বিশেষ সাক্ষাৎকার-আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে by হাসান মাহমুদ খন্দকার

হাসান মাহমুদ খন্দকার ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮২ সালের বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, পুলিশ ক্যাডারে কর্মজীবন শুরু ১৯৮৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার এএসপি (সার্কেল) হিসেবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি, র্যাবের পরিচালক, খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, পুলিশ


একাডেমির অধ্যক্ষ, পুলিশের প্রশাসন, প্রশিক্ষণ ও বিশেষ শাখার উপপ্রধান পরিদর্শক, অতিরিক্ত উপপ্রধান পরিদর্শক, অতিরিক্ত আইজি প্রভৃতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিন বছর কাজ করেছেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায়। ২০০৭ সালে র্যাবের মহাপরিচালক নিয়োজিত হন। ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট থেকে পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মশিউল আলম ও কামরুল হাসান

প্রথম আলো  মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের। ৩৯ বছর পর সেই অবদানের স্বীকৃতি মিলল। এ বছরের স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশকে। আপনার অনুভূতি কী?
হাসান মাহমুদ খন্দকার  বাংলাদেশ পুলিশের অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন ছিল এই স্বীকৃতি। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনী যে অবদান রেখেছে, তার এই স্বীকৃতি একান্তই প্রাপ্য ছিল। অনেক আগেই এটা হওয়া উচিত ছিল। সরকার এই স্বীকৃতি দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে সম্মানিত করল। এতে বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে আমি আনন্দিত—এ কথা বললে কমই বলা হয়, আমি আনন্দে উদ্বেলিত। পুলিশের সব সদস্যের আমার মতোই অনুভূতি; সবাই আনন্দিত। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আরও প্রেরণা জোগাবে।
প্রথম আলো  এখন তো আপনাদের প্রতি জনগণের প্রত্যাশাও বেড়ে যাবে। আপনারাও আরও বেশি দায় বোধ করবেন যে জনগণকে আরও ভালোভাবে সেবা দিতে হবে। তো, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আপনাদের বিবেচনায় এখন কেমন?
হাসান মাহমুদ খন্দকার  আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি যদি দুভাবে ভাগ করে দেখি, যেমন—একদিকে আইন মান্য করা কিংবা বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক যেসব ঘটনা ঘটে, সেগুলো বিবেচনা করি, তাহলে বলা যায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। যেমন—শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা কমেছে। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা যে ঘটেনি বা ঘটছে না, তা বলছি না। তবে বিশেষভাবে তৈরি পোশাকশিল্পে আগে যে মাত্রায় অস্থিরতা ছিল, তা বেশ কমে এসেছে, পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।
প্রথম আলো  আপনাদের পর্যবেক্ষণে তা-ই যদি সত্যি হয়, তাহলে তা সম্ভব হলো কীভাবে? তৈরি পোশাকশিল্পে আগে কেন বেশি অস্থিরতা ছিল?
হাসান মাহমুদ খন্দকার  এ বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যথেষ্ট ভূমিকা আছে। আপনারা জানেন, শিল্পাঞ্চল পুলিশ নামে পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হয়েছে। শিল্পাঞ্চলে পুলিশের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কিছু ভিন্ন মাত্রার দক্ষতার প্রয়োজন হয়। শ্রমিকদের মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হয়। শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে যেসব আইনকানুন ও বিধিবিধান আছে, সেগুলো সম্পর্কে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আরও সচেতনতা, সংবেদনশীলতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের সঙ্গে কীভাবে নেগোসিয়েশন করতে হয়, তাদের উত্তেজনা প্রশমনের টেকনিকগুলো কী, সেসব সম্পর্কেও শিল্পাঞ্চল পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে শিল্পাঞ্চল পুলিশের সক্ষমতা আরও বাড়বে। ফলে শিল্পাঞ্চলে আরও সুস্থির পরিবেশ, আরও ভালো দিন আসবে।
প্রথম আলো  রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি ইত্যাদি কারণেও সময়ে সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, জনজীবনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এসব পরিস্থিতিতে পুলিশের ভূমিকা ঠিক আশাপ্রদ নয়।
হাসান মাহমুদ খন্দকার  রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অনেক জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। কিন্তু ইদানীং এ রকম যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সব ক্ষেত্রেই পুলিশ পেশাদারি মনোভাব নিয়ে পরিস্থিতি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। কোনো ঘটনাই কিন্তু নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি কিংবা এমন অনভিপ্রেত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি, যাতে করে জনজীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে। সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যকর নিয়ন্ত্রণেই আছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, জনসাধারণের মধ্যে আইন মেনে চলার প্রবণতাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাড়ছে।
