পানির দাবিতে বিজয় সরণিতে অবরোধ

রাজধানীর বিজয় সরণিতে পানির দাবিতে গতকাল সোমবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে তেজগাঁও থানার তেজকুনীপাড়ার বাসিন্দারা। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত খালি কলস ও হাঁড়ি নিয়ে নারী-পুরুষের এ অবরোধের সময় ওই সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ ছিল।


বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ সড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিও তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বললে এ নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাঁর তর্ক হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তেজকুনীপাড়ার কয়েক শ নারী-পুরুষ কলস, হাঁড়ি নিয়ে বিজয় সরণি-তেজগাঁও সংযোগ সড়কের এক পাশ ও ফার্মগেটমুখী সড়কের এক পাশ অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। ফলে ওই দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা পানি সরবরাহের দাবি জানায় এবং আওয়ামী লীগদলীয় স্থানীয় সাংসদ আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তেজকুনীপাড়ার বাসিন্দারা অভিযোগ করে, এক থেকে দেড় বছর ধরে তাদের এলাকায় ওয়াসার সরবরাহ লাইনে নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি পাওয়া যায় না। বিশেষ করে, গত এক সপ্তাহ পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। পানির অভাবে গোসল, রান্নাবান্নাসহ ঘর-গৃহস্থালির দৈনন্দিন কাজে তারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অথচ পানি-সংকট নিরসনে স্থানীয় সাংসদ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
গৃহিণী লাবণী আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে ওয়াসার লাইনে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। গোসল করা তো দূরের কথা, রান্না করতেও টাকা দিয়ে পানি কিনতে হচ্ছে।’ আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আজকে স্বাধীনতার ৪১ বছর, অথচ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশের একটি এলাকায় এক সপ্তাহ ধরে পানি নেই। এটা কীভাবে সম্ভব?’
বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয় ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হকও এলাকাবাসীকে বিক্ষোভ না করে সড়ক থেকে সরে যেতে বলেন। এ নিয়ে বিক্ষোভকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে তাঁকে তর্কে জড়াতেও দেখা যায়।
জানতে চাইলে জহিরুল হক এলাকায় পানি সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘সমস্যা নিরসনে আমরা এলাকায় পানির পাম্প বসানোর চেষ্টা করছি।’
সাংসদ আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তেজকুনীপাড়ার ভাওয়ালবাগ এলাকায় ওয়াসার একটি পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পানির চরম সংকট দেখা দিলে মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। আশা করি, দু-এক দিনের মধ্যে পানি-সংকটের সাময়িক সমাধান হবে।’ তিনি জানান, তেজকুনীপাড়ার পানি-সংকট দূর করতে অনেক দেনদরবার করে রেলওয়ের একটি জায়গা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাম্প বসানোর আগমুহূর্তে এক ব্যক্তি ওই জায়গা তাঁর দাবি করে উচ্চ আদালতে রিট করলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। তাঁর সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.