভাষায় বক্তব্য দিয়ে সংসদে উত্তেজনা ছড়িয়েছেন। ১৯ মার্চ এ খবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হওয়ার পর সর্বাধিক পঠিত ও সর্বাধিক আলোচিত হয় খবরটি। মোট মন্তব্য আসে ২৮৩টি। তাঁদের মধ্যে মিথেল আহমেদ লিখেছেন: আমি বিএনপিকে খুবই সমর্থন করি, কিন্তু সাংসদ রেহানার বক্তব্যে খুব খারাপ লাগল। আপনাদের কাছ থেকে এটা আশা করিনি।
সুজন: সমালোচনার ভাষা দেখে বোঝা যায়, আমাদের দেশের কোন পর্যায়ের লোকেরা রাজনীতি করেন।
এ বি এম মোবাশ্বের হোসাইন: প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, এ ধরনের খবর ছাপানো কি খুব জরুরি? বাসায় বাচ্চারা এই পত্রিকা পড়ে এবং কিছু শব্দের অর্থ জানতে চায়, উত্তর দিতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে যাই। একটু ভেবে দেখবেন কি?

টিকিট কিনে বিমানে চড়লেন জামালউদ্দিন
কর্মীদের হুমকির মুখে ফ্রি টিকিট বাতিল করতে বাধ্য হলেন বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামালউদ্দিন আহমেদ। ২১ মার্চ ‘অবশেষে টিকিট কিনে বিমানে চড়লেন জামালউদ্দিন’ শিরোনামে খবরটি প্রকাশিত হলে বিপুলসংখ্যক পাঠকের মন্তব্য আসে। তাঁদের মধ্যে ইবনে মিজান লিখেছেন: ফ্রি টিকিট? একেবারে পুরো পরিবার? এসব বন্ধ না হলে দেশ বাঁচবে না।
এম শওকত আলী: শাবাশ বিমানের দেশপ্রেমিক কর্মীরা। আপনারা একটি অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করলেন।
শেখ আবুল হাসান: অন্য সব দেশ যেখানে রেল বা এয়ারলাইনস থেকে প্রচুর লাভ করছে, সেখানে আমাদের দেশে প্রতিবছর শুধু লোকসান। এর প্রধান কারণ হলো দুর্নীতি।
(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে এবং প্রথম আলোয় প্রকাশিত যেকোনো বিষয়ে আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন pৎothom-alo.com)

No comments

Powered by Blogger.