প্রথম আলো  এটা কীভাবে বোঝা যাচ্ছে? ব্যাখ্যা করে বলুন।
হাসান মাহমুদ খন্দকার  অর্থাৎ, জনসাধারণের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই মেনে চলার প্রবণতা বাড়ছে। আমরা কমিউনিটি পুলিশিং, ওপেন হাউস ডে ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলছি, নাগরিকদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছি এবং তারাও আমাদের কাছাকাছি আসছে। এই প্রবণতাকে আমি খুব ইতিবাচক বলে মনে করি। নাগরিকেরা আস্তে আস্তে সচেতন হচ্ছেন যে আইন মান্য করার বিষয়, নিজে থেকেই আইন মেনে চলতে হয়, আইন প্রয়োগের বিষয়টি আসে পরে। অর্থাৎ আইন হচ্ছে এমন একটি বিষয়, যা ‘মোর টু বি ওবেইড দ্যান টু বি এনফোর্সড’। এই বিষয়টি আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি এবং আশার কথা যে নাগরিকদের দিক থেকে আমরা এ বিষয়ে যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি। তারা উপলব্ধি করছে যে আইন মেনে চলতে হবে। অবশ্য এর মধ্যেও দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা যে ঘটছে না, তা নয়। যেমন—কিছু নিষিদ্ধ সংগঠন মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, কোনো অপতৎপরতা, কোনো ধরনের অরাজকতা আমরা কিন্তু হতে দেব না।
প্রথম আলো  অপরাধ পরিস্থিতি—খুন, ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই-রাহাজানি—এসব তো আগের মতোই চলছে।
হাসান মাহমুদ খন্দকার  ডাকাতি, চুরি, রাহাজানি, ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির অপতৎরতা—এগুলোই সাধারণ অপরাধের মধ্যে পড়ে। বছর খানেক আগে পর্যন্ত অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির দৌরাত্ম্য ছিল। এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল, যখন সংবাদমাধ্যমে আপনারা আমাদের সচেতন হওয়ার জন্য যথেষ্ট লিখেছেন। এ ক্ষেত্রে খুব কার্যকর পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; র্যাব কাজ করেছে, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কাজ করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ ঢাকা মহানগরে কাজ করেছে, ঢাকার বাইরেও পুলিশ কাজ করেছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জোর তৎপরতা চালিয়ে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির দৌরাত্ম্য রোধ করা হয়েছে।
প্রথম আলো  কিন্তু বন্ধ হয়নি, বিশেষ করে ছিনতাই কমেছে, এটা বোধ হয় বলা যাবে না।
হাসান মাহমুদ খন্দকার  না, এগুলো একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, এটা আমি বলব না। আমাদের সামাজিক বাস্তবতায় এগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে, তা-ও হয়তো নয়। কিন্তু আমরা অনেকাংশে এগুলো নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেছি। ছিনতাই, বিশেষ করে ঢাকা মহানগরে ছিনতাইয়ের কথা বললে—হ্যাঁ, এটা মাঝে মাঝে কিছু বেড়ে যায়, মাঝে মাঝে কমে। এগুলো স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক ধরনের সীমাবদ্ধতা আছে। আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতা আছে। তার পরও কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি; ফলে ছিনতাই, বড় ধরনের ছিনতাই, ডাকাতি—এসব কিন্তু এখন যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণেই আছে।
প্রথম আলো  অপরাধ দমনে পুলিশ কী কী সীমাবদ্ধতা বা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়?
হাসান মাহমুদ খন্দকার  অপরাধ দমন করার অন্যতম শক্তি বা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। এর বিভিন্ন ইউনিট অপরাধ দমনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, অপরাধ দমনে তারা দায়বদ্ধ। পুলিশের সীমাবদ্ধতাগুলোর মধ্যে প্রধানটি হচ্ছে লোকবলের ঘাটতি। বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যসংখ্যা নিতান্তই অপ্রতুল। পুলিশের একজন সদস্য কতজন মানুষের জন্য সেবা দিতে পারেন? আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ৬৫০ থেকে ৭৫০ জন নাগরিকের জন্য একজন পুলিশ; আমাদের দেশে কিন্তু একজন পুলিশের দায়িত্ব প্রায় এক হাজার ৩০০ নাগরিকের। এই সীমাবদ্ধতা কিন্তু অনেক বড়। বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে পুলিশি কার্যক্রমের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করলে এখানে লোকবল একটা অনেক বড় ব্যাপার। এত বড় জনসংখ্যায় পুলিশের অধিক্ষেত্র কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পর্যাপ্ত লোকবল অবশ্যই প্রয়োজন।
প্রথম আলো  পুলিশ সংস্কারের উদ্যোগে তো আরও লোকবল নিয়োগের কথা বলা হয়েছে...
