ইন্টারনেটে আপনার শিশু সন্তান নিরাপদ তো!

থাকব নাকো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগতটাকে। মানুষের এ চাওয়াটা চিরন্তন। মানুষ মাত্রেই তার অসীম কৌতুহল আর অনুসন্ধিৎসু মন। দুনিয়াটাকে হাতের মুঠোয় এনে দেখবার সাধ। এই তাড়না প্রতিটি মানুষ  অনুভব করে। অনুভবের এই জায়গা থেকে মানুষ ক্রমশ ইন্টারনেটের হাতছানিতে মুগ্ধ হয়েছে।
ইন্টারনেট মানেই মুক্ত পৃথিবী, মুক্ত সংস্কৃতি। অবাধ তথ্যকোষের সমাহার হাতের নাগালেই। তাই এখন ছোট বড় সবার কাছেই তুমুল জনপ্রিয় ইন্টারনেট ব্রাউজিং। ইন্টারনেট তার নিজ গুনেই প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবীটা যেমন হাতের কাছে চলে এসেছে তেমনি নিজের চিন্তা-চেতনাকে শাণিত করতে ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। দেশব্যাপি না হলেও বিভিন্ন জেলা শহরের ভালো ভালো কিছু স্কুল এখন ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত। স্কুলে ইন্টারনেট ব্রাউজিং এ শিশু কিশোররা বিধিনিষেধের মধ্যে থাকে, তাই ঘরে যেকোনো অভিভাবককে ইন্টারনেটের অপসংস্কৃতি থেকে, আমাদের মূল্যবোধ বিরোধী বিষয়বস্ত্ত থেকে সন্তানকে দূরে রাখতে সচেতন হতে হবে।


একজন অভিভাবক হিসাবে আপনি কোন পদক্ষেপটি নিতে পারেন ? সন্তানকে যেহেতু সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখা সম্ভব না, অন্যদিকে টিন এজ বয়সীরা প্রচণ্ড অনুভূতিপ্রবণ হয় সুতরাং তারা যদি বুঝতে পারে আপনি তার আচরণবিধি প্রতিনিয়ত খেয়াল করছেন, নজরে রাখছেন, সেক্ষেত্রে তাদের ভেতরে অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। কিশোর বয়সীদের খুব সহজেই অপসংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার তাদের প্রযুক্তি বিমুখও করা যাবে না। তাই তাদের কল্যাণে কিছু সাবধানতা অবশ্যই জরুরি।

১. সব বিষয়ের ভালো খারাপের মতো ইন্টারনেটের ভালো খারাপের দিকটি আপনার সন্তানের কাছে সহজ সাবলীলভাবে বলুন। বাসার কম্পিউটারটি সন্তানের রুমে না রেখে কমনস্পেসে রাখুন। তাতে করে চলতে ফিরতে আপনার সন্তানের কার্যকলাপ সম্মন্ধে অবগত থাকতে পারবেন, আর আপনার সন্তানের ভেতরও কিছু গোপন করার বিষয়টি কাজ করবে না।

২. সন্তানের ইন্টারনেট ব্রাউজিং হিস্ট্রি খেয়াল করুন।

৩. ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, ফায়ারফক্স, অপেরা, গুগল ক্রোম ইত্যাদি ওয়েবসাইট দেখার সব ব্রাউজিং সফট্ওয়্যারের জন্যই কিছু ফিল্টারিং প্রোগ্রাম পাওয়া যায়। সেগুলো ব্রাউজারে ইন্সটল করে দিলে শিশুদের জন্য ক্ষতিকর কিছু আর খুলবে না। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটে দক্ষ কারও সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।

৪. পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদা আলাদা ইউজার আইডি তৈরি করুন। এতে করে বোঝা যাবে কোন আইডি থেকে কি কি করা হয়েছে।

৫. আপনার সন্তানের জন্য উপযোগী এমন কিছু ওয়েবসাইট, তার পছন্দনীয় কোনো মজাদার বিষয়ের ওয়েবসাইট হোম পেজ এ বুকমার্ক করে দিন। এতে সে তার প্রয়োজনীয় সব কিছু খুব সহজেই পেয়ে যাবে।

৬. গুগল ও ইয়াহুর মতো সার্চ ইঞ্জিনে সেফ সার্চ সুবিধা সক্রিয় রাখুন।

৭. বছর বয়সের আগে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ। শিক্ষার্থীদের কাছে এখন মোবাইল ইন্টারনেট অনেক জনপ্রিয়। তাই নির্দিষ্ট বয়সের আগে নিরাপত্তার অজুহাতে মোবাইল দেয়া থেকে বিরত থাকুন।

৮. সন্তানকে কম্পিউটার ব্যবহারের সময়সীমা বেঁধে দিন। নইলে প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল লক্ষ্য ব্যহত হবে।

No comments

Powered by Blogger.