বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল-ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থার দায় কার?

বঙ্গবন্ধু সেতুর দু'পাশে স্থাপিত নতুন টোল আদায় সিস্টেম এবং ওজন পরিমাপক যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। হস্তান্তরের এক মাসের মধ্যেই এটি অংশত অকার্যকর হয়ে পড়ায় ইতিমধ্যে সরকারের প্রায় ৬ কোটি টাকা গচ্চা গেছে বলে রোববার সমকালের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পর্যালোচনায় দেখা যায়,


এই টোল আদায় ব্যবস্থা এবং ওজন পরিমাপক যন্ত্র স্থাপনে মালয়েশিয়ার ইগল কোম্পানিকে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের প্রাক্কলনের ভিত্তিতেই দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ওই দরপত্রের শর্ত পূরণ করায় ইন্টারন্যাশনাল রোড ডায়নামিক সাউথ এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজটি দেওয়া হয়। ছয় মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার শর্ত থাকলেও এটি সম্পন্ন করতে প্রতিষ্ঠানটি আড়াই বছর সময় লাগিয়ে ২৫ মার্চ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু কম্পিউটার ব্যবস্থায় জটিলতা ও ত্রুটির কারণে গোটা ব্যবস্থাটির আংশিক অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে অতিরিক্ত মালবাহী যান শনাক্ত করতে যেমন অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি সেতুর ওপর দিয়ে দিনে কয়টি গাড়ি পারাপার হচ্ছে তাও নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে সরকার বিপুল অঙ্কের আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, টোল আদায় সিস্টেম এবং ওজন পরিমাপক যন্ত্র সময়মতো সরবরাহ না করার পরও কেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? এর ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হওয়ার খেসারত কে দেবে? বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে কতগুলো গাড়ি প্রতিদিন পারাপার হয় এবং বেশি ওজনবাহী কোনো যান এর ওপর দিয়ে চলাচল করে কি-না তা নিশ্চিত করার জন্য আধুনিক টোল আদায় সিস্টেম ও ওজন পরিমাপক যন্ত্র বসানোর দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এখানেও অবহেলা ও দুর্নীতির আলামত দেখা যাচ্ছে। তা না হলে এই ব্যবস্থা স্থাপনের এক মাসের মাথায় কী করে আংশিক অকার্যকর হয়ে গেল! এর কম্পিউটার ব্যবস্থাটি কি আদৌ মানসম্মত, নাকি পুরনো বা মান্ধাতার আমলের কম্পিউটিং ব্যবস্থা এখানে সংযোজন করা হয়েছে? টোল আদায় খাতে সরকারের কাঙ্ক্ষিত আয়ের একটি অংশ সংশ্লিষ্টরা পকেটস্থ করার জন্য এ ধরনের ত্রুটি লালন করছে কিনা_ এসব অনুসন্ধান করা উচিত।
 

No comments

Powered by Blogger.