হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে পদক্ষেপ নিন-ফলে রাসায়নিক দ্রব্য

খাবার ও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অন্যান্য দেশে যেখানে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীলতা দেখানো হয়, সেখানে বাংলাদেশ এক বড় ব্যতিক্রম। এখানে খাবার নিয়ে যা খুশি তা-ই করা যায়, যেকোনো খাবার জনগণের কাছে বিক্রি করা যায়, এমনকি বিষাক্ত কিছুও। মাছে ফরমালিনের বিষ বা মরিচের গুঁড়ায় ইটের গুঁড়া মিশ্রণ বা মবিল দিয়ে চানাচুর ভাজা—বাংলাদেশেই


সম্ভব। এ দেশে ফল পাকানো হয় বিষাক্ত রাসায়নিক দিয়ে, আমদানি হয় রাসায়নিক পদার্থযুক্ত ফল। মাঝেমধ্যে কিছু অভিযান, ধরপাকড় ও জরিমানা—এটুকুই ব্যবস্থা। জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকির এই বিষয়টি সরকারের কাছে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
পরিস্থিতি এতই খারাপ যে ফলে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো বন্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে পর্যন্ত নির্দেশ দিতে হচ্ছে। জনগণকে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মেশানো ফল খাওয়া থেকে বাঁচাতে একটি মানবাধিকার সংস্থা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পর কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশনায় বিভিন্ন ফলের আড়ত ও বাজারে রাসায়নিক পদার্থযুক্ত ফল বিক্রি ঠেকাতে বিএসটিআই ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা হাইকোর্টের এই নির্দেশনাকে স্বাগত জানাই।
আদালতের নির্দেশনায় আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। ফলে রাসায়নিক পদার্থ মেশানো বন্ধে কী কী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে একটি সুপারিশমালা তৈরি করতে খাদ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয় মিলে এ কাজটি করলে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া গেলে ফলে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর বিষয়টি বন্ধ করা সম্ভব হবে। আদালতের কাজ আদালত করেছেন, এখন আদালতের নির্দেশনা মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া ও তা কার্যকর করার দায়িত্ব সরকারের।
আমরা মনে করি, খাদ্যে ভেজাল মেশানো থেকে শুরু করে ফল পাকানো বা সংরক্ষণের জন্য যেকোনো ধরনের রাসায়নিক পদার্থ মেশানো বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আদালতের নির্দেশনার পর সরকার বিষয়টিকে কতটুকু গুরুত্বের সঙ্গে নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

No comments

Powered by Blogger.