হাসান মাহমুদ খন্দকার  হ্যাঁ, এবং বর্তমান সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। ইতিমধ্যে ৩২ হাজারের বেশি লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৫৭৫ জনের নিয়োগ-প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে সম্পন্ন হওয়ার পথে। বাকিটাও আমরা খুব তাড়াতাড়ি করব। সুতরাং এই ৩২ হাজার নতুন সদস্য যদি পুলিশ বিভাগে যুক্ত হন, তাহলে অপরাধ দমনে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের কার্যক্রম আরও বেগবান হবে।
প্রথম আলো  পুলিশ সংস্কারের ব্যাপারে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সংস্কার হচ্ছে না বা এ ক্ষেত্রে একটা গড়িমসির ব্যাপার আছে বলে মনে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাধাটা কোথায়?
হাসান মাহমুদ খন্দকার  প্রথমে বলা প্রয়োজন, সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটা কিছু না কিছু মাত্রায় তো সব সময়ই চলছে। পুলিশ বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে সেই ১৮৬১ সালের পুলিশ আইনের অধীনে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুগের প্রয়োজনে এই আইন পরিবর্তন করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। নীতিনির্ধারকেরা এ ব্যাপারে সচেতন, এটা প্রক্রিয়াধীন আছে। আমরা আশাবাদী যে অবশ্যই পুলিশ আইনে পরিবর্তন সাধিত হবে। এ ছাড়া এখন পুলিশের প্রশিক্ষণ তুলনামূলকভাবে আগের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। দেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্যও অনেকে যাচ্ছেন। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো দরকার, সেগুলোর কলেবর বাড়ানো হয়েছে, আরও হচ্ছে। নতুন লোকবল নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ওপরও বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। সে জন্য আমরা অস্থায়ী ভিত্তিতেও কিছু প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। প্রশিক্ষণ যদি সংস্কারের একটা অংশ হয়ে থাকে, তাহলে এটা সন্তোষজনকভাবেই চলছে। প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তুগুলোও যুগোপযোগী করা হচ্ছে, পুলিশের প্রশিক্ষণে মানবাধিকার ও জেন্ডার ইস্যু সংযোজিত হয়েছে। আমরা প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তের জন্য সেই বিষয়গুলোও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে সন্নিবেশ করেছি।
প্রথম আলো  পুলিশ হবে জনগণের বন্ধু, মানুষ কোনো অপরাধের শিকার হলে পুলিশের কাছে যাবে, পুলিশের সুরক্ষা পাবে—সাধারণ প্রত্যাশা এমন হলেও বাস্তবতা এ রকম নয়। পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কম।
হাসান মাহমুদ খন্দকার  আচরণগত দিক থেকে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। নিকট অতীতে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এই মনোভাব যথেষ্টভাবে সৃষ্টি হয়েছে যে জনগণের সেবায় তাঁদের এগিয়ে আসা উচিত। পুলিশের সদস্যরা শক্তি প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবেন না। আমরা বলছি, পুলিশের সদস্যরা একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে জনগণকে সেবা প্রদান করবেন। এর ফলে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গির একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। আমি এটাকে অন্য ধরনের একটা পরিবর্তন বলে মনে করি। পুলিশ বাহিনীতে যাঁরা নেতৃত্বে আছেন, কমান্ডার পর্যায়ে আছেন, তাঁদের মধ্যে একটা বড় ধরনের মানসিক পরিবর্তন ঘটেছে। এর প্রতিফলন আমরা এখন বিভিন্ন ইউনিটে দেখতে পাই। কিন্তু এই পরিবর্তন যে সবার মধ্যেই হয়েছে, তা আমি বলব না, তবে অনেকের মধ্যেই হয়েছে।
প্রথম আলো  আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবের মুখে পড়তে হয়, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন রাজনীতিকেরা পুলিশকে আইন প্রয়োগে অনেক সময় বাধা দেন। এতে অপরাধের শিকার সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পায় না...
হাসান মাহমুদ খন্দকার  সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সুস্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, সন্ত্রাসী-অপরাধীর কোনো দল নেই। এ ব্যাপারে নীতিনির্ধারকেরা যেমন নিরাপস, আমরাও তেমনই নিরাপস। এখন কেউ যদি রাজনৈতিক চাপের মুখে বা ব্যক্তিগত প্রলোভনে পড়ে কোনো ধরনের অবৈধ, বিধিবহির্ভূত, অনভিপ্রেত কার্যক্রম পরিচালনা করেন, তাহলে সেটার দায়দায়িত্ব তাঁকে ব্যক্তিগতভাবেই নিতে হবে।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
হাসান মাহমুদ খন্দকার  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.